উত্তর: প্রদত্ত চরণগুচ্ছ কুকুরীপাদানাম রচিত ২ নং চর্যাপদ থেকে গৃহীত হয়েছে। নিয়ন্ত্রণহীন শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে দেহমন্দিরে চুরি হলো, অথচ তখন কামকেলিতে মত্ত থাকায় সেকথা বুঝতে পারল না যোগী, সে কথাই ব্যক্ত হয়েছে।

মানব জন্মেই মানুষ হয়ে ওঠে না- তাকে মানুষ হওয়ার সাধনা করতে হয়। মানুষ হওয়ার বশীভূত সাধনা বড়োই কঠিন। শ্বাসবায়ু যখন স্থির তখন জেগে থাকে পরিশুদ্ধ প্রকৃত রূপিনী বধূ। এ শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দেহে কামনার বেসাতি চলে। কামই চোর। তাই শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের অভাব হলে দেহ ঘরে চুরি হয়। সুতরাং চুরি ঠেকাতে হলে কাম সাধনা অপরিহার্য। আর অর্ধরাত্রি হচ্ছে প্রজ্ঞা জ্ঞানের অভিষেক। তাই সহজানন্দরূপ চোর এ সময়ে কানেটরূপী প্রকৃতি দোষ হরণ করে।

মূলত দেহভাণ্ডের শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর নিয়ন্ত্রণ না আসে- তাহলে সেই মানবঘরে চলে কামনা-বাসনা আর ভোগবিলাসের মহোৎসব। অর্থাৎ অলংকাররূপ জীবন কাম-বাসনামও জন্মের মূল উদ্দেশ্য ভুলে যায়। এ পদে দেহের ঘরে মদন বা কামদেবকে চোর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।