অথবা, সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের সাথে সমাজবিজ্ঞানের সম্পর্ক আলােচনা কর।
ভূমিকাঃ নৃবিজ্ঞানকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা হয়। একটি দৈহিক নৃবিজ্ঞান অপরটি সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় সংস্কৃতি। এই বিজ্ঞান সংস্কৃতির উদ্ভব, বিকাশ এবং যুগ ও এলাকাভেদে মানব সংস্কৃতির বিচিত্ররূপ ও ব্যাপ্তি সম্পর্কে গবেষণা চালায়। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান সমাজবদ্ধ মানুষের বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আলােচনা করে।
সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের সম্পর্কঃ সমাজবিজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের মধ্যে বেশ কিছু সম্পর্ক রয়েছে। নিম্নে তা আলােচিত হল-
(১) আধুনিক সমাজ ও তার মানুষুের অধ্যয়ন হিসেবে সমাজবিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের সম্পর্ক গভীর। সমাজবিজ্ঞান যেমন আধুনিক সমাজের বিজ্ঞান, তেমনি নৃবিজ্ঞান আদিম মানুষ ও সমাজের পাশাপাশি আধুনিক মানুষ ও সমাজ নিয়ে আলােচনা করে।
(২) সমাজবিজ্ঞানের আলােচ্য বিষয় হলাে সমাজ। আর সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয় হলাে মানুষের সাংস্কৃতিক জীবন। যেহেত সাংস্কৃতিক জীব হিসেবে মানুষকে নিয়েই সমাজ গঠিত হয়, তাই উভয়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
(৩) সমাজের উৎপত্তি, বিকাশ ও বিবর্তন সমাজবিজ্ঞানী নৃবিজ্ঞানের সাহায্যে তুলে ধরেন। আবার সামাজিক ঘটনা প্রবাহ সমাজবিজ্ঞানে চিত্রিত হওয়ায় নৃবিজ্ঞানী তার গবেষণা কাজে সমাজবিজ্ঞানের সাহায্য নেন।
(৪) সমাজবিজ্ঞান থেকে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানকে আলাদা করা যায় না। অনেকে এদেরকে একই বিষয়ের দু’টি অঙ্গ মনে করেন। আবার অনেকে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানকে সমাজবিজ্ঞানের একটি অংশ মনে করেন।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান সময়ের গণ্ডি পেরিয়ে এবং ভৌগােলিক সীমারেখা অতিক্রম। করে সর্বকালের সব সমাজের মানুষের আচার-আচরণ, প্রথা-বিশ্বাস, সংস্কৃতি, কৃৎকৌশল প্রভৃতি বিষয়ে আলােচনা করে।
Leave a comment