‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’
উত্তর: জসীমউদ্দীনের (১৯০৩-৭৬) অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকীর্তি ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের পল্লি অঞ্চলের নিম্নবিত্ত মানুষের দ্বন্দ্বমুখর জীবনের বাস্তবচিত্র ফুটে উঠেছে ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কাহিনীকাব্যে। পল্লি অঞ্চলের হিন্দু-মুসলমান সমাজের এক জীবন দলিল এর আলোচ্যবিষয়। মুসলমান চাষির ছেলে সোজন ও পল্লি যুবতী দুলীর প্রেমকাহিনি। তার সাথে সংযুক্ত হয়েছে সামন্ত যুগের জমিদারি প্রথার নিষ্ঠুরতা। নমশূদ্র ও মুসলমানের দাঙ্গা- ঝন ঝন ঝন কাইজার থালা বাজিল। সমাজ সংসারের ঊর্ধ্বে প্রেমকে ঠাঁই দিয়ে অন্ধকার রাতে দুলীকে সঙ্গে করে সোজনের পলায়ন, গড়াই নদীর তীরে বাসা স্থাপন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত। অতঃপর সোজনের মেয়ে অপহরণের দায়ে কারাবরণ, দুলীর অন্য জায়গায় বিয়ে।
স্বর্গীয় সুখের মধ্যে নেমে এল বিষাদময়তা। সোজন জেল থেকে ফিরে এসে বেদের ঝনলি মাথায় নিয়ে দেশে দেশে দুলীকে খোঁজে, শেষে তার সাথে সাক্ষাৎ হয়। দুলীদের বাড়ির অদূরে বিষপান করে সোজন রাতে বাঁশিতে সুর তোলে, দুলীও শেষ পর্যন্ত স্বামী সংসার ত্যাগ করে সোজনের কাছে উপস্থিত হয়ে সোজনের রেখে যাওয়া বিষপান করে। পরবর্তীতে তাদের মিলন হয় মৃত্যুর পরপারে।
সুতরাং বলা যায়, মাটির মানুষের সাথে কবির চিরবন্ধনের কারণে তাদের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনাকে মুখরিত করে তুলেছেন ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কাহিনি কাব্যে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment