পরিবহণ ব্যবস্থা
-
পরিবহণ ব্যবস্থার মাধ্যমে কেবল পণ্যসামগ্রী ও যাত্রী এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবাহিত হয়।
-
পরিবহ ব্যবস্থার মাধ্যমগুলি হল স্থলপথে—মােটরগাড়ি, লরি, বাস, রেলগাড়ি; জলপথে—নৌকা, স্টিমার, লঞ্চ, জাহাজ এবং আকাশপথে বিমান, হেলিকপ্টার প্রভৃতি।
-
পরিবহণ ব্যবস্থায় পণ্যদ্রব্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছােতে অনেক বেশি সময় লাগে।
-
পরিবহণ ব্যবস্থা ব্যয়সাপেক্ষ
যােগাযােগ ব্যবস্থা
-
যােগাযােগ ব্যবস্থার মাধ্যমে কেবল সংবাদ ও তথ্যের আদানপ্রদান করা হয়।
-
আধুনিক যােগাযােগ ব্যবস্থার মাধ্যমগুলি হলটেলিফোন, টেলিভিশন, টেলিগ্রাফ, টেলেক্স, – মােবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ই-মেল প্রভৃতি।
-
যােগাযােগ ব্যবস্থায় যে-কোনাে তথ্য বা সংবাদ পৃথিবীর যে-কোনাে স্থানে মুহূর্তের মধ্যে পাঠানাে যায়।
-
অপেক্ষাকৃত কম ব্যয়বহুল।
অতীতে যােগাযােগের মাধ্যম ছিল অতি ধীর। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতির ফলে যােগাযােগ ব্যবস্থায় এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। তাই, আধুনিক যােগাযােগ ব্যবস্থায় সংযােজিত হয়েছে নানান পদ্ধতি। যন্ত্রনির্ভর ও পদ্ধতিনির্ভর আধুনিক যােগাযােগ ব্যবস্থার গুরুত্ব তাই বিশেষ উল্লেখযােগ্য।
ডাক ব্যবস্থার গুরুত্ব : ডাক পরিসেবা যােগাযােগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডাক পরিসেবা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ডাকঘরগুলিকে প্রধান ডাকঘর, উপ-ডাকঘর, অতিরিক্ত বিভাগীয় উপ-ডাকঘর ও অতিরিক্ত বিভাগীয় শাখা ডাকঘরে ভাগ করা হয়েছে। ডাকপরিসেবা দ্রুত পরিচালনার জন্য ডাক বিভাগ PIN, QMS, স্পিড পােস্ট প্রভৃতি চালু করেছে। ডাক পরিসেবার মাধ্যমগুলির মধ্যে পােস্টকার্ড, অন্তর্দেশীয় পত্র, এনভেলপ, টেলিগ্রাফ, বুকপােস্ট প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য। এ ছাড়াও মহানগরগুলিতে বাণিজ্যিক ডাক পরিসেবা চালু হওয়ায় এর বাণিজ্যিক গুরুত্বও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব : টেলিযােগাযােগ মাধ্যমগুলির মধ্যে টেলিফোন, টেলিগ্রাম, টেলেক্স, টেলিফ্যাক্স, ই-মেল এবং ইন্টারনেট বা অন্তর্জাল প্রধান। টেলিযােগাযােগ ব্যবস্থার আবিষ্কার ও উন্নতির ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের যােগাযােগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। দেশের যে-কোনাে স্থানে সংবাদ পাঠাতে যেখানে সময় লাগত সপ্তাহ খানেকের ওপর, আজ তা মুহূর্তের মধ্যে সম্পন্ন হচ্ছে। শুধু মৌখিক সংবাদ নয়, যে-কোনাে লিখিত নথি বা দলিল পৃথিবীর যে-কোনাে স্থানে আজ পাঠানাে সম্ভব হচ্ছে ফ্যাক্স-এর কল্যাণে। মােবাইল বা সেলুলার ফোনের সাহায্যে বর্তমানে কম খরচে SMS, MMS, অন্তর্জাল সংযােগ (ইন্টারনেট), ছবির আদানপ্রদান, রেডিয়াে, টেলিভিশন, ক্যামেরার সুবিধা ভােগ করা যায়। কোনাে কোনাে মােবাইলে GPS সংযুক্ত থাকায় ভূপৃষ্ঠের যে-কোনাে স্থানের অবস্থান ও উচ্চতা সহজেই নির্ণয় করা যায়। একটি কম্পিউটার, একটি টেলিফোন ও একটি ইন্টারনেট ব্যবস্থা থাকলেই ভিডিয়াে কনফারেন্স করা যায়। যার মাধ্যমে চিকিৎসক বহুদূরে থেকেও রুগির সঙ্গে কথাবার্তা বলে চিকিৎসা সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন, শিক্ষক এর মাধ্যমে শিক্ষাদানও করতে পারেন।
রেডিয়াে ও টেলিভিশনের গুরুত্ব : রেডিয়াে ও টেলিভিশন আধুনিক যােগাযােগ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এর মাধ্যমে দেশবিদেশের শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি, বিভিন্ন ঘটনাবলি, খেলাধুলা, বিভিন্ন রকমের সংবাদ, বিভিন্ন দ্রব্যের বাণিজ্যিক প্রচার, আবহাওয়া-সংক্রান্ত সংবাদ প্রভৃতি যে-কোনাে স্থানে পৌঁছে দেওয়া যায়। জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, সংবাদ পরিবেশন, শিক্ষার প্রচার ও সুস্থ চিত্তবিনােদনে রেডিয়াে ও টেলিভিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সংবাদপত্রও অন্যান্য মুদ্রণ মাধ্যমের গুরুত্ব : সংবাদপত্র ও অন্যান্য পত্রপত্রিকার মাধ্যমে বিশ্বের অসংখ্য লােকজনের মধ্যে যােগাযােগ স্থাপিত হয়। সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রতিদিন অল্প খরচে পৃথিবীর বহু মানুষ দেশবিদেশের নানান খবর জানতে পারেন। বর্তমানে ভারতে প্রায় 49,145টি সংবাদপত্র ও বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হয়। আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমত গঠনে সংবাদপত্রের ভূমিকা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
Leave a comment