প্রশ্নঃ সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের সাথে ইতিহাস সম্পর্ক আলােচনা কর।

অথবা, সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের সাথে ইতিহাস সম্পর্ক বিশ্লেষণ কর।

ভূমিকাঃ সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান মানুষের সংস্কৃতি বিষয়ক বিজ্ঞানভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ পাঠ। মানুষের আচার আচরণ, ভাষা-সাহিত্য, শিল্পকলা, সংস্কৃতি, কৃৎকৌশল প্রভৃতি বিষয়ে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান পূর্ণাঙ্গ বা holistic দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গবেষণা চালায়।

সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান ও ইতিহাসঃ সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের সাথে ইতিহাসের সম্পর্কের ব্যাপারে বেশ কিছু মতদ্বৈততা রয়েছে। এ সম্পর্কে নিম্নে আলােচনা করা হলাে-

(১) ১৮৭৩ সালে স্পেনসার বলেন, “নৃবিজ্ঞানের কাছে জীবনচরিত যতটা মূল্যবান সমাজবিজ্ঞানের কাছে ইতিহাস ততটা মূল্যবান। ১৮৯৯ সালে মেইটল্যাণ্ড লেখেন নৃবিজ্ঞানকে হয়তাে ইতিহাস হতে হবে, নতুবা নৃবিজ্ঞানের কোন অস্তিত্ব নেই। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানীর অন্যতম উদ্দেশ্য হলাে সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিশেষ করে সমাজ সংগঠন বা কাঠামাে সম্পর্কে জ্ঞানার্জন।

(৩) সমাজ পরিবর্তনশীল। একজন নৃবিজ্ঞানী যে সময়ে কোন সমাজ সম্পর্কে গবেষণা করছেন, সে সমাজ তাে কালের চক্রে পরিবর্তিত হয়ে ইতিহাসের গর্ভে স্থান নিচ্ছে।

(৪) একজন ঐতিহাসিক যখন মানব সমাজের ক্রমবিবর্তনের ধারা তুলে ধরতে চান তখন তাকে মানব প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে হয়।

(৫) ইতিহাসের সাথে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানে কতগুলাে পদ্ধতির আশ্রয় নিয়ে গবেষণা কার্য পরিচালনা করতে হয়, কিন্তু ইতিহাসে কোন গবেষণা পদ্ধতি নেই।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে,সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান সময়ের গণ্ডি পেরিয়ে এবং ভৌগােলিক সীমারেখা অতিক্রম করে সর্বকালের সব সমাজের মানুষের আচার-আচরণ, প্রথা-বিশ্বাস, সংস্কৃতি, কৃৎকৌশল প্রভৃতি বিষয়ে আলােচনা করে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের সাথে সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস ও মনােবিজ্ঞানের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।