প্রশ্নঃ সুখবাদের কুটাভাস কি?

ভূমিকাঃ নীতিবিদ্যা সমাজে বসবাসকারী মানুষের ভালােত্ব-মন্দত্ব, ন্যায়ত্ব ও অন্যায়ত্ব নিয়ে আলােচনা করে। নৈতিক আদর্শের মাপকাঠি হিসেবে সুখবাদের গুরুত্ব অপরিসীম। সুখবাদের দু’টি শ্রেণি পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। যেমন- (১) মনস্তাত্ত্বিক সুখবাদ ও (২) নৈতিক সুখবাদ। এই মনস্তাত্ত্বিক সুখবাদকে সমালােচনা করতে যেয়ে দার্শনিক সিজউইক সুখবাদের কুটাভাসের কথা উল্লেখ করেছেন।

সুখবাদের কুটাভাসঃ সুখবাদের কুটাভাসের প্রবক্তা হলেন দার্শনিক জেনাে। ‘কুটাভাস’ হলাে এমন একটি জিনিস, যা আপাতদৃষ্টিতে আমাদের কাছে অসত্য মনে হলেও বিষয়টি আসলেই সত্য। অনেক সময় সুখবাদের ক্ষেত্রে স্ববিরােধী প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়, আসলে ব্যাপারটি মােটেও স্ববিরােধী বা অসংগত নয়। এটা হলাে কুটাভাসের মূলকথা। সুখের পিছনে ছুটতে হলে আমাদের কিছু হারাতে হয়। সুখকে কামনার একমাত্র উপায় হলাে সুখকে ভুলে থাকা। আমরা যতই সুখের আকাক্ষা করি না কেন ততই আমরা কম সুখ পাই। আমরা যতই সুখের কথা ভুলে থাকি ততই আমরা সুখের সন্ধান পেতে পারি।

সুখবাদের কুটাভাসের মূল কথা হলাে আমরা যদি আমাদের সুখকে বস্তুগত দিকে চালিত করতে পারি তাহলে সুখ ধরা দিতে বাধ্য। পক্ষান্তরে আমরা যদি নিয়তই সুখের সন্ধান করি, ততই আমরা সুখ থেকে পেছনে ধাবিত হতে থাকি।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, আমরা আমাদের সুখকে বস্তুগত দিকের দিকে চালিত করতে পারি তাহলে এক সময় না একসময় সুখ ধরা দিকে বাধ্য। সুতরাং নীতিবিদ্যায় সুখবাদের কুটাভাসের গুরুত্ব অপরিসীম।