দূরত্ব ও গভীরতা প্রত্যক্ষণের ক্ষেত্রে শারীরিক কারণের পাশাপাশি কিছু মানসিক কারণও কাজ করে। নীচে এই কারপগুলি সম্পর্কে আলােচনা করা হল一
(১) একটির ওপর অন্যটির অবস্থান: শিল্পীরা তাদের দ্বিমাত্রিক চিত্রে দূরত্ব বােঝানাের জন্য কাছের বন্ধুকে সামনে রেখে তার পেছনে দূরের বস্তুকে দেখান। এইভাবে ছবি দেখে আমরা কাছের বন্ধু এবং দূরের বস্তু বুঝতে পারি।
(২) আলাে ও ছায়া: কোনাে বস্তুর যে-অংশে আলাে পড়ে সেই অংশটি প্রত্যক্ষণের ক্ষেত্রে কাছে বলে মনে হয় এবং যেখানে আলাে পড়ে না, অর্থাৎ ছায়ায় ঢাকা অংশকে দূরের বলে মনে হয়।
(৩) সীমারেখার স্পষ্টতা: কোনাে বস্তুর সীমারেখা যদি স্পষ্ট হয়, তাহলে তাকে কাছের বলে মনে হয়। আর যদি বস্তুর সীমারেখা অস্পষ্ট হয়, তাহলে বস্তুটি দূরে আছে বলে মনে হয়।
(৪) সমান্তরাল রেখার আপাত কেন্দ্রাভিমুখিতা: দুটি সমান্তরাল রেখাকে অনেক দূর থেকে প্রত্যক্ষণ করলে মনে হয় রেখা দুটি যেন পরস্পরের দিকে অর্থাৎ কেন্দ্র-অভিমুখে মিশে গেছে। সমান্তরাল রেখার আপাত কেন্দ্রাভিমুখিতা দূরত্বের ধারণা সৃষ্টি করে।
(৫) বস্তুর আকার: অভিজ্ঞতার ফলে আমরা শিখেছি যে, দূরের বস্তুকে ছােটো এবং কাছের বস্তুটিকে বড়াে দেখায়। বস্তুটি কাছে আছে না দূরে আছে তা বোঝা যায় বস্তুর আকার দেখে।
(৬) আংশিক ও পূর্ণ দর্শন: আমাদের অভিজ্ঞতা হল কাছের জিনিস দূরের জিনিসকে আড়াল করে। সুতরাং যে জিনিসটি সম্পূর্ণ দেখা যাচ্ছে সেটি কাছের, আর যেটি আংশিক দেখা যাচ্ছে সেটি দূরের।
(৭) অবস্থানগত পরিবর্তন বা লম্বন: আমাদের মাথাটিকে যদি এক পাশে কাত করি, তাহলে যে-পাশে কাত করা হয় সেই পাশের কাছের জিনিসগুলি মনে হবে বিপরীত দিকে যাচ্ছে, আর দূরের বস্তুগুলি মনে হবে একই দিক যাচ্ছে। এই সমমুখী গতিবােধ এবং বিপরীতমুখী গতিবােধ দূরত্ব প্রত্যক্ষণে সাহায্য করে।
Leave a comment