সমাজ-ভাষাবিজ্ঞানের অন্যতম বিভাগ হল বর্ণনাত্মক সমাজ-ভাষাবিজ্ঞান (Descriptive Socio Linguistics)। বর্ণনাত্মক সমাজ-ভাষাবিজ্ঞান ভাষার বৈচিত্র্যের বর্ণনা করে। এই ভাষাবিজ্ঞান বলে যে, বক্তা (Sender), শ্রোতা (Receiver) এবং উপলক্ষ্য (Setting)এই তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে সমাজভাষার রূপ। এই তিনটিই হল ভাষারূপের নিয়ামক উপাদান (Conditioning Factor)। প্রথমেই আমাদের জানতে হয় বক্তার সামাজিক পরিচয়-তার বয়স, লিঙ্গগত পরিচয়, শিক্ষাগত পরিচয়, পেশাগত তথা শ্রেণিগত পরিচয়, সম্প্রদায়গত পরিচয় ইত্যাদি। বক্তার মতাে শ্রোতারও সামাজিক পরিচয় জানা জরুরি। কারণ, শ্রোতা অনুযায়ী বক্তা তার ভাষার পরিবর্তন ঘটান। আমরা বয়ােজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে যে ভাষায় কথা বলি, সমবয়স্ক বা বয়ঃকনিষ্ঠদের সঙ্গে সে ভাষায় নয়। বাংলাতে তাে সন্ত্রমার্থক, সাধারণ এবং তুচ্ছার্থক (আপনি, তুমি, তুই) ভেদ আছে।
সুতরাং, শ্রোতার সামাজিক পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ। আর পরিস্থিতি ও বক্তার উদ্দেশ্য অনুযায়ী তার ভাষা যে পালটে যায়, তা আলােচিত হয় উপলক্ষ্য-এর ওপর। সভাসমিতিতে, শ্রেণিকক্ষে, আদালতে ঝগড়ায়—প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে ভাষার ধরন আলাদা। বাঙালি ছাত্ররা স্কুলে মান্য বাংলা বললেও বাড়িতে কিন্তু কোনাে-এক উপভাষাতেই কথা বলে। উপলক্ষ্য অনুযায়ী ভাষা বা উপভাষার যে বদল ঘটে, তাকে সমাজভাষাবিজ্ঞানীরা বলেন রেজিস্টার (Register)।
Leave a comment