তাৎপর্য: কথামুখ: সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতা নগরজীবনের ধুসর পটভূমিতে শান্তির নিশ্চিত আশ্রয়-সন্ধানের কথাই তুলে ধরেছে।

প্রকৃতির অসামান্য প্রকাশ : এই নগরজীবনের চারপাশেও সূর্য অস্ত যাওয়ার সময়ে প্রকৃতির অসামান্য প্রকাশ ঘটে। সন্ধ্যার জলস্রোতে তখন অলস সূর্য এঁকে দেয় গলিত সােনার মত উজ্জ্বল আলাের স্তম্ভ। জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায় অস্তগামী সূর্যের মৃদু আলাে যেন আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে যায়।

সৌন্দর্যের স্থায়িত্ব : কিন্তু নগরজীবনের ধূসর পরিবেশে এই সৌন্দর্য চিরস্থায়ী হয় না, অত্যন্ত ক্ষণিকের এই মায়াময় পরিবেশের পরেই সেখানে ঘুরে-ফিরে আসে বিষাক্ত ধোঁয়ার আবরণ। কবির কাছে তা শীতের দুঃস্বপ্নের মতাে। এই নগরজীবনের ভয়াবহতা থেকে কবি মুক্তি চান।

মুক্তির সন্ধান : এই মুক্তির সন্ধানেই কবি তাঁর চেতনার মধ্যে মহুয়ার দেশকে খোঁজেন। তিনি প্রার্থনা করেন আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া-ফুল। কিন্তু এই প্রার্থনা তার জীবনের বাস্তবতাকে পালটায় না। সর্বগ্রাসী যন্ত্রসভ্যতা মহুয়ার দেশেও প্রভাব ফেলে। শিশিরভেজা সকালে মানুষের শরীরে লেগে থাকে ধুলাের কলঙ্ক। ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন ঘিরে থাকে তাদের।

শেষের কথা : এভাবেই কবি ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় নাগরিক জীবনের বিবর্ণতা আর হতাশার ছবি তুলে ধরেছেন। কল্পনাবিলাস আর স্বপ্নময়তা এভাবেই রুক্ষ বাস্তবের আঘাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।