প্রশ্নঃ ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের অনুচ্ছেদ ১৪২ ও অনুচ্ছেদ ১৪৪ এর বিধান আলোচনা কর এবং তাদের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী প্রধান বিষয়গুলি আলোচনা কর ।
তামাদি আইনের ১৪২ ও ১৪৪ অনুচ্ছেদঃ তামাদি আইনের ১৪২ ও ১৪৪ অনুচ্ছেদ দুটি স্থাবর সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত মামলা দায়ের সম্পর্কিত। ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্টি প্রতিকার আইনের ৮ ধারায় দখলচ্যূত স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার সম্পর্কে মামলা দায়ের করার বিধান আছে এবং ভামাদি আইনের উক্ত অনুচ্ছেদ দুটিতে বর্ণিত মেয়াদের মধ্যে এই মামলা দায়ের করতে হবে। যেক্ষেত্রে বাদী অভিযোগ করে যে, তাকে বেদখল করা হয়েছে বা দখল হতে নিবৃত্ত করা হযেছে সেক্ষেত্রে তামাদি আইনের ১৪২ অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য হবে। বাদী কর্তৃক উক্ত দুটি অভিযোগের যে কোন একটি অভিযোগের অনুপস্থিতিতে বা প্রমাণের অভাবে তামাদি আইনের ১৪৪ অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য হবে। তামাদি আইনের ১৪৪ অনুচ্ছেদের পরিসর ১৪২ অনুচ্ছেদ অপেক্ষা প্রশস্ত, শেষোক্ত অনুচ্ছেদ স্থাবর সম্পত্তির মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। কিন্তু প্রথমোক্ত অনুচ্ছেদ স্থাবর সম্পত্তিতে যে স্বার্থ আছে তাকেও অতিরিক্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।
তামাদি আইনের ১৪২ অনুচ্ছেদ মোতাবেক বাদীকে প্রমাণ করতে হবে যে, সে মামলা দায়েরের তারিখ হতে ১২ বছরের মধ্যে মামলার সম্পত্তির দখলে ছিল এবং বাদী যদি ইহা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয় তবে বিবাদীর স্বত্ব আছে কি নাই তা যাচাই না করেই মামলা খারিজ হয়ে যাবে। কিন্তু ১৪৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মামলায় বাদী শুধুমাত্র তার স্বত্ব প্রমাণ করবে এবং এর পর বিবাদী তার জবর দখলের কথা প্রমাণ করবে। ১৪৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে যেদিন হতে বিবাদীর দখল বাদীর বিরুদ্ধে প্রতিকূল বা বিপরীত হিসেবে গণ্য হবে সেদিন হতে ১২ বছরের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হবে। ১৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বেদখলের তারিখ বা দখল হতে নিবৃত্ত হওয়ার তারিখ হবে ১২ বছরের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হবে।
কাজেই দেখা যায় যে, ১৪২ অনুচ্ছেদে বাদীর বে-দখল হওয়া সম্পত্তি পুনরুদ্ধার এবং ১৪৪ অনুচ্ছেদে বাদীর স্বার্থের প্রতিকূলে বিবাদী কর্তৃক সম্পত্তির দখল হতে পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত বিষয়ে বিধি-বিধান রয়েছে।
Leave a comment