❋হােস্টেল জীবনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বড় ভাইয়ের কাছে চিঠি লেখ।
রামশীল ইউনিয়ন কলেজ, গােপালগঞ্জ ।
১০ নভেম্বর ২০২১
শ্রদ্ধেয় ভাইজান
আমার সশ্রদ্ধ সালাম গ্রহণ করবেন। গতকাল আপনার লেখা পত্র পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছি। আপনি জানতে চেয়েছেন, হােস্টেলে কীভাবে আমরা জীবনযাপন করছি । আপনার কৌতূহল নিরসনকল্পে আমার হােস্টেল জীবনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছি ।
আমাদের কলেজের ছাত্রদের জন্য দুটি আবাসিক হােস্টেল রয়েছে। বেশ বড়াে পরিসর নিয়ে ভবনগুলাে নির্মিত এবং চারদিকে দেওয়ালঘেরা। হােস্টেল দুটির নাম নর্থ এবং সাউথ হােস্টেল । আমি সাউথ হােস্টেলে থাকি । সত্যিই ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড় হােস্টেলগুলাে। হােস্টেলের সব ছেলে যেন ভাই ভাই । দূরদূরান্তের অনাত্মীয়রাই এখানে আত্মীয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যায়। কারাে মধ্যে কোনাে ঝগড়া-বিবাদ, হিংসা-বিদ্বেষ নেই। এখানকার হােস্টেল সুপারভাইজার এবং আমাদের দেখাশােনার দায়িত্বে নিয়ােজিত শিক্ষকগণ নিজ সন্তানের মতােই আমাদের ভালােবাসেন । আমাদের অসুখ-বিসুখে তারা খোঁজখবর রাখেন । আমাদের কলেজ সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত । আমি দোতলার ১৫ নম্বর কক্ষে থাকি । প্রতি কক্ষে চারজন করে ছেলে থাকে। ছেলেরা সবাই আন্তরিক ।
এখানকার দৈনন্দিন কর্মলিকার মধ্যে অনেক কিছু রয়েছে। আমরা সকালে উঠে যার যার ধর্ম অনুযায়ী প্রার্থনা শেষে কিছুক্ষণ প্রাতভ্রমণ করে নিজ নিজ পাঠ অনুশীলনে বসে যাই । ঘণ্টাখানেক পর ক্যানটিন থেকে নাশতা খেয়ে এসে ক্লাসে চলে যাই। সকাল নটা থেকে ক্লাস শুরু হয়ে ২টা পর্যন্ত চলে। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া সেরে বিশ্রাম করি । অতঃপর বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা খেলাধুলায় মেতে থাকি। অবশ্য কেউ কেউ তখন বই পড়ে এবং গল্পগুজব করেও সময় কাটায়। সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই আবার পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ৮টায় আমরা রাতের খাবার খাই। এরপর একটানা রাত ১১টা পর্যন্ত পড়াশুনা চলে। রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে হােস্টেল সুপার তদারক করতে বের হন । কোনাে প্রকার অনিয়ম তিনি প্রশ্রয় দেন না। মােটকথা, সুন্দর এক নিয়মের মধ্যেই আমরা আমাদের দৈনন্দিন হােস্টেল জীবন অতিবাহিত করছি । গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ি আসব তখন আপনাদের সাথে বসে হােস্টেল জীবনের অভিজ্ঞতা বিস্তারিত বলব। আব্বা ও আম্মাকে আমার সালাম দেবেন এবং দোয়া করতে বলবেন।
ইতি —-
আপনার স্নেহের
রিয়াজ।
[ পত্র লেখা শেষে খাম একে খামের ওপরে ঠিকানা লিখতে হয় । ]
Leave a comment