বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগে মুসলমানদের নবজাগরণে ইসলামি আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে যাঁরা কাব্য রচনায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন সিরাজগঞ্জের কবি সৈয়দ আবু মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন সিরাজী (১৮৮০-১৯৩১) তাদের মধ্যে অন্যতম। উনিশ শতকের শেষ পর্যায়ে মুসলমানদের জাতীয় জীবনের দুর্দিন দূর করার জন্য ইসলামি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে একদল কবি সাহিত্যিক সাহিত্য সাধনায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। সিরাজীর ভাষায় মুসলমানদের তৎকালীন অবস্থা সম্পর্কে তাদের মনোভাব প্রকাশমান: কিবা ছিলে, কি হইলে যদি বুঝিবারে দাও, অতীত গৌরব পানে মোসলেম। ফিরিয়া চাও।
তাদের কামনা ছিল জাতীয় জীবনের উন্নয়নের ফলে। “সেবিবে সমগ্র বিশ্ব মোসলেম চরণ।” সিরাজী ছিলেন স্বাধীনতার অক্লান্ত সৈনিক, ছিলেন মুসলিম পুনর্জাগরণের কবি। তিনি সাহিত্য রচনার মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে নবজাগরণ আনতে চেয়েছিলেন। তার বৈচিত্র্যপূর্ণ সাহিত্য প্রতিভা সে উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়েছিল। তার সাহিত্যের প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশ ও জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় অনুপ্রাণিত করা। সৈয়দ ইসলাইল হোসেন সিরাজী স্বজাতির জাগরণের জন্য যে বলিষ্ঠ বাণী প্রকাশ করেছিলেন তার পরিচয় পাওয়া যায় ‘অনল প্রবাহ’ (১৮১৯) নামক কাব্যগ্রন্থে। মুসলমানদের তৎকালীন দুরবস্থার যে বেদনা কবির মনে সঞ্চারিত হয়েছিল তারই প্রকাশ ঘটেছে এ কাব্যে।
ফলে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে কবির বিরূপ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। ‘অনল প্রবাহ’ কাব্যে সিরাজী দেশের যুবসমাজকে লক্ষ্য করে আহ্বান জানান:
“আবার উত্থান-লক্ষ্যে
বহাও জগৎ বক্ষে
নব জীবনের খর প্রবাহ-প্লাবন।
আবার জাতীয় কেতু
উড়াও মুক্তির হেতু,
উঠুক গগনে পুনঃ রক্তিম তপন।”
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment