অথবা, ভাষাবিজ্ঞানের আলােচনায় তিনটি বহুলপ্রচলিত শাখা কী কী? যে-কোনাে একটি শাখা সম্বন্ধে আলােচনা করাে।
মনের ভাব প্রকাশের জন্য কোনাে বিশেষ জনসমাজে ব্যবহৃত বাধ্বনি নিম্পন্ন শব্দসমষ্টিকে বলে ভাষা।
ভাষাবিজ্ঞানের বহুলপ্রচলিত তিনটি শাখার নাম হল— তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান, ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান এবং বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান।
বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান : একটি নির্দিষ্ট সময়কালের কোনাে ভাষার বৈশিষ্ট্যাবলির চর্চা করা হয় যে ভাষাবিজ্ঞানে, তাকে বলা হয় বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (Descriptive Linguistics)। এই ভাষাবিজ্ঞান কোনাে এক বা একাধিক ভাষার বা সামগ্রিকভাবে ভাষার অতীত রূপ বা ইতিহাস নিয়ে কোনাে আলােচনা করে না। বরং সমকালীন কোনাে প্রচলিত ভাষার গঠন ও বৈশিষ্ট্যের বিচারবিশ্লেষণ করে। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত হয় ইউরোপ ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে, বিশ শতকের প্রথমদিকে। যেসব ভাষার লিপি নেই অথবা যেসব ভাষা লিপিবদ্ধ হয়নি—সেইসব ভাষার আলোচনার জন্য বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। এই শাখার মতানুযায়ী ভাষাবিজ্ঞানের আলােচ্য বিষয় চারটি—(১) ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব, (২) রূপতত্ত্ব, (৩) বাক্যতত্ত্ব এবং (৪) শব্দার্থতত্ত্ব। বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে কীভাবে বাগধ্বনি উচ্চারিত হয়, তা আলােচনা করে ধ্বনিবিজ্ঞান। ভাষায় ব্যবহৃত ধ্বনিসমূহের বিচারবিশ্লেষণ করা হয় ধ্বনিতত্ত্বে। রূপ (Morph) এবং পদের গঠন ও কার্যাবলি আলােচনা করে রূপতত্ত্ব। বাক্যের সার্বিক আলােচনা ও বিচারবিশ্লেষণ করা হয়। বাক্যতত্ত্বে। শব্দের অর্থ পর্যালােচনা করা হয় শব্দার্থতত্ত্বে। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান ভাষার গঠনগত আলােচনাকে প্রাধান্য দেয়।
Leave a comment