নারীদের ইসলামী বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে হলে হায়েজ কি – হায়েজ
অবস্থায় নামাজ – কোরআন পড়ার বিধান সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকা
প্রয়োজন। আর এ সম্পর্কে যদি একজন নারী যদি হায়েজ কি – হায়েজ অবস্থায়
নামাজ – কোরআন পড়ার বিধান সম্পর্কে সঠিকভাবে না জানে তাহলে সে ইসলামী
নিয়মগুলো সঠিকভাবে পালন করতে পারবে না। তাই যেসব নারী হায়েজ কি – হায়েজ
অবস্থায় নামাজ – কোরআন পড়ার বিধান সম্পর্কে জানতে চায় আমার পোস্ট তাদের
জন্য।

আমি আমার আর্টিকেলের মাধ্যমে হায়েজ কি,হায়েজ শুরু হওয়ার বয়স,হায়েজ শেষ
হওয়ার বয়স,হায়েজ কত দিন থাকে বা স্থায়ী হয়,হায়েজ অবস্থায় নামাজ পড়ার
বিধান,হায়েজ অবস্থায় কোরআন পড়ার বিধান,হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়ার
বিধান,হায়েজ অবস্থায় আজানের উত্তর,হায়েজ অবস্থায় মৃত্যু,হায়েজ অবস্থায়
নিষিদ্ধ কাজ সহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। নিচে হায়েজ কি – হায়েজ
অবস্থায় নামাজ – কোরআন পড়ার বিধান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো- 

পোস্ট সূচিপত্রঃ হায়েজ কি – হায়েজ অবস্থায় নামাজ – কোরআন পড়ার
বিধান 

হায়েজ কি

ইসলামী শরীয়তের ভাষায় হায়েজ বলতে বোঝায় প্রাকৃতিক রক্ত যা কোন বাহ্যিক কারণ
ছাড়াই মেয়েদের যোনি পথ দিয়ে নির্গত হয়। এর আভিধানিক অর্থ হলো প্রবাহিত হওয়া
বা নির্গত হওয়া। এটা হল মেয়েদের প্রাকৃতিক রক্ত আর এই রক্তের সাথে পড়ে যাওয়া,
ব্যথা লাগা, অসুস্থতা হওয়া বা প্রসবের কোন সম্পর্ক নেই। একে আবার ঋতুস্রাব,
পিরিয়ড, মাসিক, হায়েজ বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। তবে পরিবেশ পরিস্থিতির
বিভিন্নতার কারণে এটি নানা রকম হয়ে থাকে। 

একটি মেয়ে যখন হায়েজ গ্রস্ত হয় তখন তার মধ্যে বেশ শারীরিক পার্থক্য লক্ষ্য করা
যায়। প্রত্যেকটি নারীর গর্ভাশয় আল্লাহ এর রক্ত সৃষ্টি করেছেন কারণ নারী যখন
গর্ভধারণ করে তখন তার গর্ভের বাচ্চা যেন এই রক্ত খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে।
আর একজন নারী যখন বাচ্ছা প্রসব করে তখন এই রক্তই নারীদের স্তনে দুধ হিসেবে
প্রবাহিত হয়। আবার যখন একজন নারী গর্ভবতী বা দুধদানকারী না হয় তখন মেয়েদের
যোনি পথ দিয়ে এই রক্ত বের হয়ে যায় তখন একে হায়েজ বলা হয়।

হায়েজ শুরু হওয়ার বয়স

সাধারণত হায়েজ মেয়েদের প্রাকৃতিক নিয়ম। একটি মেয়ের বয়স ৯ থেকে ১৬ বছরের
মধ্যে হায়েজ হতে পারে তবে সবচেয়ে উপযুক্ত বয়স হলো ১০ থেকে ১৬ বছর। তবে শারীরিক
গঠনের কারণে কারো কারো হায়েজ নয় ৯ বছরে শুরু হয় আবার কারো ১১ বা ১২ বছরের শুরু
হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ মনে করেন একটি মেয়ের যখন বয়স ১৪ বছর পার হয়
তখন তার হায়েজ না হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

আবার যদি কোন মেয়ের বয়স ৯ বছরের আগেই পিরিয়ড শুরু হয়ে যায় তাহলে সেটাও
চিন্তার বিষয়। আবার যেসব মেয়েদের ওজন অনেক বেশি তাদের হায়েজ তাড়াতাড়ি শুরু
হয় আবার যেসব মেয়েরা নিয়মিত ব্যায়াম করে, জাঙ্ক ফুড কম খায় তাদের পিরিয়ড
অন্যান্য মেয়েদের তুলনায় অনেক দেরিতে শুরু হয়। তবে প্রাণীজ প্রোটিন বেশি খেলে
পিরিয়ড তাড়াতাড়ি শুরু হতে পারে আর এ ক্ষেত্রে গ্রামের মেয়েদের তুলনায় শহরদের
মেয়েদের তাড়াতাড়ি পিরিয়ড শুরু হয়ে যায়।

হায়েজ শেষ হওয়ার বয়স

হায়েজ একটি মেয়ের আল্লাহ প্রদত্ত প্রাকৃতিক নিয়ম। যখন একজন মেয়ের হায়েজ হয়
তখন তাকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে ধরা হয় আবার  একজন মেয়ের হায়েজ বন্ধ হয়ে
যাওয়া ও প্রাকৃতিক নিয়ম। সাধারণত মেয়েদের ৪৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে হায়েজ শেষ
হয়ে যায়। যখন একটি মেয়ের হায়েজ বন্ধ হয়ে যায় তখন তাকে বলা হয় মেনোপজ। আর
মেনোপজ হলো একজন নারীর জীবনের সেই পর্ব যখন তার মাসিক বা পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব
বন্ধ হয়ে যায়।

তবে হায়েজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে একজন মেয়ের তার কয়েক মাস আগে থেকে অনিয়মিত
মাসিক হতে শুরু করে। আর যখন মেয়েদের মেনোপজ হয় তখন দেহের ইষ্টজেন হরমোনের
পরিমাণ কমে যায় এবং সে জন্য হাড়ের ক্ষয়, হৃদরোগা,হাড়ভাঙ্গা এবং স্ট্রোকের
ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

হায়েজ কত দিন থাকে বা স্থায়ী হয়

হায়েজ বা মাসিক বা পিরিয়ড ঋতুস্রাব একটি মেয়ের একটি সাধারণ প্রবণতা। একজন
নারীর ২৮ দিন পর পর হায়েজ হয়ে থাকে। কখনো কখনো ২৬ দিন পর আবার কারো কারো
ক্ষেত্রে ৩০ দিন পরও হায়েজ হতে পারে। তবে ২৬ থেকে ২৮ দিন সঠিক দিন হিসেবে ধরা
হয়ে থাকে। হায়েজ একটি মেয়ের তিন ৩ দিন থেকে সাত ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে
পারে। তবে তিন ৩ দিনের কম বা সাত ৭ দিনের বেশি স্থায়ী হলে তখন তাকে অনিয়মিত
ঋতুস্রাব বলা হয়।

আবার যদি ২১ থেকে ৩৫ দিন পরপর হায়েজ হয় তাহলে তাকেও অনিয়মিত ঋতুস্রাব হিসেবে
ধরা হয়। কোন কোন মেয়ের ক্ষেত্রে তিন ৩ দিন পর হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়
কিন্তু ধূসর বা বাদামি কালার ধরনের স্রাব আসে এগুলোও হায়েজের অন্তর্ভুক্ত। তবে
হায়েজ যদি ১০ দিন পার হয়ে যায় তাহলে তাকে অসুখ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

হায়েজ অবস্থায় নামাজ পড়ার বিধান

হায়েজ শুরু হওয়ার তিনদিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে তবে মেয়েদের শারীরিক
গঠনের ওপরও হায়েজ কম বা বেশিদিন থাকা নির্ভর করে। তবে সর্বনিম্ন হলো তিন দিন তিন
রাত এবং সর্বোচ্চ হলো দশ ১০ দিন দশ ১০ রাত। আর এর নিয়মের বাইরে যদি যায় তাহলে
তাকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলে গণ্য করতে হবে।

একজন মেয়ের হায়েজ অবস্থায় নামাজ পড়ার কোন বিধান নেই। হায়েজ গ্রস্ত অবস্থায়
কোন নারীকে নামাজ পড়তে হয় না এবং এই নামাজের কোন কাজা ও নেই। হযরত আয়েশা
উম্মুল মোমেনীন কে জিজ্ঞাসা করা হল আজ থেকে পবিত্র হওয়ার পর মহিলারা কি নামাজ
রোজা কাযা আদায় করবে, তিনি বললেন,এই অবস্থায় রোজার কাজা আদায় করতে হবে নামাজের
নয় “।সহিহ বুখারী ও মুসলিম।

হায়েজ অবস্থায় কোরআন পড়ার বিধান

হায়েজ আল্লাহ প্রদত্ত একটি প্রাকৃতিক নিয়ম। হায়েজ দ্বারা একটি মেয়ের সাবালিকা
প্রমাণ পাওয়া যায়। একটি মেয়ে হায়েজ রত অবস্থায় নামাজ আদায় করা, কোরআন
তিলাওয়াত করা এবং রোজা রাখার ব্যাপারে ইসলামে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। হায়েজ রত
অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা এমনকি কোরান স্পর্শ করাও নিষেধ। আর এ সম্পর্কে অনেক
আলেম তাদের মতামত প্রদান করেছেন এবং কিছু হাদিস থেকে কিছু দলিল ও তুলে ধরা
হয়েছে। যেমন-

হায়েজ রত নারী ও নাপাক ব্যক্তি কোরআন থেকে কিছুই পড়বে না। “তিরমিজি ১৩১”। এ
সম্পর্কে অপর একদল আলেম মত প্রদান করেন যে, মুখস্ত হলে হায়েজ অবস্থায় ও কোরআন
পড়া জায়েজ আছে। আর এ সম্পর্কে তাদের দলিল হল হযরত আয়েশা রাঃ এর একটি হাদিস,
রাসুল সাঃ এর সাথে হজ পালন করার সময় হযরত উমল মোমেনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু
তা’আলা আনহু এর হায়েজ  শুরু হয়ে গেল, এবং এতে তিনি কাঁদতে লাগলেন। অতঃপর
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, হাজিরা যা যা করে তা সবই তুমি
করে যাও। পবিত্র হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত শুধু কাবাঘর তাওয়াফ কোরো না। বুখারী, ৩০৫,
ইফাঃ ২৯৯।

হযরত ইব্রাহিম থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, “হায়েজ এবং গোসল ফরজ হওয়া ব্যক্তি
আল্লাহর জিকির করতে পারবে এবং তার নাম নিতে পারবে” মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,
হাদিস নাম্বারঃ ১৩০৫, সুনানে দারেমি, হাদিস নাম্বারঃ ৯৮৯।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মহিলারা হায়েজ অবস্থায় নামাজ পড়তে পারবে না এবং
রোজাও রাখতে পারবে না। সহিও বুখারী, হাদিস নং ২৯৮।

হায়েজ নিফাস রত মহিলাদের ক্ষেত্রে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ, রোজা রাখা নিষিদ্ধ, কোরআন
পড়া নিষিদ্ধ, গিলাফ ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা নিষিদ্ধ, মসজিদে প্রবেশ নিষিদ্ধ,
বায়তুল্লা তাওয়াফ করা নিষিদ্ধ। বাদা য়েউস সানায়ে, হাদিস নং ১/১৬৩।

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাজিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “ঋতুবর্তী মহিলা এবং গোসল ফরজ
হওয়া ব্যক্তি কোরআন পড়বে না”। শুনানে তিরমিজি, হাদিস নংঃ ১৩১, সুনানে দারেমী,
হাদিস নং ৯৯১, মুসনাদুর রাবি, হাদিস নং ১১, মুসান্নাফে ইবনে আবী সাইবা হাদিস নং
১০৯০, আব্দুর রাজ্জাক ৩৮২৩।

কোন মেয়ে যদি হেফজ করার সময় বা কোরআন মুখস্ত করা অবস্থায় হায়েজ হয়ে যায়
তাহলে কোরআন মুখস্ত করার প্রয়োজনে বা তিলাওয়াত করার প্রয়োজনে তা দেখা দিলে বা
কোন মেয়ের হায়েজ অবস্থায় কোরআন হেবসের কোন তেলাওয়াত অব্যাহত রাখতে চাইলে মনে
মনে তেলাওয়াত করবে। তবে মুখে উচ্চারণ করতে পারবে না।

নারীদের হায়েজ সাধারণত তিন ৩ থেকে সাত ৭ দিন পর্যন্ত ধরা হয়ে থাকে। এরপরে দশ ১০
দিন পার হয়ে গেলে তাকে হায়েজ না বলে ইস্তেহাজা বলা হয়। আর ইস্তেহাজা অবস্থায়
নারীরা কোরআন তেলাওয়াত বা স্পর্শ করতে পারবে। তবে আবার বলা হয়, হায়েজ গ্রস্থ
নারী বাচ্চাদের কোরআন শরীফ বানান করে শিক্ষা দিতে পারবে তবে রিডিং পড়ানোর সময়
এক নিঃশ্বাসে কোন এক আয়াত পড়তে পারবে না। বরং শাঁস ভেঙ্গে ভেঙ্গে এক দুই শব্দ
করে পড়াতে হবে।

হায়েজরত কোন নারী যদি কোরআন তেলোয়াতের কোন সিজদার আয়াত শুনতে পায় তাহলে তার
সিজদা আদায় করা ওয়াজিব হবে না। আবার কোরআন শরীফের গিলাফ যদি কোরআন শরীফ থেকে
আলাদা হয় তবে তা দ্বারা কোরআন শরীফ ধরা জায়েজ আছে। তেমনিভাবে শরীর থেকে বিছানো
কাপড় দ্বারা কোরআন শরীফ ধরাও জায়েজ আছে।

আবার হায়েজরত কোন নারীর জন্য যদি কোন শোপিস, জিনিসপত্র, পিরিজ কাপড় কিংবা
কাগজের ওপর যদি কোন কোরআনের আয়াত লেখা থাকে তাহলে তাতেও হাত লাগানো নিষেধ আছে।
তবে এক্ষেত্রে পৃথক পৃথক কাপড় দিয়ে সে এগুলো ধরতে পারবে।

হাদিস এবং ওলামাদের মত বিশ্লেষণ করলে আমরা এ কথা জানতে পারি যে, অপবিত্র
অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করা এবং স্পর্শ করা কোনটিই জায়েজ নয়। হায়েজ গ্রস্ত
নারী পবিত্রতা অর্জন করে ফরজ গোসল করে তারপরে সে কোরআন স্পর্শ করবে এটাই
বিশুদ্ধ মত।

হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়ার বিধান

হায়েজ আল্লাহ প্রদত্ত একজন নারীর জন্য প্রকৃতির একটি বিধান। আর হায়েজ রত
অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত করা এবং স্পর্শ করা হাদিসের নিষেধ থাকলেও কুরআনের যে
আয়াতগুলো তারা দোয়া অর্থ  প্রকাশ করে অথবা আল্লাহর প্রশংসা, বড়ত্ব এবং
জিকির করা বোঝায় এই আয়াতগুলো পড়া যাবে। তবে এমন কোন আয়াত পাঠ করা যাবে না
যে আয়াতগুলো দ্বারা আল্লাহর নির্দেশ এবং নিষেধাজ্ঞা, পূর্বের  এবং
ভবিষ্যতের কোন ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য বুঝায় এমন আয়াত পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে
বলা হয়েছে।

তবে কোরানে আয়াতুল কুরসি কোরআনের আয়াত হলেও এটা দোয়া হিসেবে বোঝানো হয়ে
থাকে। তাই হায়েজরত অবস্থাতেও আয়তুল কুরসি, তিন কুল যেমন- সুরা ফালাক, সূরা
ইখলাস, সূরা নাস এমনকি সূরা কাফিরুন ও আপনি মুখস্ত থাকলে পড়তে পারবেন। তবে
আপনি কোরআনের যে আয়াতই পড়েন না কেন সেটা আপনাকে দোয়া হিসেবে পড়তে হবে।

হায়েজ অবস্থায় আজানের উত্তর

আজানের জবাব দেওয়া প্রত্যেক ঈমানদার মুসলিম নর নারীর জন্য মুস্তাহাব এক্ষেত্রে
মহিলারা ও আযানের জবাব দিতে পারবেন কারণ হায়েজরত অবস্থায় কোন নারীর আজানের
জবাব দিতে কোন অসুবিধা নেই। ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃষ্ঠা ৮, ফাতাওয়া
হিন্দিও,১/৮৩, আদরুল মুক্তার, ১/২৯৩।

আজান শোনা এবং আযানের উত্তর দেওয়া দুটি স্বতন্ত্র ইবাদত। আযান শুনে মৌখিকভাবে
উত্তর দেওয়া সুন্নাহ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন তোমরা
আযান শুনবে তখন জবাবে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ তোমরাও বলবে। বুখারি, হাদিস নং
৬১১।

আযানের জবাব দেওয়া প্রসঙ্গে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু
বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল সাঃ মোয়াজ্জিনদের মর্যাদা যে আমাদের
চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যাবে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
তুমিও তাই বল মুয়াজ্জিন যা বলে। তারপর আজান শেষ হলে আল্লাহর কাছে চাও। তখন যা
চাইবে তাই দেয়া হবে”। আবু দাউদ, মেশকাত।

তবে বিশেষ কিছু সময় আছে যে সময়ে আজানের উত্তর দেওয়া নিষেধ রয়েছে যেমন-

  • খুতবার সময় সেটা জুম্মার খুতবা হোক অথবা বিবাহের খুতবাহ এ সময় আজানের উত্তর
    দেয়া নিষেধ
  • আজানের সময় নামাজ পড়ছেন এমন ব্যক্তি
  • পেশাব পায়খানা করার সময়
  • খাবার খাওয়ার সময়
  • স্ত্রী সহবাসের সময়
  • ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন বা শরীয়তের মাসলা মাসায়েল শিখানো এবং শিক্ষা দেওয়ার
    সময়
  • তবে কোরআন তেলাওয়াতের সময় আজান হলে তেলাওয়াত বন্ধ করে আজানের জবাব দেওয়া
    উত্তম। ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া, দ্বিতীয় খন্ড।

হায়েজ অবস্থায় রোজার বিধান

রোজা একটি ফরজ ইবাদত। প্রত্যেক সুস্থ নর-নারীর ওপর রমজান মাসের রোজা আদায় করা
ফরজ। তবে নারীদের ক্ষেত্রে রোজা আদায় করার ব্যাপারে কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে।
বিশেষ করে হায়েজরত নারীদের ক্ষেত্রে রোজা রাখার ব্যাপারে ইসলামে কিছু
নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যেমন-

হায়েজ রত অবস্থায় নারীদের রোজা রাখার কোন বিধান নেই অর্থাৎ হায়েজ হলে রোজা
রাখা যাবেনা। হায়েজ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’আলা সূরা বাকারার ২২২ নং আয়াতে
বলেন, হায়েজের রক্ত থাকাকালীন অবস্থায় নারী আপন অবস্থায় থাকবে। তারপর ভালো
হয়ে গেলে গোসল করে রোজা আদায় করতে পারবে”।

মাসয়ালাঃ রমজান মাসে নারীদের হায়েজ চলাকালীন সময়ে রোজা না রাখলে অথবা রোজা
রাখার পর হায়েজ শুরু হলে তার জন্য পানাহার করা বৈধ। তবে অন্য লোকদের সামনে
পানাহার করা উচিত নয়। দিনের বেলায় যদি হায়েজ বন্ধ হয় তাহলে দিনের বাকি অংশে
রোজাদারের মতো পানাহার বর্জন করা ওয়াজিব”। আহসানুল ফাতাওয়া, ৪/৪২০।

হায়েজ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত আছে, হযরত আয়েশা রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে
বর্ণিত, তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, হায়েজ থেকে পবিত্রতার পর মহিলারা কি নামাজ ও
রোজা কাজা আদায় করবে! তিনি বললেন, এ অবস্থা আমাদের রোজা কাজা আদায় করার
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নামাজের নয়। সহিও বুখারী ও মুসলিম।

মাসয়ালাঃ পবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার পর যদি হায়েজ শুরু হয় বা সন্তান প্রসব
হয় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং পরে তা কাজা করতে হবে। সেটা নফল রোজা হোক বা
ফরজ রোজা হোক।

মাসয়ালাঃ হায়েজ রত অবস্থায় এবং নেফাসের পরে পবিত্রতা হওয়া পর্যন্ত সময়গুলোতে
রোজা রাখা নিষেধ রয়েছে। তবে পরবর্তী দিনগুলোতে রোজার কাজা আদায় করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ
ঘুমানোর আগে  আমল – রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয় জানুন

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ আগে অর্থাৎ এক মিনিট আগেও যদি রোজা পালনকারী নারীর হায়েজ
বা পিরিয়ড শুরু হয় তাহলে ওই দিনের রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং পরবর্তী দিনে ঐ রোজার
কাজা আদায় করতে হবে। মহান আল্লাহ তাআলা সূরা বাকারার ১৮৪ নং আয়াতে বলেন, “তবে
অন্যদিনে এগুলো গণনা কাজা করে নেবে। সুবেহ সাদিকের সামান্য পূর্বেও যদি কোন
নারী হায়েজ থেকে থেকে পবিত্রতা অর্জন করে তাহলে তার রোজা পালন করা আবশ্যক।
কারণ তিনি রোজা পালনকারী লোকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন।

তবে রোজা পালনে এখন তার আর কোন বাধা না থাকার জন্য রোজা পালন করা
ওয়াজিব।এক্ষেত্রে তার পবিত্র হওয়ার গোসল বা ফরজ গোসল যদি সুবেহ সাদেকের পর
করে তাহলে তার রোজা হয়ে যাবে। হায়েজের দিন থেকে শুরু করে হায়েজের শেষ
পর্যন্ত একজন নারীর রমজানের সম্মানার্থে অন্যদের সামনে পানাহার থেকে বিরত
থাকবে। এটা তাকওয়ার পরিচয়”। সূরা হাজ্ব, আয়াতঃ ৩২।

হায়েজ শুরু হলে সাধারণত তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত হায়েজ হিসাবে ধরা হয়। তবে
হায়েজের রক্ত যদি ১০ দিন পরেও ভালো না হয় তখন তাকে হায়েজ না বলে ইস্তেহাজা
বলা হয়। আর এই সময় রোজা রাখতে হবে, রোজা না রাখার ব্যাপারে কোন অনুমতি নেই।
হায়েজরত অবস্থায় নারীদের নিজ ঘরে অবস্থান করতে হবে তবে তারা নিজ ঘরে সুন্নত ও
নফল ইতেকাফ করতে পারবে।

একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর হায়েজ আল্লাহ প্রদত্ত প্রাকৃতিক নিয়ম। একজন মেয়ের
সাধারণত ৯ বছর বয়স শুরু হলে তার হায়েজ শুরু হয়ে যায় এবং তখন তাকে
প্রাপ্তবয়স্ক বলা হয়। আর ইসলামী শরিয়ায় এই সময় মেয়েদের রোজা না রাখার
বিধান রয়েছে। এরপরেও যদি কোন নারী ওষুধ সেবনের মাধ্যমে হায়েজ বন্ধ রেখে রোজা
রাখতে চায় তাহলে তার স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি না হলে সে এটা করতে পারবে। তবে
স্বাস্থ্যের যদি কোন ঝুঁকি থাকে তাহলে এক্ষেত্রে এটা করা উত্তম নয়। রোজা নষ্ট
হলে পরবর্তীতে রোজা কাজা আদায় করলেই রোজা পালন হয়ে যাবে।

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তাকে
জিজ্ঞাসা করা হল হায়েজ থেকে পবিত্র হওয়ার পর মহিলারা কি নামাজ ও রোজা কাজা
আদায় করবে! তিনি বললেন, এ অবস্থায় আমাদের রোজা কাজা আদায় করতে বলা হয়েছে,
নামাজের নয়। বুখারী ১/৮৩, ১/ ২ ৯৩।

হায়েজ অবস্থায় মৃত্যু

হায়েজ রত অবস্থায় কোন নারী যদি মৃত্যুবরণ করেন তাহলে অনেকেই মনে করেন তাকে
একবার মৃত্যুর জন্য গোসল করাতে হবে এবং আরেকবার পবিত্র হওয়ার জন্য গোসল করাতে
হবে। কিন্তু তাদের এ মত ঠিক নয়। কারণ মৃত ব্যক্তিকে একবার গোসল করালেই তার
পবিত্রতা অর্জন হয়ে যাবে। দ্বিতীয়বার তাকে গোসল করানোর কোন প্রয়োজন
নেই। 

একজন নারী সে হায়েজরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করুক অথবা স্বাভাবিক অবস্থাতেই
মৃত্যুবরণ করুক না কেন তাকে একবার গোসল করালে যথেষ্ট হয়ে যাবে। তাকে
দ্বিতীয়বার গোসল করানোর কোন প্রয়োজন নেই।

হায়েজ  অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ

হায়েজ আল্লাহ প্রদত্ত প্রকৃতির নিয়ম হলেও হয়েজ রত অবস্থায় কিছু কাজ করার
ব্যাপারে ইসলামে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যেমন- হায়েজ রত অবস্থায় মহিলা বা স্ত্রীর
সাথে মিলন করা হারাম। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারার ২২২ নং আয়াতে
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন,” আর আপনার কাছে জিজ্ঞাসা করলে হায়েজ সম্পর্কে বলে
দেন, এটা অনুচিত অপবিত্র কাজ।

তোমরা হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী মিলন থেকে বিরত থাকো যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে
যায় ততক্ষণ তোমরা তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। যখন উত্তম রূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যায়
তখন গমন করো তাদের কাছে যেভাবে আল্লাহ হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারী
এবং যারা অপবিত্র থেকে বেঁচে থাকে তাদের পছন্দ করেন”।

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন হায়েজরত মহিলার সঙ্গে মিলিত হয়
কিংবা কোন মহিলার পশ্চাৎধারে সঙ্গম করে অথবা কোন গণকের নিকটে যায় নিশ্চয়ই সে
মোহাম্মাদের উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করে”। তিরমিজি, হাদিস নং ১৩৫,
সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস নং ৬৩৯, মসনদে আহমেদ হাদিস নং ৯২৯০।

মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নং আয়াতে বলেন, “অর্থাৎ যারা পাক
পবিত্র তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে অর্থাৎ কোরআনকে স্পর্শ করবেনা”। রাসুল সাঃ এর
সাথে হজ পালন করার সময় হযরত উমল মোমেনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর
হায়েজ  শুরু হয়ে গেল, এবং এতে তিনি কাঁদতে লাগলেন। অতঃপর নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, হাজিরা যা যা করে তা সবই তুমি করে
যাও। পবিত্র হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত শুধু কাবাঘর তাওয়াফ কোরো না। বুখারী, ৩০৫,
ইফাঃ ২৯৯।

রাসূল সাঃ বলেন, কোন হায়েজ গ্রস্ত নারী এবং নাপাক ব্যক্তির জন্য যার উপর গোসল
ফরজ হয়েছে তার মসজিদে অবস্থান করা আমি বৈধ করিনি। আবু দাউদ)। তবে মসজিদ থেকে
কোন জিনিস নেয়ার দরকার হলে তার সে নিতে পারবে। রাসূল সাঃ একদা আয়েশা রাঃ
বললেন, মসজিদ থেকে আমার চাদরটি এনে দাও। আয়েশা রাঃ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল
সাঃ আমি হায়েজ গ্রস্ত। রাসূল সাঃ বলেন, তোমার হাতে তো হায়েজ নেই”। মুসলিম
শরীফ।

আরো পড়ুনঃ আশুরার রোজা কয়টি – আশুরার ফজিলত সম্পর্কে  বিস্তারিত জেনে নিন

সংক্ষিপ্ত আকারে বলতে গেলে হায়েজরত অবস্থায় নারীদের ক্ষেত্রে যেগুলো করা
নিষেধ তা হলো-

  • হায়েজ রত অবস্থায় মহিলারা কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে না
  • হায়েজ রত অবস্থায় রোজা রাখা যাবে না
  • হায়েজ রত অবস্থায় নামাজ আদায় করা যাবে না
  • হায়েজ রত অবস্থায় কোরআন স্পর্শ করা যাবে না
  • হায়েজ রত অবস্থায় স্বামী সহবাস করা যাবে না
  • হায়েজ রত অবস্থায় হজ করার সময় কাবাঘর তাওয়াব বা মসজিদে প্রবেশ করা যাবে
    না

তবে কেউ যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বা ভুল করে হায়েজ রত স্ত্রীর সাথে সহবাস করে
তবে তার গুনাহ হবে না। তবে যদি সে ইচ্ছে করে সহবাস করে তাহলে তাকে কাফফারা দিতে
হবে। আর এর কাফফারা হল এক দিনার বা অর্থ দিনার। স্বামী যে কোন একটি দিতে পারবে
আবার অনেক ওলামাদের মতে হায়েজ এর প্রথম দিন সহবাস করলে এক দিনার এবং শেষে দিন
সহবাস করলে অর্ধ দিনার কাফফারা দিতে হবে। কিতাবুল কাবার, পৃষ্ঠা ৫৫।

তবে আমাদের এ কথা জানা প্রয়োজন যে, মাসিকের সময় মেয়েদের কোন ডিম্বাণু থাকে
না। রক্তচাপের সময় সমস্ত ডিম্বাণু বের হয়ে যায়। তবে কখনো কখনো মাসিকের সময়
ডিম্বানু তৈরি হয় যার কারণে মাসিকের সময় সহবাস করলেও সন্তান ধারণ করতে
পারে।হায়েজ রত একটি মেয়ের শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকে। অনেক সময় পেটে
অসহ্য ব্যথা থাকে, কারো কারো ক্ষেত্রে মাথাব্যথা হয়, বমি বমি ভাব হয় বা কখনো
বমি হয়। তাই হায়েজ অবস্থায় সহবাস করলে একটি মেয়ের অনেক শারীরিক কষ্ট হয়।

হায়েজরত অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করলে যে সকল শারীরিক ক্ষতিগুলো হতে পারে তা
হলো-

  • মাসিকের সময় জরায়ু ও জনি মুখের অম্ল ভাব থাকে না তাই এটি খুব সহজে জীবাণু
    দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে
  • হায়েজের সময় নারীদের রক্তের সাথে একটি যৌগ পদার্থ বের হয় যা পুরুষের রোগের
    কারণ হতে পারে
  • নারীদের জরায়ুর মুখ ঘুরে যেতে পারে যা পরবর্তীতে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে
  • মিলনের সময় এবং পরবর্তী সময়ে প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে
  • রক্তপাত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে
  • পুরুষের লিঙ্গে রক্ত লেগে অরুচি ভাব হতে পারে
  • পুরুষের লিঙ্গে কোন রোগ থাকলে তা নারীর জরায়ুতে ছড়িয়ে পড়তে পারে

উপরোক্ত বিষয়গুলো থেকে এ কথাই বোঝা যায় যে, হায়েজরত অবস্থায় স্ত্রী সহবাস
করা অনুচিত। যতক্ষণ না স্ত্রী হায়েজ মুক্ত হয়ে পবিত্র হয় এবং ফরজ গোসল আদায়
করে হায়েজ রত থেকে মুক্ত হয়ে গোসল করে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী
মিলন করা হারাম। বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানেও এ কথা প্রমাণিত হয়েছে যে, মেয়েদের
যখন হায়েজের রক্ত বের হয় তখন তার সাথে প্রচুর বিষাক্ত যৌগ বের হয়। তাই মাসিক
অবস্থায় সহবাস করলে স্বামীদের গেনোরিয়া, সিফিলিশ, লিঙ্গ বিকৃতি ও লিঙ্গ ছোট
হয়ে যেতে পারে।

শেষ কথা

হায়েজ হলো আল্লাহ প্রদত্ত প্রাকৃতিক নিয়ম যা একজন মহিলার জন্য
আল্লাহর প্রদত্ত একটি বড় নিয়ামত। একজন মেয়ে ৯ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে তার
হােজ শুরু হয় এবং ৪৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে তার হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়। এটা
আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ম অনুসারে চলতে থাকে। তবে হায়েজরত অবস্থায় কিছু কিছু কাজ
ইসলামী শরীয়া মোতাবেক নিষিদ্ধ রয়েছে আর এর মধ্যে অন্যতম হলো হায়েজ অবস্থায়
নামাজ কোরআন পড়ার বিধান, রোজা রাখার বিধান, আয়াতুল কুরসি পড়ার বিধান, এমনকি
মৃত্যু পর্যন্ত এসব নিয়মের মধ্যে পড়ে।

আমি আমার আর্টি কালের মাধ্যমে এ বিষয়ে যাবতীয় বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
আমি আশা করি আমার এই আর্টিকেল আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আর যদি আপনাদের উপকারে
আসে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের নিয়ম
মেনে জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন। আমিন।