যে শিক্ষা বিদ্যালয়ের বা অন্য কোনাে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ না হয়েও কোনাে নির্দিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আংশিক নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাকে বলে প্রথাবহির্ভূত শিক্ষা। অধ্যাপক জে. পি. নায়েকের মতে, নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার বাইরে সংগঠিত শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রথাবহির্ভূত শিক্ষা বলে। কুম্বস্ এবং আহমেদের মতে, এই শিক্ষাব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি হল一
-
এটি প্রথাগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে সংগঠিত একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।
-
এটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে সম্পন্ন হয়।
-
এটি জনসাধারণের (শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক) নির্দিষ্ট অংশের জন্য স্থির করা হয়।
শিক্ষার সার্বিক প্রসারে এবং শিক্ষার গণতন্ত্রীকরপের দিক থেকে নিয়মবহির্ভূত শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না। ঠিকই, তবে এই শিক্ষাব্যবস্থাতেও বিভিন্ন ধরনের জুটি বা সীমাবদ্ধতা লক্ষ করা যায়। ত্রুটিগুলি হল一
(১) সবধরনের চাহিদাপূরণে ব্যর্থতা: প্রথাবহির্ভূত শিক্ষা শিক্ষার্থীর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক, নৈতিক প্রভৃতি সবকটি চাহিদা পূরণ করতে পারে না।
(২) সামাজিক বিকাশের সুযোগের অভাব: প্রথাবহির্ভূত শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা যেহেতু দলগতভাবে শিক্ষালাভের সুযােগ কম পায়, তাই শিক্ষার্থীদের সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রটি ব্যাহত হয়।
(৩) ফিডব্যাকের অভাব: এই শিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে নিয়মিত ফিডব্যাক ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীদের শিখনে অসুবিধাগুলি দূর করা সম্ভব হয় না।
(৪) সহযোগিতার অভাব: প্রথাবহির্ভূত শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে নিয়মিত শ্রেণিশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুযােগ পায় না।
(৫) শংসাপত্রের গ্রহণযোগ্যতা কম: অনেকক্ষেত্রেই প্রথাগত শিক্ষার দ্বারা অর্জিত শংসাপত্রের গুরুত্ব অধিকাংশ সময়েই প্রথাবহির্ভূত শিক্ষার দ্বারা অর্জিত শংসাপত্রের তুলনায় বেশি।
সবশেষে বলা যায় যে, প্রথাবহির্ভূত শিক্ষায় সুবিধা এবং অসুবিধা উভয়ই বর্তমান। অসুবিধাগুলিকে দূর করে এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে হবে।
Leave a comment