ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত ভদ্রলােক: সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের ‘কলের কলকাতা’ রচনায় দেখা যায় যে, স্বাধীনতা আন্দোলনের উদ্দাম সময়ে মেডিকেল কলেজে প্রতি মিনিটেই এক-একজন করে গুলিবিদ্ধ মানুষ ভরতি হচ্ছিল। একদিন ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত এক ভদ্রলােক নিজেই হেঁটে এসে ইমার্জেন্সিতে ঢুকতে গেলে স্বেচ্ছাসেবকরা ভিড় বাড়াতে নিষেধ করে। নাছােড়াবান্দা ভদ্রলােককে স্বেচ্ছাসেবক ছেলেটি তার প্রয়ােজন জিজ্ঞাসা করলে তিনি শান্তভাবে জানান যে, তার গুলি লেগেছে। ছেলেটি গুলি দেখতে চাইলে দেখা যায় যে, ভদ্রলােকের পিঠে কড়ে আঙুলের সমান ক্ষত থেকে রক্তে জামাকাপড় ভেসে যাচ্ছে। তড়িঘড়ি তাকে খাটে শুইয়ে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়। গুলিটি বুকের বদলে পিঠে লাগায় আত্মসম্মানে লেগেছিল তার পাছে কেউ ভাবে তিনি ভয়ে পালাচ্ছিলেন। যদিও গুলি খেয়ে তিনি আদৌ ভীত হয়ে পড়েননি।

কদম রসুল : রাজাবাজার বস্তির বাসিন্দা কদম রসুল ছিল গ্যাস কোম্পানির ইউনিয়নের এক বড় নেতা। মালিকের চোখরাঙানােকে কখনও গ্রাহ্য করেনি সে। এই উদার মনের মানুষটিকে বস্তির সবাই অত্যন্ত ভালােবাসত। তাই স্বাধীনতা আন্দোলনে তার মৃত্যু হলে বস্তির গরিব মানুষগুলো মিটিং করে ঠিক করে যে, সবাই সাধ্যমতাে দু-চার পয়সা চাঁদা দিয়ে কদমের অসহায় ছেলেমেয়েদের রক্ষা করবে।