স্পিয়ারম্যান শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার উপর সমীকরণের জটিল পরিসংখ্যানগত কৌশল বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, জিনগতভাবে যে ক্ষমতা নিয়ে শিশু জন্মগ্রহণ করে তাকে সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বলে।

এই মানসিক উপাদানের সহায়তায় মানুষ বিভিন্ন রকমের বৌদ্ধিক কাজকর্ম করে। এই মানসিক ক্ষমতা পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে সংগতিবিধান করে চলে। এই মানসিক ক্ষমতা সমস্তরকম বৌদ্ধিক কাজের ক্ষেত্রে সর্বজনীনভাবে বর্তমান বলে স্পিয়ারম্যান এর নাম দিয়েছেন G উপাদান, যা General factor।

সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বৈশিষ্ট্য

(1) জন্মগত: সাধারণ ক্ষমতা হল জন্মগত বা সহজাত। ব্যক্তি জন্মগতভাবেই এই ক্ষমতার অধিকারী হয়।

(2) সর্বজনীন : প্রতিটি মানুষ সাধারণ মানসিক ক্ষমতা নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়। পৃথিবীর মাটিতে এসে এর আর বৃদ্ধি ঘটানাে যায় না। সকল মানুষের মধ্যে বিদ্যমান সর্বজনীন এই ক্ষমতা জীবনপথ পরিক্রমণের হাতিয়ার হয়ে মানুষের সব কাজে কমবেশি যুক্ত হয়ে থাকে।

(3) পরিমাণে বৈষম্য : বিভিন্ন মানুষের মধ্যে এই ক্ষমতার পরিমাণের বৈষম্য লক্ষ করা যায়। ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে পার্থক্য সূচিত হয়।

(4) বিকাশশীল : সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বিকাশশীল। অধিকাংশ মনােবিদের পরীক্ষালব্ধ সিদ্ধান্ত হল, সাধারণ মানসিক ক্ষমতার বিকাশ ঘটে কৈশােরকাল পর্যন্ত। ওই বিকাশ আচরণের মধ্য দিয়ে পরিস্ফুট হয়।

(5) অভিযােজনের মাধ্যমে প্রকাশিত : পরিবেশের বিভিন্ন দিকের সঙ্গে অভিযােজন বা আচরণের মাধ্যমে এই ক্ষমতার প্রকাশ ঘটে। অভিযােজনের সফলতা সাধারণ মানসিক ক্ষমতার উপর নির্ভর করে।

(6) গুণগত পার্থক্য : মানসিক ক্ষমতার বিভিন্নতার কারণে ব্যক্তির কাজের মধ্যে গুণগত পার্থক্য দেখা যায়।

(7) মৌলিক ক্ষমতার সমষ্টি : সাধারণ মানসিক ক্ষমতা কয়েকটি মৌলিক ক্ষমতার সমষ্টি। এটি একক নয়। থাস্টোন, থর্নর্ভাইক এবং গিলফোর্ডের তত্ত্বের মাধ্যমেও তা জানা যায়।

(8) সঞ্চালনশীল : যারা যত বেশি এই ক্ষমতার অধিকারী তারা এক বিষয়ের জ্ঞানকে অন্য বিষয়ে তত বেশি সঞ্চালন করতে পারে।

সুতরাং বলা যায়, সাধারণ মানসিক ক্ষমতা হল জন্মগত ও সর্বজনীন। কঠিন বা সহজ যে-কোনাে ধরনের কাজের জন্য এটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।