স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনা থেকে জানা যায় যে, লেখকদের জাহাজ রেড সি পার হয়ে ১৪ জুলাই মিশরের সুয়েজ বন্দরে থেমেছিল মাল নামানাের জন্য। তখন সারা বিশ্বজুড়ে মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি প্লেগের রমরমা চলছিল। সুয়েজ বন্দরের পর থেকে যেহেতু ইউরােপের শুরু এবং লেখকদের জাহাজের পরবর্তী গন্তব্যস্থান যেহেতু ছিল ইউরােপের নেপক্স (বর্তমান নেপােলি) এবং মার্সাই বন্দর, তাই জাহাজটিকে প্লেগ-জীবাণুমুক্ত অবস্থাতেই স্বর্গরূপী ইউরােপ প্রবেশ করানাে বাধ্যতামূলক ছিল। জাহাজ প্লেগহীন অবস্থায়, বিনা-ছোঁয়াছুঁয়িতে দশদিন যেহেতু কাটিয়ে ফেলেছে, তাই প্লেগের নিয়ম অনুযায়ী প্লেগ বিপদ থেকে এই জাহাজটি মুক্ত হয়েছিল। প্লেগরােগাক্রান্ত মিশরের লােকেদের স্পর্শে যেহেতু আবার প্লেগ রােগ সংক্রমণের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে, আর তেমন ঘটলে যেহেতু আবার দশদিন ধরে বন্দরে আটকে থাকতে হবে জাহাজটিকে, তাই ইউরােপ-প্রবেশের আগে জাহাজটি ছুঁৎমার্গের নিয়ম কঠোরভাবে পালন করে চলেছিল। জাহাজ থেকে মাল নামাবার জন্য তাই সুয়েজ বন্দরের কুলিদের ব্যবহার করা হয়নি। জাহাজের বেচারি খালাসিরা কুলির মতাে মােটবহনকারী হয়ে মালগুলি বয়ে নিয়ে জাহাজের ক্রেনে তুলে দিচ্ছিল এবং ক্রেন সেই মাল সুয়েজ বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা নৌকোয় আলগােছে ফেলছিল। আর, সেই নৌকো থেকে সুয়েজের কুলিরা মালগুলি তীরে নিয়ে যাচ্ছিল। ছোঁয়াছুঁয়ির আশঙ্কায় মিশরের অধিবাসীদের দিয়ে জাহাজের সামনে বিজলি আলাে পর্যন্ত লাগাতে দেওয়া হয়নি। স্বর্গরূপ ইউরােপে ইঁদুর বাহন প্লেগের প্রবেশ আটকানাের জন্যই এত আয়ােজন করা হয়েছিল।

গতস্য শােচনা নাস্তি কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল যা গেছে তার জন্য শােক করতে নেই। স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার রচনায় আমরা দেখতে পাই যে, সুয়েজ বন্দরে হাঙর দেখতে দেখতে সেকেন্ড ক্লাসের অতি উৎসাহী এক ফৌজি যাত্রী সারা জাহাজ খুঁজে একটি ভীষণ আকৃতির বড়শি জোগাড় করে। তাতে সেরখানেক মাংস গেঁথে, বড়শির সঙ্গে একটি মােটা কাছি বেঁধে এবং তার চার হাত দূরে একটি মস্ত কাঠ ফাতনা হিসেবে ব্যবহার করে ফাতনাসমেত বড়শিটি জলে ফেলে শিকারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। কিছুক্ষণ বাদে প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে হাঙর আসে। প্রথমে দুবার পাশ দিয়ে চলে গেলেও, শেষপর্যন্ত বাঘা হাঙরটি টোপ মুখে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে চল্লিশ-পঞ্চাশ জন মিলে দড়ি ধরে টানতে শুরু করলে কিছুটা ওঠার পরেই টোপ খুলে হাঙর পালিয়ে যায়। হতাশ হয়ে যাত্রীদের পারস্পরিক দোষারােপের পালা শুরু হয়। এই প্রসঙ্গে লেখক প্রশ্নোস্তৃত মন্তব্যটি করেন।

কালাে ডােরা কাটা ‘বাঘা হাঙরটি চলে যাওয়ার পরেই পাইলট ফিশদের পিছনে প্রকাণ্ড শরীর নাড়িয়ে দ্বিতীয় ‘থ্যা’ হাঙরটি এসে উপস্থিত হয়। বড়শিতে গাঁথা শুয়ােরের মাংস তাকে আকর্ষণ করে। যখন সেই থ্যাব্ড়ামুখো হাঙরটি টোপ খেয়ে চলে যেতে উদ্যোগী হয়, তখনই তারা কাছি ধরে টানতে শুরু করে। সেই সম্মিলিত টানে হাঙরটি আর পালাতে পারে না, তার ঠোট এফোড় ওফোড় করে বিঁধে যায় বড়শি। এরপর জল- পুলিশের সাহায্যে দ্বিতীয় হাঙরটির ল্যাজের দিকেও একটি দড়ি বেঁধে দিয়ে টেনে তােলা হয় হাঙরটিকে। প্রাথমিক হতাশা এভাবেই বদলে যায় দ্বিতীয়বার হাঙর শিকারের সাফল্যের আনন্দে। ফলত, প্রথম হাঙর শিকারের ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পর গতস্য শােচনা নাস্তি উক্তিটির প্রয়ােগ যথাযথ হয়েছিল বলে মনে হয়।

প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনাটি থেকে নেওয়া। আলােচ্য রচনাতে দেখা যায়, থ্যাবড়ামুখাে হাঙরটি টোপ গেলার পরে জাহাজের সকলে কাছি ধরে টানতে থাকে। হাঙরটিকে টেনে তােলার সময়েই জাহাজের যাত্রীরা লক্ষ করে যে, হাঙরের পেটের নীচ দিয়ে নাড়িভুড়ি ঝুলছে। সেই মুহূর্তে হাঙরটিকে জাহাজে তুলতে ব্যস্ত যাত্রীদের মনে হয় সেই নাড়িভুড়ি কেটে ফেলাই ভালাে। তাতে বিপুলায়তন হাঙরের ওজন কিছুটা হলেও কমবে এবং হাঙরটিকে টেনে জাহাজের ওপর তােলাও বেশ সহজ হবে। এই প্রসঙ্গেই মন্তব্যটি করা হয়েছে।

জাহাজের বিপুল সংখ্যক যাত্রীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় থ্যাবড়ামুখাে হাঙরটিকে জাহাজে তােলা হলে, হাঙরটির মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য সেই ফৌজি যাত্রীটি রক্ত-মাখা পােশাক পরেই কড়িকাঠ দিয়ে হাঙরটির মাথায় ক্রমাগত আঘাত করতে থাকে। মহিলা যাত্রীরা এ হেন নিষ্ঠুরতায় শিউরে উঠলেও কিছুতেই সেই স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র যায় না। পরবর্তীতে দেখা যায়, হাঙরের পেট চেরা হলে চারদিকে রক্তের নদী বয়ে যেতে থাকে। মাথায় প্রচণ্ডভাবে আঘাত পেলেও কিছুক্ষণ ধরে হাঙরটি ছিন্নভিন্ন অন্ত্র, দেহ ও হৃদয় নিয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছিল। সবশেষে, হাঙরটির পেট চিরলে হাড়, চামড়া, মাংস, কাঠের টুকরাে ইত্যাদি বিপুল পরিমাণে বের হতে থাকে। এই নিষ্ঠুর দৃশ্য সামনে থেকে প্রত্যক্ষ করায় লেখকের সংবেদনশীল মনে এক তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল।

স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনায় আমরা দেখি যে হাঙর-পরিপূর্ণ সুয়েজখালে জাহাজের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ফৌজি যাত্রী হাঙর-শিকারে উৎসাহী হয়ে পড়েন। সারা জাহাজ খুঁজে নােঙরের আকৃতির এক বিশাল হাঙর বড়শি জোগাড় করেন তিনি। সেই ভীষণাকৃতির বড়শিতে কেজিখানেক শুয়ােরের মাংস গেঁথে ভালাে করে দড়ি দিয়ে বেঁধেও দেন। বড়শিটি থেকে চার হাত দূরে বড়াে একখণ্ড কড়িকাঠ ফাতনা হিসেবে রেখে তা ওই দড়ি দিয়েই বেঁধে লাগানাে হয়। তারপর ফাতনা-সহ দড়ি বাঁধা বড়শিটা জলে ফেলে দেওয়া হয়। জাহাজের নীচে থাকা নৌকার নিদ্রাচ্ছন্ন আরব পুলিশদের ডেকে এরপর যাত্রীরা হাঙরের টোপসহ বড়শি ও ফাতনাটাকে জাহাজ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার অনুরােধ করেন। তারা একটা লতাডালের অগ্রভাগ দিয়ে ঠেলে ফাতনাটাকে দূরে সরিয়ে দেন। অন্যদিকে, হাঙর বড়শির টোপ গিললে তাকে টেনে তােলার জন্য চল্লিশ-পঞ্চাশ জন সবল যাত্রী দড়ির কাছে অপেক্ষা করতে থাকেন। এদিকে সমুদ্রের ওপর সেই বড়শিফাতনার দশ বর্গহাত জায়গা জুড়ে সেই টোপ-মাংসের তেল চিক্ চিক্ করতে থাকে এবং তার গন্ধও চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এভাবেই জাহাজটির দ্বিতীয় শ্রেণির যাত্রীরা ফৌজি যাত্রীটির নেতৃত্বে হাঙর শিকারের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।

“বুড়ি উঠে বসে!” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বুড়ির উঠে বসার কারণ লেখাে।

“হাতি পাকে পড়লে ব্যাঙেও লাথি মারে।” -বক্তার একথা বলার কারণ প্রসঙ্গসহ আলােচনা করাে।

“এদের কাউকে দেখছি না।” -কে, কাকে কাদের কথা জিজ্ঞাসা করেছে? তাদের সম্পর্কে সৌখীর কোন্ মনােভাবের প্রকাশ দেখা যায়?

“তাদের দেখা যাচ্ছে না কেন?” -সে কথা কেন সৌখীকে সব খুলে বলা যাচ্ছে না?

‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পের মাদীন পেশকার কীভাবে চুরি যাওয়া লােটার সন্ধান পেল?

“দারােগা-পুলিশ দেখে বুড়ির বুক কেঁপে ওঠে।” -কেন কেঁপে উঠেছিল বুড়ির বুক?

“এইবার সৌখীর মা ভেঙে পড়ল” -কখন এবং কেন সে ভেঙে পড়ল?

জেল থেকে ফিরে আসার দিন রাত্রে ছেলে সৌখীর সঙ্গে তার মায়ের যে কথােপকথন হয়েছিল, তা ডাকাতের মা ছােটোগল্পে অবলম্বনে লেখাে।

‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।

“কিন্তু আজ যে ব্যাপার অন্য।”—কোন্ দিনটার কথা বলা হয়েছে? সেদিনের অন্য ব্যাপারটির পরিচয় দাও।

“..ছেলের নামে কলঙ্ক এনেছে সে।” -কে ছেলের নামে কলঙ্ক এনেছে? কলঙ্ক শব্দটি ব্যবহারের কারণ কী?

ডাকাতের মা ছােটোগল্পটির শিল্পসার্থকতা আলােচনা করাে।

সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার প্রবন্ধটিতে বিবেকানন্দের রচনা-বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।

সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনায় বিবেকানন্দের ভাষাশৈলীর পরিচয় দাও।

হাস্যরসাত্মক রচনা হিসেবে ‘সুয়েজখালে : হাঙ্গার শিকার কতখানি সার্থক?

স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।

সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনা অবলম্বনে বাঘা নামের প্রথম হাঙরটির বর্ণনা দিয়ে জানাও যে কীভাবে তাকে শিকারের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল?

থ্যাবড়া নামের হাঙরটিকে কীভাবে শিকার করা হয়েছিল তার বিস্তৃত বিবরণ দাও।

সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনায় লেখক যে বনিটো মাছের কথা উল্লেখ করেছেন, রচনা অনুসরণে তার বিস্তৃত বিবরণ দাও।

সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনায় হাঙরের পাশে থাকা ছােটো মাছ ও হাঙর-চোষক মাছের বিস্তৃত বিবরণ দাও।

“আমাদের কিন্তু দশদিন হয়ে গেছে—ফাঁড়া কেটে গেছে।” -মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।

“সেকেন্ড কেলাসের লােকগুলির বড়ােই উৎসাহ।” হাঙর শিকার প্রবন্ধটি অবলম্বনে এই উৎসাহের পরিচয় দিয়ে এদের চরিত্রের যে যে দিকগুলি রচনাটিতে প্রকাশ পেয়েছে তার বিবরণ দাও।

“রক্ত-মাখা গায়-কাপড়ে ফৌজি যাত্রী কড়িকাঠ উঠিয়ে দুম দুম দিতে লাগলাে হাঙ্গরের মাথায়” -উদ্ধৃত অংশটির মধ্য দিয়ে ফৌজি চরিত্রের কোন দিক প্রতিফলিত হয়েছে? এর পরবর্তী অংশের বর্ণনা ও প্রতিক্রিয়া আলােচ্য পাঠ্যাংশে যেভাবে ফুটে উঠেছে তা লেখাে।

“কিন্তু যখন ওসব কিছুই হল না” -এখানে কী না হওয়ার কথা বলা হয়েছে তা সপ্রসঙ্গ আলােচনা করাে।

“কী ধপাৎ করেই জাহাজের উপর পড়ল।” -এরপর কী হল?

সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনাটিতে হাঙরটিকে জাহাজের উপরে তােলার দৃশ্যটি বর্ণনা করাে।

“আগে যান ভগীরথ শঙ্খ বাজাইয়ে, পাছু পাছু যান গঙ্গা…” -মন্তব্যটির পৌরাণিক প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কাহিনিতে এর উল্লেখের প্রাসঙ্গিকতা বিচার করাে।

“জাহাজে খালাসী বেচারাদের আপদ আর কি!” প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জাহাজের খালাসীদের বেচারা বলার কারণ লেখাে।