(১) ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ভিত্তিক শিক্ষাদান: সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বিষয়ে একজনের সঙ্গে অন্যজনের পার্থক্য থাকে। তাই সলকে একইসঙ্গে একইভাবে শিক্ষা দিলে শিক্ষার ফল তেমনভাবে প্রকাশিত হয় না। কিন্তু কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষাদান করলে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্ব বিকাশ সম্ভব হয়।

(২) অনুশীলনের সুযােগ : শ্রেণিকক্ষে সমস্তরকম আলােচনা, পড়ানোর বিষয় বস্তু অনেক সময় মনে থাকে না তখন শিক্ষক, শিক্ষিকা সহজেই সেই বিষয়বস্তু কম্পিউটারের মাধ্যমে পুনরুদ্রেক করতে পারেন এবং অনুশীলনের সুযােগ পান।

(৩) আত্মপ্রত্যয় জাগরণ : কম্পিউটার শিখনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সমস্যার সমাধান করতে পারে। এই সমাধান ওদের আত্মপ্রত্যয় বৃদ্ধি করে।

(৪) প্রেষণা সঞ্চার : কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষা ইতিবাচক মানসিকতা গঠনের সহায়ক। এতে শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রেষণা সঞ্চার ঘটে ও উৎসাহ বৃদ্ধি পায়।

(৫) সক্রিয়তা বৃদ্ধি : কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষা শিক্ষার্থীদের যেমন জ্ঞানের প্রসার ঘটায় তেমনি তারা সমকালীন বিষয় সম্পর্কে সক্রিয় জ্ঞানের অধিকারী হয়।

(৬) সমস্যা সমাধান মূলক শিখন : কম্পিউটারের সাহায্যে শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থীরা অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে। এতে তাদের জ্ঞানের পরিধির বিস্তার ঘটে।

(১) অনুভূতির অভাব : প্রথাগত শিক্ষায় শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক শিক্ষার্থীর মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ রচিত হয়, পাঠ্য বিষয়ে প্রেষণার সঞ্চার ঘটে। কিন্তু কম্পিউটারের যান্ত্রিকতা সেই অনুভূতির জাগরণ ঘটাতে পারে না।

(২) মানবিক সম্পর্কের ব্যাঘাত : শিখনের ক্ষেত্রে পিতা-মাতা, শিক্ষক-সহ অন্যান্য শিক্ষাদাতাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীর মধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্ক কম্পিউটারের মাধ্যমে সম্ভব নয়। কম্পিউটারের মাধ্যমে মানবিক সম্পর্ক হয় না, শুধু যন্ত্রে সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলে।

(৩) ব্যয়বহুলতা : ব্যয়বহুল হওয়ায় উপযুক্ত সংখ্যক কম্পিউটার বিদ্যালয়ে নেই।

(৪) সংবেদনশীলতার অভাব : সাধারণ শিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষক শিক্ষার্থীর প্রয়ােজন অনুযায়ী বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন কিন্তু কম্পিউটারভিত্তিক শিখনে তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব হয় না।

(৫) বিষয়বস্তু উপস্থাপনে ব্যাঘাত : কম্পিউটারের ছােটো পরিসরে নির্দিষ্ট পরিমাপের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা যায়। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকলে বা অন্য কোনাে সমস্যার কারণে বিষয়বস্তু চোখের সামনে ফুটে না উঠলে সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা অসুবিধাজনক।

(৬) বাস্তব অভিজ্ঞতার অভাব : কম্পিউটারে যা প্রোগ্রাম সেট করা থাকে তাই তারা শেখে। ফলে অনেক সময় বাস্তব অভিজ্ঞতার অভাব দেখা যায়।

এতৎসত্ত্বে বলা যায়, বর্তমান পৃথিবীর পরিস্থিতি হল এক যুগান্তকারী ফলাফল যা কম্পিউটারের জন্য সম্ভব হয়েছে। কম্পিউটার ভিত্তিক বিভিন্ন সমস্যার মােকাবিলা আমাদেরকেই করতে হবে যাতে এই আবিষ্কার আমাদের জন্য শুধুই সুফলদায়ক হয়।