প্রশ্নঃ সম্প্রদায় ও সংঘের মধ্যে পার্থক্য আলােচনা কর।

অথবা, সম্প্রদায় ও সংঘের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর।

ভূমিকাঃ সম্প্রদায় প্রত্যয়টি সমাজবিজ্ঞানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রদায় মানবজীবনে স্থিতিশীলতা, বিচিত্র অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক যােগাযােগ এবং সুযােগ-সুবিধাসহ অত্যাবশ্যকীয় মানসিক তৃপ্তি নিয়ে আসে। তাই সম্প্রদায়’ সমাজবিজ্ঞানের একটি মৌল প্রত্যয়। 

সম্প্রদায় এবং সংঘের পার্থক্যঃ সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সম্প্রদায় এবং সংঘের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে, যদিও উভয়ের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে বলে মনে হয়। নিম্নে উভয়ের মধ্যকার পার্থক্যগুলাে আলােচনা করা হলাে-

সম্প্রদায় 

সংঘ

(১) একটি নির্দিষ্ট এলাকাকে কেন্দ্র করে সম্প্রদায় গড়ে ওঠে। যেমন: বাংলাদেশের উপজাতিরা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে বসবাস করে।

(১) সংঘ সংঘটিত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনাে এলাকার প্রয়ােজন নেই। যেমন: খেলাধুলার মাঠ।

(২) কতিপয় স্বার্থ ও উদ্দেশ্য সামনে রেখে একই রীতি-নীতিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি এলাকায় বস্তুবাসরত জনসমষ্টিই হল সম্প্রদায়।  

(২) এক বা একাধিক সাধারণ উদ্দেশ্যসাধনের জন্য সংগঠিত দলই হচ্ছে সংঘ।

(৩) সম্প্রদায় সংগঠনের সাম্প্রদায়িক মনােভাব দরকার।

(৩) সংঘে এ ধরনের বাধ্যবাধকতা নেই।

(৪) সম্প্রদায় একটি স্থায়ী সংগঠন। 

(৪) সংঘের কোনাে স্থায়িত্ব নেই।

(৫) একটি সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্য সহজেই অনুমেয়।

(৫) সংঘের উদ্দেশ্য সহজে অনুমান করা যায় না।

 

পরিশেষঃ উপযুক্ত আলােচনার শেষে যে বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় তা হলাে- একদিকে সম্প্রদায় ও সংঘের মধ্যে সুচারুরূপে পার্থক্য বিদ্যমান তেমনি উভয়ের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, গঠন, কার্যক্রম, স্থায়িত্ব বিভিন্ন দিক দিয়ে এদের পার্থক্য সুস্পষ্ট। তাই এদের মধ্যে পার্থক্য ও সম্পর্ক উভয়ই বিদ্যমান রয়েছে।