অসংখ্য মানুষের জমায়েত: সারা কলকাতা যখন ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলেন উত্তাল, তখন ‘কলের কলকাতা’ রচনার লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায় একদিন কার্জন পার্কে গিয়ে দেখেন সেখানে মারমুখী জনগণের ভয়ে ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে গােখা ও গােরা সৈন্যদল। ধর্মতলার ট্রামডিপাের কাছে পৌঁছে যুদ্ধংদেহি জনগণ বিলিতি হােটেল এবং দোকানের মােটা কাচ ইট ছুড়ে ভেঙে দেয়।
প্রতিবাদী মানুষের মিছিল : ধর্মতলার চৌমাথা থেকে দক্ষিণমুখখা একটা মিছিল এগিয়ে আসে। লাল, সবুজ এবং তিনরঙা পতাকা গিট দিয়ে বাঁধা সে মিছিলে। হঠাৎই তিনটি মিলিটারি ট্রাক থেকে নেমে পড়ে সৈন্যরা মিছিলের দিকে তাক করে রাইফেল উঁচিয়ে এক পা না এগোনোর হুংকার দেয়। কিছুক্ষণ স্থির এবং নীরব থাকার পর জয়হিন্দ আওয়াজ তুলে টানটান বুকে সামনের দিকে এগিয়ে চলে মিছিল। অনুমতি থাকলেও সংঘবদ্ধ জনতার ভয়ে ইংরেজের মিলিটারি তখন গুলি না চালিয়ে রাস্তার দু-পাশে সরে দাঁড়ায়।
সাহসী বালকের প্রতিবাদ : কার্জন পার্কে অবশ্য মাঝেমধ্যেই গুলিবর্ষণ চলত। একদিন একটি বাচ্চা ছেলে মশাল হাতে রাস্তা পার হয়ে সাহেবদের এক হােটেলের পিলার বেয়ে উঠে পড়ে। তারপর হাতের জ্বলন্ত মশালটা সে হােটেলের ভেতর ছুড়ে ফেলে। হােটেলটি দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। ভেতর থেকে সাহেবদের ভয়ার্ত চিৎকার শােনা যায়। পাইপ বেয়ে নেমে ছেলেটি চৌমাথায় পৌঁছে এক ফলওয়ালার দেওয়া একটি কমলালেবু ছাড়াচ্ছিল। হঠাৎই একটা গুলি তার গায়ে এসে লাগে এবং সে মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে যায়।
Leave a comment