অথবা, মূল্যবােধের সংজ্ঞা দাও।
ভূমিকাঃ সভ্যতার অগ্রযাত্রায় প্রতিটি সমাজ, ধর্ম, জাতির কতকগুলাে বিধি বা নিয়মের অধীনে চলতে হয়। যেখানে মূল্যবােধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে সমাজে মূল্যবােধ পরিমাপের কোনাে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড নেই। বিষয় ভেদে মূল্যবােধ ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় প্রকার হতে পারে। তবে যে আঙ্গিকেই বিচার করা হােক না কেন এটিকে সমাজের অলিখিত সামাজিক সংবিধান হিসেবে গণ্য করা হয়।
সামাজিক মূল্যবােধ/মূল্যবােধের সংজ্ঞাঃ সামাজিক মূল্যবােধ বা মূল্যবােধ বলতে এমন এক বিশ্বাসবােধ ও মানদণ্ডকে বুঝায়, যার মাধ্যমে সমাজের অন্তর্নিহিত কোনাে ঘটনা বা অবস্থার ভাল-মন্দ বিচার করা হয়। অর্থাৎ মূল্যবােধ হলাে কোনাে সমাজের মানুষের ইচ্ছা ও বিশ্বাসবােধের একটি মানদণ্ড। যার মাধ্যমে মানুষের আচার ব্যবহার, রীতিনীতি, কার্যক্রম ইত্যাদি পরিচালিত হয়। মূলত; মূল্যবােধের মাধ্যমে মানুষের বিচার শক্তি তথা কোনাে বিষয়কে মূল্যায়ণের স্বরূপ প্রকাশ পায়।
প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ মূল্যবােধ সমাজের নানাবিধ বিষয়কে বিচারের অনন্য পন্থা। যেটিকে বিভিন্ন জন বিভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরতে সচেষ্ট হন।
অধ্যাপক ডেভিড পােপেনাে (prof David popenoe) বলেন, ভালাে-মন্দ, ঠিক-বেঠিক, কাক্ষিত-অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় সম্পর্কে সমাজের সদস্যদের যে ধারণা তার নাম মূল্যবােধ।
মনীষী এম. স্পেন্সার (M. Spencer) এর মতে, মূল্যবােধ হলাে একটি মানদণ্ড, যা আচরণের ভালাে মন্দ বিচারের এবং সম্ভাব্য বিভিন্ন লক্ষ্য থেকে কোনাে একটি পছন্দ করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।”
সমাজবিজ্ঞানী এম. ডব্লিউ পামফে (M. W. Pumphray) বলেন, মূল্যবােধকে ব্যক্তি বা দলের অভিপ্রেত ব্যবহারের সুবিন্যস্ত প্রকাশ বলে অভিহিত করেছেন।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজে বসবাস করতে যেয়ে মানুষ নানা ধরনের বিষয়গুলােকে বিবেচনায় আনে। যেখানে ভালাে-মন্দ, সত্য-মিথ্যা, উচিত- অনুচিত, হিংসা-বিদ্বেষ, লােভ-লালসা, সম্মান-অসম্মান ইত্যাদি বিষয়কে মূল্যায়ন করে। আর এগুলাের সমন্বিত রূপই হলাে মূল্যবােধ।
Leave a comment