সেনাবাহিনী মাঠে কি কি কাগজ লাগে বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদের মাঠ এর জন্য কোন কোন কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে এবং সেগুলোর মধ্যে কোন কাগজ সত্যায়িত করতে হবে। আজকের আর্টিকেলে আমি এই বিষয়টা ক্লিয়ার করে দেয়ার চেষ্টা করবো। আপনারা জানেন যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদের ২ টি বিভাগ রয়েছে হয়ত বা ৩ টিও হতে পারে, তো ২ টি সম্বন্ধে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। প্রথমটা হচ্ছে ট্রেড -১ এবং পরেরটি ট্রেড -২। ট্রেড – ১ কে আমরা মূলত সৈনিক পদ নামে চিনি। তবে এটা একটা ট্রেড রয়েছে সেটি ট্রেড -২।

আজকে আমরা শুধু ট্রেড – ১ বা ট্রেড – ২ না নিয়ে কথা না বলে, উভয় ট্রেড নিয়েই কথা বলবো। মূলত ২ টির ট্রেডের ক্ষেত্রে একই কাগজপএ নিতে হয় বা একই ধরনের কাগজপত্র মাঠে নিয়ে যেতে হয় এবং সেগুলোর মধ্যে কয়েকটা কাগজপত্র সত্যায়িত করতে হয়। তো এখন আমি এমনিতে বলতে পারতাম কিন্তু অনেকে হয়ত কমেন্ট করে বলতে পারে আমার উত্তরে সত্যতা কোথায়। তাই আজকে আপনাদের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেকোন একটি বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সরাসরি দেখাবো এবং চিএসহ তুলে ধরবো। সেনাবাহিনী মাঠে কি কি কাগজ লাগে ২০২২ সম্পূর্ণ তথ্য বলি দেয়া থাকবে এই আর্টিকেলে।

 

সেনাবাহিনী মাঠে কি কি কাগজ লাগে

সেনাবাহিনী মাঠে যে কাগজ লাগে : শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদপত্র অথবা মার্কশিট, প্রশংসাপত্র অথবা প্রবেশপত্র, অভিভাবকের সম্মতিসূচক সনদপত্র, নাগরিকত্ব ও চারিত্রিক সনদপত্র, নাগরিকত্ব ও চারিত্রিক সনদপত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্র। এগুলো কাগজপএ গুলো আপনার নিয়ে যেতে হবে। এই কাহজপএগুলো বিস্তারিত তথ্য আমি নিচে তুলে ধরেছি।

 

বিজ্ঞপ্তির ২য় নম্বরটি অপশনটি রয়েছে আপনার প্রত্যেকটা বিজ্ঞপ্তির সেনাবাহিনীর সৈনিক পদের প্রতিটা বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে এই টপিকটি পাবেন। ভর্তির সময় সেনাবাহিনী মাঠে কি কি কাগজ লাগে এবং কোনগুলো সত্যায়িত করতে হবে। তো বিজ্ঞপ্তি থেকে দেখে নিলে কোন সন্দেহ থাকছে না কোনো ভয় থাকছেনা, বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যদি আপনি মাঠে যান তাহলে আপনাকে বাদ দিতে পারবে না। তাই আমি সম্পূর্ণ বিজ্ঞপ্তির কথাগুলো বিস্তারিতে ভাবে তুলে ধরার চেস্টা করছি। প্রথমে যেটা আপনাকে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে সেটা হচ্ছে :

শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদপত্র অথবা মার্কশিট

আপনি যদি মূল কপি প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনাকে সত্যায়িত ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে। অর্থাৎ ফটোকপি করতে হবে, সত্যায়িত করতে হবে। এরকম একটি কাগজ আমাদের সবার কাছেই আছে, সেটা হচ্ছে শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদপত্র। এসএসসি পাশে যারা সেনাবাহিনীতে আবেদন করবেন তারা এসএসসি পাশের মূল সনদপত্র টি অথবা মূল মার্কশিট আপনাকে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। যদি সেটা না পারেন তাহলে সেটি ফটোকপি করে প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার দ্বারা সত্যায়িত করে নিতে হবে।

 

প্রশংসাপত্র অথবা প্রবেশপত্র

এরপর সে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক স্থায়ী ঠিকানা, জন্ম তারিখ সম্বলিত মূল প্রশংসাপত্র এবং এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র। আপনি যদি এই প্রশংসাপত্র এবং প্রবেশপত্র সত্যায়িত করে নিয়ে যান তাহলে কিন্তু হবে না। এখানে প্রশংসাপত্র এবং প্রবেশপত্র সত্যায়িত করার কোন অপশন তারা রাখেনি। তাই তারা সরাসরি বলে দিয়েছে যে, প্রবেশপত্র এবং প্রশংসাপত্র দুটি মূল কপি জমা দিতে হবে।

 

অভিভাবকের সম্মতিসূচক সনদপত্র

এই সনদপত্রটি চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে। অর্থাৎ আপনি যে সেনাবাহিনীতে আবেদন করছেন বা সেনাবাহিনীতে চাকরি করতে মাঠে আসছেন, এক্ষেত্রে আপনার অভিভাবকের সম্মতি দিয়েছে কিনা এটা একটা প্রমাণপত্র নিয়ে যেতে হবে। এটা আপনারা যে কোনো কম্পিউটার দোকান থেকে প্রিন্ট আউট করে নিতে হবে। প্রিন্ট আউট করে নেওয়ার পরে, সেটা সঠিকভাবে পূরণ করে একপাশে আপনার পিতা-মাতার স্বাক্ষর থাকবে অন্য পাশে সেটা চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত থাকবে। আপনি যদি পৌর বাসিন্দা হয়ে থাকেন, তাহলে পৌরসভার মেয়র কর্তৃক সত্যায়িত থাকবে।

তো এখন আমরা পেলাম যে কয়টি কাগজ সত্যয়িত করতে হবে। প্রথমটি হচ্ছে, মার্কসিট অথবা হচ্ছে মূল সনদপত্র। এটা প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার দ্বারা সত্যায়িত করতে হবে। আর অভিভাবকের সম্মতিসূচক সনদপত্রটি চেয়ারম্যান কর্তৃক বা পৌরসভার মেয়র কর্তৃক সত্যায়িত করতে হবে।

অভিভাবকের সম্মতিসূচক সনদপত্র ছবি

 

নাগরিকত্ব ও চারিত্রিক সনদপত্র 

সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান কর্তৃক জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চারিত্রিক সনদপত্র। আমরা যেটাকে পরিচয়পত্র বলি সেটার কথা এখানে বলা হয়েছে। নাগরিকত্ব ও চারিত্রিক সনদপত্র এইটা আপনাকে চেয়ারম্যান অথবা মেয়র কতৃক, তাদের কাছে যোগাযোগ করলেই পেয়ে যাবেন।

নাগরিকত্ব ও চারিত্রিক সনদপত্র ছবি

 

জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্র

জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে। জন্মনিবন্ধনের সনদপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি যাদের কাছে দুইটা আছে তারা দুটোই নিয়ে যাবেন। জন্মনিবন্ধনের সনদ পত্রের একটা ফটোকপি করে সত্যায়িত নিয়ে যাবেন আর জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি নিয়ে যাবেন। এখন যাদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাদের চিন্তা করার কোন কারণ নেই। আপনার যদি জাতীয় পরিচয়পএ না থাকে তাহলে শুধুমাত্র জন্মনিবন্ধনের সনদপত্রটি সত্যায়িত ফটোকপি করে নিয়ে যাবেন। এর সাথে আপনার মূল সনদপত্র টিও নিয়ে যাবেন কেননা ফটোকপির পাশে পাশে আপনাদের কাছে মূল কপিও নিয়ে যেতে হবে।

 

পিতা ও মাতা এর জাতীয় পরিচয় পত্র

পিতা ও মাতা এর জাতীয় পরিচয় পত্র স্মার্ট কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে। এই পিতা ও মাতার এনআইডি নিয়ে অনেকে ভুল করেন যে, আপনারা ফটোকপির ঠিকই নিয়ে যান মূল কপির পাশাপাশি। কিন্তু সত্যায়িত করেন না।

তো এটা কিন্তু সত্যায়িত করতে হবে। তারা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে দিয়েছে যে – পিতা ও মাতা উভয়েই জাতীয় পরিচয় পত্রের অথবা স্মার্ট যেটা রয়েছে এটা সত্যায়িত ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে। তাই মূল কপির পাশাপাশি আপনারা সকলেই সত্যায়িত ফটোকপি নিয়ে যাবেন।

 

ছবি

সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ৬ কপি ছবি নিতে হবে এবং স্ট্যাম্প সাইজের ২ কপি নিতে হবে। পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ৬ কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত করতে হবে। স্ট্যাম্প সাইজের ছবি মূলত সত্যায়িত হয়না, তাই পাসপোর্ট সাইজের ছবি গুলো প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার দ্বারা সত্যায়িত করে নিতে হবে।

এখন কাগজপত্রে ক্ষেত্রে অন্য কোনো কাগজপত্র নেই। যারা বিভিন্ন কোটাধারী প্রার্থী রয়েছেন। যেমন : মুক্তিযোদ্ধা বা উপজাতি। শুধু তারা আপনাদের যে প্রমাণ করেছে যে আপনি আসলেই এই কোটার উপযোগী, এটা প্রমাণ হিসেবে একটি ডকুমেন্টস আপনাকে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। আমি আশা করি এটা আপনার কাছে রয়েছে।

এই কাগজগুলোর মূলত সেনাবাহিনী মাঠে নিয়ে যেতে হয় এবং এগুলোর মধ্যে মূলত ৪ থেকে ৫ টি কাগজ সত্যয়িত করতে হয়।

 

কি কি সমস্যা থাকলে সেনাবাহিনীর চাকরি হয় না

আপনি যদি সেনাবাহিনীর মাঠে কি কি কারণে চাকরি হয় না এটির সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই – কি কি সমস্যা থাকলে সেনাবাহিনীর চাকরি হয় না আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। এছাড়াও সেনাবাহিনীর মাঠে কি কি হয় এই সম্পর্কে জানতে চাইলেও এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।

 

কোন কাগজপএ গুলো সত্যায়িত করতে হবে

যে কাগজপএ গুলো আপনারা সত্যয়িত করবেন সেগুলো আমি বলে দিচ্ছি।

শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ফটোকপি হলে সত্যায়িত করে নিতে হবে, অভিভাবকের সম্মতিসূচক সনদপত্র – যেটা চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে, জন্ম নিবন্ধন এবং আইডি কার্ড – এটা হচ্ছে প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার কারা সত্যায়িত হতে হবে, পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র এটাও প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার কারা সত্যায়িত হতে হবে। সর্বশেষে সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ৬ কপি রঙ্গিন ছবি। এই ছবি গুলো প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড দ্বারা সত্যায়িত হতে হবে।

আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন, যে কোন কাগজ গুলো সত্যয়িত করতে হবে এবং সেনাবাহিনী মাঠে কি কি কাগজ লাগে ।

 

প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার কোথায় পাবেন

প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার কোথায় পাবেন : আপনার যে উপজেলা পরিষদ রয়েছে, প্রত্যেকটি উপজেলা অফিসেই প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসারা প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা থাকে। তাছাড়া আপনাকে উপজেলা সদর হসপিটাল রয়েছে – উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, এখানেও একজন সরকারি ডাক্তার আপনি পেয়ে যাবেন। তো সেখান থেকে আপনি চাইলে সত্যায়িত করে নিতে পারবেন। সেনাবাহিনী মাঠে কি কি কাগজ লাগে।

তো আশা করছি এ ব্যাপারে আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকবে না যে কোন গুলো সত্যায়িত করতে হবে। সৈনিক ট্রেড – ১ বা ট্রেড – ২ উভয়ের ক্ষেত্রেই একই কাগজপত্র নিয়ে যেতে হয়। ভিন্ন কোনো কাগজপত্র নেই। এগুলো সব সত্যয়িত করলেই হবে। আর যে পথে আপনি আবেদন করছেন সে পদে যদি আপনার আলাদা অভিজ্ঞতা থাকে সে অভিজ্ঞতা সনদ অবশ্যই আপনি সাথে করে নিয়ে যাবেন। পরবর্তীতে সেটা আপনার কাজে আসতে পারে।

 

তো এই ছিলো – সেনাবাহিনী মাঠে কি কি কাগজ লাগে আর্টিকেল। পরবর্তী আর্টিকেল আসার পযর্ন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আর এরকম চাকরি রিলেটেড খবরা খবর পেতে চাইলে আমাদের সাইট প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। আল্লাহ হাফেজ।