গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া 

আমাদের পৃথিবী আমাদেরই মনের মতাে করে গড়তে হবে। বিজ্ঞানের কল্যাণ মানবসমাজে আশীর্বাদসূচক জয়ধ্বজা উড়ালেও অন্যদিকে ঠেলে দিচ্ছে সর্বনাশের পথে। অবশ্য বিজ্ঞানকে দোষ দেওয়া যায় না, এর জন্য দায়ী আমরা মানুষেরাই। পৃথিবীর জন্য এখন সবচেয়ে বড়াে হুমকি হলাে গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া। আবহাওয়ামণ্ডলে ‘ওজোন স্তর’ নামে একটি অদৃশ্য বেষ্টনী আছে, যা সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রবেশ রােধ করে এবং পৃথিবী থেকে আসা তাপকে বিকিরণ | প্রক্রিয়ায় মহাশূন্যে ফিরে যেতে সহায়তা করে। কিন্তু এই নিরাপত্তা বেষ্টনী আজ ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। মানুষ শিল্প কলকারখানায়, স্প্রে, ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনারে যে ক্লোরােফ্লোরাে কার্বন (CFC) গ্যাস ব্যবহার করে তা ওজোন স্তরের ক্ষয় ত্বরান্বিত করে। এছাড়া বৃক্ষ নিধনের ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি, শিল্পবর্জ্য, যানবাহনের ধোঁয়া, আবর্জনা থেকে নির্গত গ্যাস ইত্যাদি বায়ুমণ্ডলে মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির ফলে ইনফ্রারেড রেডিয়েশনে ব্যাঘাত ঘটায় এবং সূর্য থেকে আগত কিছু তাপ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ধরে রাখে । ফলে পৃথিবী হয়ে উঠছে উত্তপ্ত পরিবেশের জন্য যা হুমকিস্বরূপ। যার কারণে বনাঞ্চলে দাবানল সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা ছাড়াও রয়েছেনিম্নাঞ্চল সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, মরুকরণ প্রক্রিয়া নিশ্চিত হওয়ার আশঙ্কা এবং বন্যা-ঝড়-জলােচ্ছ্বাস-ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদির দ্বারা মানুষের জীবন বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা। তাছাড়া ওজোন স্তর ক্ষয়ের কারণে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে মানুষের মারাত্মক স্বাস্থ্য-সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে প্রকৃতি ও পরিবেশকে ভালােবাসতে হবে । ওজোন স্তরের ক্ষয় রােধ করতে হবে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সচেষ্ট হতে হবে সবাইকে। কেননা এ পৃথিবী আমাদের; একে স্বর্গীয় সুধাধারায় পরিণত করতে পারে একমাত্র মানুষের রুচিশীল ও সুস্থ চিন্তাধারা।