মিতব্যয়িতা
পরিমিত ব্যয় করার অভ্যাসের নাম মিতব্যয়িতা। এটি সচেতন মানুষের একটি বিশেষ গুণ হিসাবে বিবেচিত। মানুষকে জীবন ও সংসার পরিচালনার জন্য আয় ও ব্যয় দুটোই করতে হয়। আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে গেলে পরিণামে দুঃসহ দুর্ভোগ নেমে আসে। তাই যারা জীবন সম্বন্ধে সচেতন তারা কখনাে আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করেন না। আবার আয়-উপার্জন বেশি হলেও প্রয়ােজনের চেয়ে বেশি খরচ করা অপচয় হিসাবে গণ্য হয়। যারা মিতব্যয়ী তারা কখনাে অপ্রয়ােজনে ব্যয় করেন না। মিতব্যয়িতা অর্থের ব্যবহারে মানুষের সংযমী আচরণের পরিচায়ক। মানবজীবনে মিত্যব্যয়িতার গুরুত্ব অপরিসীম। মিতব্যয়ী মানুষ জীবনের প্রয়ােজনীয় ক্ষেত্রে প্রয়ােজনমতাে অর্থ ব্যয় করে অতিরিক্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারেন এবং এই সঞ্চিত অর্থ দুঃসময়ে খরচ করে উপকৃত হন। এছাড়া সঞ্চিত অর্থ বৃহত্তর মানবকল্যাণে ব্যয় করার সুযােগ থাকে। অন্যদিকে অপচয় বা অমিতব্যয়িতা মানুষকে ঋণগ্রস্ত করে এবং পরিণামে চরম দুর্দশায় নিপতিত হতে হয়। কথায় আছে ‘Cut your coat according to your cloth.’ অর্থাৎ আয় বুঝে ব্যয় কর। আর এই আয় বুঝে ব্যয় করাই হলাে মিতব্যয়িতা। মানুষ অর্থ-সম্পদ উপার্জন করে ব্যয় করার জন্যই। তবে অকারণ উল্লাসে, অসংযত বিলাসে ব্যয় করা অর্থ কখনাে ব্যক্তি কিংবা সমাজের উপকারে আসে না। রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের ক্ষেত্রেও মিতব্যয়িতা অবলম্বন করা উচিত। জনগণের জন্য কল্যাণপ্রদ নয় এরূপ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হলে তা হবে বাজে খরচের নামান্তর। তাই ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত সবক্ষেত্রে পরিমিত ব্যয় করা সমীচীন। অপচয় করাে না, অভাব হবে না’- এই বাক্যটি স্মরণে রেখে আমাদের অর্থের অপচয় বন্ধ করতে হবে । মিতব্যয়িতা অবলম্বন করে অর্থের কল্যাণময় ব্যবহার সুনিশ্চিত করা সকলেরই কর্তব্য।
Leave a comment