(১) অনুবর্তিত উদ্দীপকের উপস্থাপন : অনুবর্তিত উদ্দীপককে স্বাভাবিক উদ্দীপকের আগে উপস্থাপন করতে হবে। এই কারণে প্যাভলভের পরীক্ষায় ক্ষুধার্ত কুকুরকে খাবার দেওয়ার পূর্বেই ঘণ্টাধ্বনি শােনানাে হয়েছিল।
(২) স্বাভাবিক উদ্দীপক কৃত্রিম উদ্দীপকের চেয়ে শক্তিশালী: কৃত্রিম উদ্দীপকের চেয়ে স্বাভাবিক উদ্দীপককে বেশি শক্তিশালী হতে হবে। কুকুরের লালাক্ষরণের ক্ষেত্রে ঘণ্টাধ্বনির চেয়ে খাদ্যবস্তু বেশি শক্তিশালী উদ্দীপক।
(৩) উদ্দীপক দুটির পর্যায়ক্রমিক উপস্থাপন: কৃত্রিম উদ্দীপকের রেশ থাকতে থাকতেই স্বাভাবিক উদ্দীপককে উপস্থাপন করতে হবে। তাই প্যাভলভের পরীক্ষায় ঘণ্টাধ্বনির রেশ থাকতে থাকতেই খাবার দেওয়া হত।
(৪) পুনরাবৃত্তি: যতক্ষণ পর্যন্ত না কৃত্রিম উদ্দীপক ও স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া এই দুই-এর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চালাতেই হবে। অর্থাৎ পুনরাবৃত্তি অনুবর্তনের একটি প্রয়ােজনীয় শর্ত।
(৫) অপানুবর্তন: অনুবর্তিত বা কৃত্রিম উদ্দীপকের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক উদ্দীপকের উপস্থাপন ঘটালে অনুবর্তন প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকবে। কিন্তু দীর্ঘ সময়ব্যাপী যদি স্বাভাবিক উদ্দীপক (খাদ্যবস্তু) না দেওয়া হয় তাহলে কুকুরের লালাক্ষরণের (অনুবর্তিত প্রতিক্রিয়া) পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকবে এবং একসময় বন্ধ হয়ে যাবে। একেই বলা হয় অপানুবর্তন।
(৬) অনুবর্তনের স্বতঃস্ফূর্ত প্রত্যাবর্তন: অপানুবর্তনের পরে যদি ঘটনাটিকে পুনরায় কয়েকবার পরীক্ষামূলকভাবে ঘটানাে হয় তাহলে অনুবর্তনের প্রতিক্রিয়াটি কিছুসময় পরে পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। একে অনুবর্তনের স্বতঃস্ফূর্ত প্রত্যাবর্তন বলে।
(৭) উদ্দীপকের সামান্যীকরণ: ঘণ্টাধ্বনি শুনলে কুকুরের লালাক্ষরণ হয়। কিন্তু ঘণ্টাধ্বনির অনুরূপ কোনাে শব্দেও কুকুরের লালাক্ষরণ ঘটে থাকে। প্যাভলভ এই বিষয়টিকে উদ্দীপকের সামান্যীকরণ (Generalisation) হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
(৮) উদ্দীপকের পৃথকীকরণ: অনুবর্তনের ফলে কুকুর বিভিন্ন উদ্দীপকের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে। প্যাভলভ একে উদ্দীপকের পৃথকীকরণ বলে অভিহিত করেছেন।
(৯) বয়স ও প্রাণীভেদে বিভিন্ন: বয়স্কদের চেয়ে শিশুদের অনুবর্তন সৃষ্টি করা সহজ। আবার মানুষের চেয়ে ইতর প্রাণীদের মধ্যে অনুবর্তন সৃষ্টি করা অপেক্ষাকৃত সহজ।
Leave a comment