প্রশ্নঃ সাংস্কতিক নৃ-বিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও।

অথবা, সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান কী?

ভূমিকাঃ নৃবিজ্ঞানকে প্রধানত দু’টি শাখায় বিভক্ত করা হয়েছে- দৈহিক নৃবিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলাে সামাজিক মানুষের সংস্কৃতি। মানুষের আচার-আচরণ, রীতি নীতি, চাল-চলন, প্রথা-বিশ্বাস, ভাষা-সাহিত্য প্রভৃতিকে ঘিরেই সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান গড়ে উঠেছে। সংস্কৃতির উদ্ভব, বিকাশ এবং যুগ ও এলাকাভেদে এর বিচিত্র রূপ ও ব্যাপ্তি সম্পর্কে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান গবেষণা পরিচালনা করে।

সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের সংজ্ঞাঃ সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান মানুষের সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এর সহজ সংজ্ঞায় আমরা বলতে পারি- মানুষের সংস্কৃতির বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়ন হলাে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান। Cultural Anthropology is the scientific study of man’s creation or mans culture. সাংস্কতিক নৃ-বিজ্ঞানের সংজ্ঞা দেয়ার আগে সংস্কৃতি ও নৃবিজ্ঞানের আলাদা আলাদা পরিচিতি তুলে ধরা হলাে –

নৃবিজ্ঞান হলাে মানুষের বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়ন আর সংস্কৃতি হলাে মানুষ তার চিন্তা-ভাবনার ফলশ্রুতি হিসেবে যা কিছু করে, তাই তার সংস্কৃতি। নৃবিজ্ঞানী টেইলরের মতে- ‘সমাজের সদস্য হিসেবে অর্জিত আচার-আচরণ, ব্যবহার, জ্ঞান, বিশ্বাস, শিল্প-কলা, নীতি-প্রথা, আইন ইত্যাদির সমাবেশই হলাে সংস্কৃতি।

সার্বিক সংজ্ঞাঃ উপরের আলােচনা থেকে আমরা বলতে পারি, নৃবিজ্ঞানের যে শাখায় আদিম বা প্রাক স্বাক্ষর থেকে শুরু করে আধুনিক মানুষের সংস্কৃতি সম্পর্কে আলােচনা করা হয় তাকে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান বলা হয়। অন্যভাবেও বলা যায়, নৃবিজ্ঞানের যে শাখায় মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কার্যপ্রণালী, আর্থ-সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি বিষয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়ন করা হয়, তাই হলাে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষের জীবনের মতই সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তত। আধুনিককালে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান দৃষ্টিভঙ্গির প্রসারতায় আধুনিক সমাজের মানুষের সংস্কৃতি সম্পর্কে অধ্যয়ন করার ফলে এর পরিধি আরাে বিস্তৃত হয়েছে। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের ব্যাপক বিষয়বস্তুর এক একটা দিক সম্পর্কে এক একটা ‘Specialized area’ গড়ে উঠেছে।