প্রশ্নঃ স্বজ্ঞাবাদ বলতে কি বুঝ?

ভূমিকাঃ দর্শনের ইতিহাসে স্বজ্ঞাবাদের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশিষ্ট আইনবিদ জর্জ বিশপ বাৰ্টলার বলেন স্বজ্ঞাবাদের গুরুত্ব অনেক। নৈতিকতা বিচারের মানদণ্ড হিসেবে স্বজ্ঞাবাদ সুখবাদ ও বিচারপদের গুরুত্ব বহুলাংশে হ্রাস করেছে। স্বজ্ঞাবাদকে ব্যতিক্রমধারা মতবাদও বলা হয়।

স্বজ্ঞাবাদের সংজ্ঞাঃ সাধারণত কোনাে বিচার বুদ্ধি বা চিন্তা ভাবনা না করে কোনাে কাজের ফলাফলকে সরাসরি নির্ণয় করাকে স্বজ্ঞাবাদ বলা হয়। স্বজ্ঞা হলাে কোনাে বস্তু সম্পর্কে নিশ্চিত প্রত্যক্ষ বা অনুভূতি। এখানে কোনাে বিচার বুদ্ধির সাহায্য নেওয়া হয় না।

প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ স্বজ্ঞাবাদ সম্পর্কে বিভিন্ন দার্শনিক বিভিন্ন মতবাদ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকটি সংজ্ঞা প্রণিধানযােগ্য। যেমন-

উইলিয়াম লিলির মতে, কোনাে প্রকার বিচারবুদ্ধি ছাড়া কোনাে বিষয় সম্পর্কে সরাসরি উপলব্ধি করার ক্ষমতাকে স্বজ্ঞা বলা হয়। স্বজ্ঞাবাদ হলাে এমন একটি মতবাদ যেটি মনে করে যে, কোনাে কাজের ভালােত্ব-মন্দত্ব জানার একমাত্র উপায় হলাে স্বজ্ঞাবাদ।

পল এডওয়ার্ডস তার “Encyclopedia of philosophy” গ্রন্থে বলেছেন, “স্বজ্ঞাকে তাৎক্ষণিক উপলব্ধি বলে উল্লেখ করা যায়।”

হেনরি বার্গসাে স্বজ্ঞা সম্পর্কে বলেন, “স্বজ্ঞাবাদ এমন একটি মতবাদ যে মতবাদ মনে করে যে, ব্যক্তি স্বজ্ঞার মাধ্যমে জ্ঞেয় বস্তুকে নিজের অন্তরে প্রবেশ করিয়ে ঐ বস্তুর গুণের সাথে নিজেকে একাকার করে ফেলে এবং পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান লাভ করে।”

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, দর্শনের ইতিহাসে স্বজ্ঞাবাদ যে একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে এতে কোনাে সন্দেহ নেই। কোনাে বিচারবুদ্ধির সাহায্য ছাড়া কোনাে বিষয় সম্পর্কে পরিমাপ করে থাকে, উপলব্ধি বা অনুভূতি প্রকাশ করে থাকে।