অথবা, সামাজিক ঐক্য ও সংস্কৃতি সৃষ্টিতে নেতৃত্বের ভূমিকা তুলে ধর।
ভূমিকাঃ শুধুমাত্র নেতৃত্বের গুণে একটি জাতি উন্নতির উচ্চতর শিখরে আরােহণ করতে পারে। আবার অযােগ্য নেতৃত্বের ফলে জাতীয় জীবনে নেমে আসে সীমাহীন অভিশাপ। নেতৃত্বের গুণে আজ বাংলাদেশ সার্বভৌম এক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে ত্রুটিপূর্ণ নেতৃত্বের জন্য পাকিস্তান আজ খণ্ড ছিন্ন।
সামাজিক ঐক্য ও সংহতি সৃষ্টিতে নেতৃত্বের ভূমিকাঃ নিম্নে এগুলাে সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করা হলাে-
(১) গােষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয়সাধন করাঃ যেকোনাে গােষ্ঠীর নেতাকে গােষ্ঠীর ক্রিয়াকলাপের মধ্যে সমন্বয়সাধন করতে হয়। নেতাকে গােষ্ঠীর বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপের সঙ্গে সংযােগ রক্ষা করতে হয় এবং দেখতে হয় যাতে কোনাে অপচয় না হয়, কাজের অযথা পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
(২) যেকোনাে গােষ্ঠীর পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করাঃ যেহেতু কোনাে গােষ্ঠীর সকল সদস্যদের পক্ষে গােষ্ঠী বহির্ভূত অন্য সদস্যদের সঙ্গে মুখােমুখি মিলিত হওয়া সম্ভব নয়, সেহেতু নেতাকেই গােষ্ঠীবহির্ভূত সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে প্রতিনিধিত্ব করতে হয়।
(৩) কার্যকরী নীতিনির্ধারণ করাঃ নীতিনির্ধারণের মাধ্যমেই গােষ্ঠী তার লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যকে লাভ করতে পারে। এই লক্ষ্য সুনির্দিস্ট পদ্ধতিতে নির্ধারিত হতে পারে, কোন বাইরের কর্তৃপক্ষ, অথবা গােষ্ঠীর নেতা নিজেই এই লক্ষ্যে নির্ধারণ করতে পারেন, যখন তিনি মনে করেন যেকোনাে বিশেষ কার্যধারা গােষ্ঠীর লক্ষ্য সাধনের পক্ষে উপযােগী।
(৪) অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করাঃ নেতার অন্যতম কাজ গােষ্ঠীর অভ্যন্তরস্থ সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করা। অন্যান্য সদস্যদের তুলনায় গােষ্ঠীর গঠনের খুঁটিনাটি বিষয় সবকিছু নেতাকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এবং তার সেই কাজ গােষ্ঠির অভ্যন্তরীণ সম্পর্কের প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে।
(৫) অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাঃ গােষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নেতাকে গােষ্ঠীর সদস্যদের পুরস্কার ও দণ্ডদান করতে হয়। অনেক সময় এই পুরস্কার এবং শাস্তি কোনাে বাহ্য বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সব দেশে সামাজিক ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। যদিও বিশেষ পরিস্থিতি ও নৈতিকতার কারণে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
Leave a comment