প্রশ্নঃ সিডও সনদ কী?

অথবা, সিডও সনদ বলতে কী বুঝ?

ভূমিকাঃ ১৯৭৯ সালের ১৮ই ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয় নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরণ বিষয়ক সনদ বা কনভেনশন। ইংরেজীতে একে বলা হয় ‘Convention on the Elimination of All Farms of Discrimination Against Women’ বা সংক্ষেপে CEDAW (সিডও) বলে, যা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সিডও নামের সনদ বা কন ভেনসান গৃহীত হওয়ার মধ্য দিয়ে নারীর জন্য সমান অধিকারের লক্ষ্য অর্জনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

সিডাে সনদঃ বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ নারী জাতির মর্যাদা বিষয়ক কমিশন এবং সাধারণ পরিষদের মধ্যে ৫ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে আলােচনা ও পর্যালােচনার সফল পরিণতিতে এই সনদ গৃহীত হয়। সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতার ভিত্তিতে বিবাহিত, অবিবাহিত নির্বিশেষে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক নাগরিক ইত্যাদি সকল বিষয়ে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সেই সাথে জাতীয় পর্যায়ে আইন প্রণয়ন করে বৈষম্যমূলক আচরণের অবসাণের জন্য সনদে আহ্বান জানানাে হয়েছে। ১৯৮০ সালের ১মার্চ সনদে স্বাক্ষর শুরু হয় এবং এটি ১৯৮১ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়। ইতিমধ্যে ১৫০ টির অধিক দেশ এই কনভেনশন অনুমােদন করে স্বাক্ষর দান করেছে। বাংলাদেশ এই দলিল অনুমােদন করে স্বাক্ষর দান করেছেন ১৯৮৪ সালের ৬ই নভেম্বর।

সিডও সনদঃ নারী অধিকার ও সিডও দলিলের মূল মর্মবাণী হলােঃ সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশে যুগ যুগ ধরে নারী যে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করে আসছে সেই ভূমিকার যথাযথ স্বীকৃতি এবং সার্বিকভাবে গােটা বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নের জন্য প্রয়ােজনীয় সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা স্থাপন করার জন্য আইন প্রণয়ন, প্রচলিত আইনের সংস্কার, আইন প্রয়ােগের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি ইত্যাদি যা কিছু প্রয়ােজন সনদে শরীক রাষ্ট্রগুলাে তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, একটি দেশের পূর্ণাঙ্গ উন্নয়ন, বিশ্বের কল্যাণ এবং সার্বিক শান্তির জন্য প্রয়ােজন সকল ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে সমান শর্তে নারীর সর্বাধিক অংশগ্রহণ। কেবল সিডও সনদেই নারীর বৈষম্য দূর করে সম অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়েছে।