সরকারী কাঠামো ও রাজনীতিক ব্যবস্থার শ্রেণীবিভাজনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিকল্পনা ও পদ্ধতির অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়। বলের অভিমত অনুসারে শ্রেণীবিভাজনের পরিকল্পনা সহজ-সরল হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে শ্রেণীবিভাজনের ব্যবস্থা বহুলাংশে খামখেয়ালিপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে বল তাঁর Modern Politics and Government শীর্ষক গ্রন্থে বলেছেন: “…an aim of all schemes of classification is simplicity, although the choice may be arbitrary depending on the nature of the question being asked.” যাইহোক সরকারী কাঠামো ও রাজনীতিক ব্যবস্থার শ্রেণীবিভাজন সম্পর্কিত পরিকল্পনা ও প্রক্রিয়াসমূহ বাস্তবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। এই সমস্ত সমস্যার কারণে শ্রেণীবিভাগের সমগ্র ব্যবস্থাটি বিশেষভাবে জটিল হয়ে পড়ার আশংকা থাকে। শ্রেণীবিভাজন সম্পর্কিত সকল পরিকল্পনা প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেই সাধারণভাবে কতকগুলি মৌলিক সমস্যার অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়। বল বলেছেন: “there are certain fundamental problems that are common to all schemes of classification.” অধ্যাপক বল এই সমস্ত সমস্যাদি সম্পর্কে যথাসম্ভব বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। বলের বিচার-বিশ্লেষণ অনুসরণ করে শ্রেণীবিভাজনের সাধারণ সমস্যাগুলির নিম্নলিখিতভাবে পর্যালোচনা করা যায়।
(১) রাজনীতিক ধারণার অর্থ ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে পার্থক্য: সরকারী কাঠামো ও রাজনীতিক শ্রেণীবিভাগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মতাদর্শগত শব্দ ও ধারণা প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই রাজনীতিক ধারণাগুলির প্রয়োগগত অর্থ সম্পর্কে সমস্যার সৃষ্টি হয়। কারণ সকল রাজনীতিক ব্যবস্থায় এই ধারণাগুলি সমার্থক প্রতিপন্ন হয় না। রাজনীতিক ব্যবস্থাভেদে রাজনীতিক ধারণাগুলির অর্থ ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। অর্থাৎ এই ধারণাগুলি রাজনীতিক ব্যবস্থা-নিরপেক্ষ নয়। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে নাগরিক অধিকার, নাগরিক স্বাধীনতা, সাম্য, ন্যায়বিচার প্রভৃতি ধারণাগুলির কথা বলা যায়। সমাজতান্ত্রিক এবং অ-সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিক ব্যবস্থায় উল্লিখিত ও আনুষঙ্গিক ধারণাগুলির দ্যোতনা ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। বল এ প্রসঙ্গে বলেছেন: “There is the problem of defining the concepts being used. Thus civil liberties may mean something different in the United States than they mean in the Soviet Union,…” বল আরও বলেছেন: “…the claim that the Soviet government ignores fundamental civil rights will be meaningless unless there is some form of agreement on what the respective regimes mean by civil liberties’.”
(২) পরিমাপের সমস্যা: সরকারী কাঠামোর শ্রেণীবিভাজনের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন ব্যক্তির গুণগত যোগ্যতা বা ব্যক্তিগত গুণাবলী একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু সরকারী কাঠামোতে শাসকপ্রধানের ব্যক্তিগত গুণাবলীর প্রভাব পৃথকভাবে পরিমাপ করা যায় না। এই অবস্থায় পরিমাপ ও সংখ্যায়নের সমস্যার সৃষ্টি হয়। হিটলার দেশবাসীর অবিসংবাদিত আনুগত্য লাভ করেছিলেন। তাঁর এই রাজনীতিক কর্তৃত্বের মূলে তাঁর কর্তৃত্বমূলক ব্যক্তিত্বের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও অস্বীকার করা যাবে না যে জার্মানীর রাষ্ট্রপতি হিটলারকে বিধিসম্মতভাবে চ্যান্সেলার পদে নিযুক্ত করেছিলেন। কোন রাষ্ট্রপ্রধান আইন-ব্যবস্থা ও আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর অবদানকে অস্বীকার করে দাবি করতে পারেন যে তাঁর রাজনীতিক কর্তৃত্বের ভিত্তি হল তাঁর নিজস্ব গুণগত যোগ্যতা। কিন্তু রাজনীতিক কর্তৃত্বের পিছনে রাষ্ট্রপ্রধান এবং আইন ও আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর পারস্পরিক অবদান পরিমাপ করা কঠিন ব্যাপার। এ প্রসঙ্গে বলের অভিমত হল: “….the problem of quantification complicates the already difficult question of conceptualisation.” তিনি আরও বলেছেন: “If one claims that the source of a leader’s authority is charismatic rather than legal bureaucratic, how much charisma is necessary before this claim is made and how is it measured?”
(৩) নামের অভিন্নতা সত্ত্বেও ভূমিকার বিভিন্নতা: বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের ক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিপত্তির ক্ষেত্রে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। একই নামধারী সরকারী পদাধিকারীদের ভূমিকা সকল রাজনীতিক ব্যবস্থায় একই রকমের হয় না। তার ফলে সরকারী কাঠামোর শ্রেণীবিভাজনের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সরকারের রাজনীতিক প্রতিষ্ঠানগুলির নাম এক হতে পারে, কিন্তু বিভিন্ন দেশের রাজনীতিক ব্যবস্থায় তাদের ভূমিকা স্বতন্ত্র হওয়া স্বাভাবিক। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত এই দু’টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে রাষ্ট্রপতি (President) বলা হয়। কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রপতি এবং ভারতের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিপত্তির ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য বর্তমান। মার্কিন রাষ্ট্রপতি হলেন একাধারে রাষ্ট্রের প্রধান এবং প্রকৃত শাসকপ্রধা অপরদিকে ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন ভারত রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক প্রধান, ভারত সরকারের প্রধান নন। ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন ‘নামসর্বস্ব প্রধান’ বা ‘নিয়মতান্ত্রিক প্রধান’ (Constitutional Head) | বরং ক্ষমতা ও ভূমিকাগত বিচারে ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ব্রিটেনের রাজা বা রাণীর অধিক সাদৃশ্য বর্তমান। এই কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থাকে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসনব্যবস্থা বলা হয়, কিন্তু ভারতের শাসনব্যবস্থাকে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসনব্যবস্থা বলা যায় না। তা ছাড়া নামকরণের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকলেও বিভিন্ন সরকারের একই পদাধিকারীরা অল্পবিস্তর অভিন্ন ভূমিকা পালন করে থাকেন। গ্রেট ব্রিটেনের রাজা বা রাণী এবং ভারতের রাষ্ট্রপতির ভূমিকা মোটামুটি একই রকম। এ প্রসঙ্গে একটি উদাহরণ দিতে গিয়ে বল বলেছেন: “The French President of the Fifth Republic has more political power than either; the president of the United States combines, in some respects, the political features of the British Prime minister and the British monarchy.” Comparative Politics Lice অ্যালমন্ড ও পাওয়েল-এর অভিমত অনুসরণ করে বল বলেছেন: “The problem over labels is another difficulty in the classification of political systems. Political institutions with the same label may perform similar functions in different political systems.” এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছেন: “Thus it is very important and often very difficult in the construction of typologies to make sure that like is being compared to like,”
(৪) রাজনীতিক মূল্যবোধজনিত সমস্যা: শ্রেণীবিভাজনের বিচার-বিশ্লেষণের উপর রাজনীতিক মূল্যবোধের প্রভাব-প্রতিক্রিয়াও সমস্যার সৃষ্টি করে। ক্ষেত্রবিশেষে সরকারী কাঠামোর শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কিত আলোচনার সঙ্গে মূল্যমানের আলোচনা জড়িয়ে পড়ে। অর্থাৎ অনেক সময় সরকারের শ্রেণীবিভাগ করতে গিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ব্যক্তিগত রাজনীতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট ধরনের সরকারের গুণাগুণের আলোচনায় জড়িয়ে পড়েন। ব্যক্তিগত রাজনীতিক মূল্যবোধ আরোপিত হওয়ার জন্য শ্রেণীবিভাজন সর্বজনগ্রাহ্য নাও হতে পারে। অনেক সময় শ্রেণীবিভাজনের মাধ্যমে কোন বিশেষ সরকারী কাঠামোর বিরূপ সমালোচনা অথবা সমর্থনের উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়। বল বলেছেন: “Another difficulty concerns value judgements. Classification is sometimes used to praise or condemn a particular regime.” সাধারণত নিজেদের মতাদর্শগত বিশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ধরনের সরকার সম্পর্কে বিচার-বিশ্লেষণ করে থাকেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ব্যক্তিগত রাজনীতিক মূল্যবোধের মানদণ্ডের প্রভাব থেকে মুক্ত নন। সরকারের শ্রেণীবিভাগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সরকারের কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের রাজনীতিক মূল্যবোধ, অঙ্গীকার ও অগ্রাধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে উদ্যোগী হন। বল বলেছেন: “Regimes are labelled ‘democratic’ or ‘autocratic’ not simply to describe, categories and analyse the political institutions, but to indicate preferences.” তাঁর অভিমত অনুসারে সকল রাষ্ট্রবিজ্ঞানী কতকাংশে রাজনীতিক সংস্কৃতির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ (culture bound)। তাঁরা পরিচিত রাজনীতিক প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়াকে বিচার-বিশ্লেষণের মানদণ্ড হিসাবে ব্যবহার করেন। এবং এই মানদণ্ডের সাহায্যে অন্যান্য সরকারী কাঠামোর মূল্যায়ন করেন। এ প্রসঙ্গে বলের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন: “They seem to state preferences almost unconsciously, they see types of governments they dislike as resting on force and fraud. Political descriptions then become full of words of abuse.” এ প্রসঙ্গে বল In Defence of Politics শীর্ষক গ্রন্থ থেকে বার্নাড ক্রিকের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন। তিনি বলেছেন: “Democracy is perhaps the most promiscuous word in the world of public affairs. She is everybody’s mistress and yet somehow retains her magic even when her lover sees that her favours are being, in his light, illicitly shared by many another.”
(৫) পরিবর্তিত অনুধাবন সম্পর্কিত সমস্যা: কোন দেশের সরকারী কাঠামো আবহমানকাল অপরিবর্তিত থাকে না। তার পরিবর্তন ঘটে। সরকারের শ্রেণীবিভাজনের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচিত হওয়া একান্তভাবে অপরিহার্য। অথচ সরকারী কাঠামোর এই পরিবর্তনের বিষয়টি প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়। বল বলেছেন: “A further difficulty in the development of typologies is the failure to recognise that regimes change; any system of classification must allow for the process. of change, avoiding excessive rigidity.” এ প্রসঙ্গে উদাহরণের অবতারণা করতে গিয়ে বল বলেছেন যে ১৯৭০-এর দশকে স্পেন ও পর্তুগালের রাজনীতিক ব্যবস্থার ব্যাপক ও আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। স্পেনে ফ্রাঙ্কো (Franco)-র এবং পর্তুগালে সালাজার (Salazer)-এর ফ্যাসিবাদী আমলের অবসান ঘটেছে। এই দুই ফ্যাসিবাদী শাসকের মৃত্যুর আগেও এই দুই স্বৈরাচারী সরকারের শ্রেণীবিভাজনের সমস্যা ছিল। হিটলার ও মুসোলিনীর শাসনের সঙ্গে তুলনার উদ্দেশ্যে ফ্রাঙ্কো ও সালাজারের শাসনকে ফ্যাসিবাদী বলা হয়েছে। কিন্তু এই তুলনামূলক আলোচনা নিতান্তই অতি সরলীকৃত, যথার্থ নয়। এ প্রসঙ্গে বলের অভিমত হল: “The respective changes in the 1970s, and especially the relative rapidity of these political changes, certainly warn against the dangers of too rigid a scheme of classification.”
(৬) সরকারের কাঠামো ও কার্যগত উৎপাদনের মধ্যে বৈসাদৃশ্য: বিভিন্ন দেশের সরকারের আনুষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে সাদৃশ্য থাকতে পারে। কিন্তু সাদৃশ্যের অস্তিত্ব সত্ত্বেও সরকারের কার্যগত বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে ব্যাপক বৈসাদৃশ্য থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে গ্রেট ব্রিটেন ও ভারতের শাসনব্যবস্থার কথা বলা যায়। এই দুটি দেশেই সংসদীয় শাসনব্যবস্থা বর্তমান। কিন্তু এই সংসদীয় শাসনব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে উভয় দেশের সরকারের কার্যপদ্ধতি ও পরিচালন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈসাদৃশ্য বর্তমান। ভারতের সংসদীয় শাসনব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয় শাসনতন্ত্র, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, বহুদলীয় ব্যবস্থা প্রভৃতি। অপরদিকে গ্রেট ব্রিটেনের সংসদীয় শাসনব্যবস্থার অপরিহার্য অঙ্গ হল অলিখিত সংবিধান, এককেন্দ্রিক কাঠামো, বংশানুক্রমিক রাজা বা রাণী, দ্বি-দলীয় ব্যবস্থা প্রভৃতি। অনুরূপভাবে ফ্যাসিবাদী বা নাৎসীবাদী একনায়কতন্ত্র এবং সর্বহারার একনায়কতন্ত্রও কর্মসূচী, লক্ষ্য ও প্রকৃতিগত বিচারে অভিন্ন নয়।
(৭) আনুষ্ঠানিক ও বাস্তব অবস্থার মধ্যে পার্থক্য: সরকারের ক্ষমতা, কার্যাবলী ও ভূমিকার ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক বা আইনানুগ অবস্থা এবং বাস্তব অবস্থার মধ্যে লক্ষণীয় পার্থক্য থাকে। সংবিধান অনুসারে কোন বিশেষ পদাধিকারীর হাতে সরকারী ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে; কিন্তু বাস্তবে অন্য কোন পদাধিকারী বা প্রতিষ্ঠান সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে। অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা বা সাংবিধানিক ক্ষমতা এবং প্রকৃত ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। শ্রেণীবিভাজনের ক্ষেত্রে এই পার্থক্যের বিষয়টি পর্যালোচনা করা দরকার। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে আবার ভারতের কথা বলা দরকার। ভারতের সংবিধান অনুসারে শাসন-বিভাগীয় যাবতীয় ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত আছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ বা ক্যাবিনেটই সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে।
উপসংহার: শ্রেণীবিভাজন সম্পর্কিত কিছু সমস্যা সত্যই দুরূহ প্রকৃতির। কিন্তু সরকারী কাঠামোর বাস্তবানুগ শ্রেণীবিভাজনের ক্ষেত্রে মূল্যবোধজনিত প্রভাব-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশেষভাবে সজাগ থাকা দরকার। শ্রেণীবিভাজনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সমস্যাদি নিরসনের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। এ প্রসঙ্গে বল বলেছেন: “The dangers are in some cases, unavoidable, but awareness that value judgements may interfere with a more objective analysis is of great importance in the process of classification.” রাজনীতিক ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানের শ্রেণী-বিভাজনের বিশেষ কিছু দৃষ্টান্ত পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট অনেকগুলি সমস্যা সম্পর্কে সম্যকভাবে অবহিত হওয়া যায়। যে কোন রাজনীতিক ব্যবস্থার বিভিন্ন অংশ পরস্পরের উপর নির্ভরশীল থাকে। পরস্পর নির্ভরশীল অংশসমূহের মধ্যে কোন একটি অংশের পরিবর্তন সূচিত হলে, সেই পরিবর্তন অন্যান্য অংশকেও প্রভাবিত করে। বল বলেছেন: “…a political system implies the interdependence of the various parts of the system and that changes in one aspect of the system will affect other parts.”
Leave a comment