প্রসঙ্গ: সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ রচনায় বক্সা জেলখানায় লেখকের সঙ্গে আলাপ হয় গাঁজাখাের, চোর কয়েদি সাধুচরণের। ছেলেবেলাতেই বাপ-মা হারানাে সাধু পেটের জ্বালায় চুরি শুরু করতে বাধ্য হয়েছিল। পরে বিয়ে করে সে অসৎ পথ ত্যাগ করার চেষ্টা করলেও পুলিশ-চৌকিদারের অত্যাচারে সে আবার তার পুরােনাে পেশা চৌর্যবৃত্তিতে ফিরে আসে। সাধুচরণের প্রসঙ্গ আলােচনা করার পরই লেখক জেলখানার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কথা বলেন, যাকে সেপাই-কয়েদিরা খাতা বলে অভিহিত করে। নাবালক অপরাধীদের সেখানে পৃথক ওয়ার্ড বা খাতা রয়েছে। তাদের কেউ ছিচকে চোর, কেউ পকেটমার। এদের কথা বলতে গিয়েই লেখক জানিয়েছেন যে, নাবালক সাধুচরণ যেমন প্রথমে ছিচকে চুরি শুরু করলেও পরে ‘পাকা সিঁধেল চোর’ হয়ে যায়, তেমনই এক নাবালকরা সাধুচরণের অতীত এবং ভবিষ্যতে এরাই এক-একটা পরিণত সিঁধেল চোর, সাধুচরণে পরিণত হবে।

নিহিতার্থ : বক্সা জেলের নাবালক কয়েদিদের অনেকেই ছিল আধাে আধাে কথা বলার, স্কুলে ভরতি হওয়ার বয়সি। এদের অধিকাংশই ছিল অনাথ শিশু, শহরের ফুটপাথে মানুষ। ঠিকমতাে যত্ন বা পরিচর্যা পেলে এদের মধ্যে থেকেই হয়তাে কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ মাস্টার, কেউবা লেখক হতে পারত। অথচ পরিবেশই এদেরকে অপরাধী তৈরি করেছে।