সামাজিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সমাজদর্শনে ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হয়ে থাকে। সমাজদর্শনে সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলতে বুঝায় মানবসমাজের সমিতি বা সংগঠনসমূহ যেসব উপায়ে ও পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের স্ব-স্ব উদ্দেশ্য সাধন করে সেসব পন্থাগুলোই হলো সংশ্লিষ্ট সংগঠনসমূহের অন্তর্গত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
সামাজিক প্রতিষ্ঠান : সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলতে সমাজস্থ মানুষের মধ্যে প্রচলিত এমন চিন্তাচেতনাকে বুঝায় যার দ্বারা একে অপরের সাথে সম্পর্ক ও কাজকর্ম নির্ধারিত হয়ে সমাজব্যবস্থা টিকে থাকে। অন্যভাবে বলা যায়, যে সংস্থার মাধ্যমে সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠে এবং এর কার্যক্রম পরিচালিত হয় তাকে সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলে। পরিবার, ধর্ম, বিবাহ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন মনীষী সামাজিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন :
সমাজবিজ্ঞানী সামনার ও কেলার (Sumner and Keller) এর মতে, “সামাজিক প্রতিষ্ঠান হলো এমন একটি সক্রিয় ব্যবস্থা যা সামাজিক লোকরীতি ও লোকাচার কেন্দ্র করে গড়ে উঠে।” সমাজবিজ্ঞানী রস (Ross) এর মতে, “সামাজিক প্রতিষ্ঠান হলো সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখার উপায় মাত্র।” মরিস জিন্সবার্গ (Morris Ginsburg) তাঁর ‘Psychology of Sociology’ নামক গ্রন্থে বলেন, “Social
Institution is definite and sanctioned forms or modes of relationship between social beings in respect to one another or go some extent object.”
এইচ. ই. বার্নস (H. E. Barnes) এর মতে, “সামাজিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এমন কিছু সামাজিক কাঠামো ও যন্ত্র, যার মাধ্যমে সমাজের মানুষের প্রয়োজন মিটানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ ও সংগঠন পরিচালনা করা হয়।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞার আলোকে বলা যায় যে, সামাজিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সেসব প্রচলিত কর্মপদ্ধতি, যার মাধ্যমে গোষ্ঠীর কার্যকলাপ সূচিত হয়।