সরকার হলাে রাষ্ট্রের একটি মৌলিক উপাদান। সরকারকে রাষ্ট্রের প্রতিনিধি বা পরিচালক হিসেবেও অভিহিত করা যায়। এটি একটি সর্বজনীন সংস্থা। সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য চরিতার্থ হয়। বর্তমান যুগে ‘সরকার’ ধারণাটি আদিম সমাজের বিশৃঙ্খল জনগােষ্ঠীর শৃঙ্খলাবদ্ধতা এবং যুগে যুগে গবেষণালব্ধ কর্মের অভূতপূর্ব ফলাফল। প্রাচীন কালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক এরিস্টটল থেকে শুরু করে আধুনিক কাল পর্যন্ত সরকারের কর্মপদ্ধতির ধারণা পরিবর্তিত হচ্ছে।

সরকারঃ সরকার একটি রাজনৈতিক সংগঠন। আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ ও শাসন বিভাগ নিয়ে সরকার নামক রাষ্ট্র পরিচালনার যন্ত্রটি গঠিত হয়েছে। এ সরকার শব্দটি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়। ব্যাপক অর্থে সরকার বলতে দেশের সকল নাগরিককে বুঝায়।

সংকীর্ণ অর্থে সরকার বলতে আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের সাথে সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীর সমষ্টিকে বুঝায়।

প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে সরকারের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলাে-

অধ্যাপক গার্নার (Prof. Garner) এর মতে, “সরকার হলাে একটি কার্যনির্বাহী মাধ্যম বা যন্ত্র, যার দ্বারা সরকারের সাধারণ নীতি নির্ধারিত হয় এবং যার দ্বারা সাধারণ কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হয় ও সাধারণ স্বার্থ সাধিত হয়।”

অধ্যাপক গেটেল (Prof. Gettel) বলেছেন, “Government is the organization or machinery of the state.” অর্থাৎ, সরকার হলাে রাষ্ট্রের একটি সংস্থা বা যন্ত্র।

উইলােবি (willoughby) বলেছেন, “সরকার হলাে একটি প্রতিষ্ঠান বা যন্ত্র, যার মাধ্যমে রাষ্ট্র তার ইচ্ছাকে গঠন ও কার্যকর করে।”

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সরকার হলাে এমন একটি সংগঠন, যা রাষ্ট্রের ইচ্ছাকে আইনে পরিণত করে এবং আইনের মাধ্যমে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও রাষ্ট্র পরিচালনার ভার যাদের উপর ন্যস্ত থাকে তাদেরই সমষ্টিগতভাবে সরকার বলা হয়ে থাকে।