প্রশ্নঃ সুখবাদকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়? ব্যাখ্যা কর।
ভূমিকাঃ সুখবাদের লক্ষ্য হলাে পরম কল্যাণ সাধন। সুখই একমাত্র কাম্য বস্তু এবং সর্বোচ্চ লক্ষ্য। মানুষ সর্বদাই সুখ কামনা করে এবং দুঃখকে পরিহার করে। যে কাজ যতবেশি সুখ দিতে পারে, সে কাজ ততাে ভালাে এবং যে কাজ দুঃখ দেয়, সে কাজ মন্দ বলে বিবেচিত হয়।
সুখবাদের প্রকারভেদঃ সুখবাদ বিশ্বজগৎ সম্পর্কীয় জড়বাদী, যান্ত্রিক, প্রকৃতিক ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক ধারণার সাথে জড়িত। সুখবাদের রূপসমূহ নিচে বর্ণনা করা হলাে-
১. নীতিবিদ্যা সংক্রান্ত সুখবাদঃ যে নৈতিক আদর্শ মনে করে যে, সমস্ত মানুষের সুখ অনুসন্ধান এবং দুঃখকে বর্জন করা উচিত তাকে নীতিবিদ্যা সম্পর্কীয় সুখবাদ বলা হয়। আবার নীতিবিদ্যা সংক্রান্ত সুখবাদকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
(i) আত্মসুখবাদঃ এ মতবাদ মনে করে যে, ব্যক্তি সুখই পরম কল্যাণ। অনেক সময় মানুষকে পরের জন্য কাজ করতে দেখা যায়। এই কাজ করার মাঝেও ব্যক্তি সুখই লুকায়িত থাকে। এই আত্মসুখবাদের আবার দুটি রূপ রয়েছে। যথা- স্থুল আত্মসুখবাদ ও সূক্ষ্ম আত্মসুখবাদ।
(ii) পরসুখবাদঃ যে নৈতিক আদর্শ সম্পকীয় মতবাদ মনে করে যে, নিজের সুখ নয়, সমাজে বসবাসকারী মানুষের পরম কল্যাণার্থে নিজেকে নিয়ােজিত করা উচিত। পরের কল্যাণে নিজের স্বার্থকে বিসর্জন দেওয়া পরম কল্যাণ। এ সুখবাদকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (১) স্কুল পরসুখবাদ, (২) সংযত পরসুখবাদ ও (৩) বিবর্তনবাদ সম্মত পরসুখবাদ।
২. মনােবিজ্ঞানসম্মত সুখবাদঃ যে মতবাদ মনে করে যে, সুখই মানুষের একমাত্র কাম্যবস্তু, মানুষ সর্বদাই সুখ কামনা করে, মানুষের সকল কাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে অধিক সুখ লাভ করা তাকে মনােবিজ্ঞানসম্মত সুখবাদ বলা হয়।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সুখবাদ নৈতিকতার মানদণ্ড হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ মতবাদ। মানুষের সমস্ত কাজের পেছনে একটি উদ্দেশ্য লুকিয়ে থাকে, সেটি হলাে সর্বোচ্চ সুখ লাভ করা। অনেক সময় সুখবাদকে একটি স্থুল নৈতিক আদর্শ হিসেবে গণ্য করা হয়।
Leave a comment