হান্টার কমিশন তথা প্রথম ভারতীয় শিক্ষা কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও পর্যালােচনার দিকগুলি ছিল一
(1) উড-এর ডেসপ্যাচের কার্যকারিতা অনুসন্ধান: উড-এর ডেসপ্যাচে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য যেসব সুপারিশ করা হয়েছিল, সেগুলি কতখানি কার্যকরী হয়েছে, তা দেখা এবং কার্যকরী না হয়ে থাকলে, তার কারণ অনুসন্ধান করে, তাকে কীভাবে কার্যকরী করে তােলা যায়, সে সম্পর্কে প্রয়ােজনীয় সুপারিশ করা।
(2) জনশিক্ষা প্রসারের বাধাসমূহ অনুসন্ধান: জনশিক্ষা প্রসারের কাজ কেন ব্যাহত হচ্ছে তা অনুসন্ধান করা।
(3) জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি প্রচেষ্টায় সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে নীতি নির্ধারণ: জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলির অবস্থা কী হবে, বেসরকারি প্রচেষ্টার প্রতি সরকার কী নীতি গ্রহণ করবে, এইসব বিষয় অনুসন্ধান করে প্রয়ােজনীয় সুপারিশ বা মতামত ব্যক্ত করা।
(4) সরকারি আর্থিক অনুদানের সম্প্রসারণে নীতি নির্ধারণ: সরকারি আর্থিক অনুদান আরও প্রসারিত করার জন্য প্রয়ােজনীয় নীতি নির্ধারণ করা।
1882 খ্রিস্টাব্দে গঠিত হান্টার কমিশন প্রায় এক বছর ধরে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের অতীত শিক্ষাব্যবস্থা, কোম্পানি এবং ব্রিটিশ শাসনকালে দেশে শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে পর্যালােচনা করে। দীর্ঘ পর্যালােচনার পর এই কমিশন শিক্ষার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করে। কমিশন তার রিপাের্টে প্রায় 222টি প্রস্তাব বা সুপারিশ সরকারের কাছে পেশ করে। এখানে কমিশনের সাধারণ সুপারিশগুলি। উল্লেখ করা হয়一
(1) বেসরকারি সংস্থাগুলিকে বিদ্যালয় স্থাপনে উৎসাহদান: দেশের আপামর জনগণ যাতে আরও বেশি শিক্ষার সুযােগ, লাভ করতে পারে, তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি সংস্থাগুলিতে আরও বেশি সংখ্যক বিদ্যালয় স্থাপনে আগ্রহী করে তুলতে হবে।
(2) দেশীয় বিদ্যালয়গুলির অস্তিত্ব রক্ষা: ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার যথাযথ প্রসার ঘটানাের জন্য সরকারি বিদ্যালয়ের পাশাপাশি দেশীয় বিদ্যালয়গুলির অস্তিত্ব যাতে বজায় থাকে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
(3) দেশীয় বিদ্যালয়গুলিতে আর্থিক সাহায্যদান: দেশীয় বিদ্যালয়গুলিকে প্রয়ােজনমতাে আর্থিক সাহায্যদানের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখতে হবে।
(4) সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ: শিক্ষা প্রসারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারগুলিকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।
Leave a comment