বুদ্ধদেব বসুর ‘রবীন্দ্রনাথের প্রতি’ কবিতায় যে ‘দারুণ দুর্দিনে’র পরিচয়

বিশ্বব্যাপী মারণযজ্ঞের বধ্যভূমিতে দাঁড়িয়ে চিরদিনই রবীন্দ্রনাথ তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। মানবতার অবিচলিত ধারণাকে সযত্নে আজীবন লালন করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রণদামামা যখন প্রবলভাবে বেজে উঠেছে, ইউরোপের ফ্যাসিস্ট শক্তির অভ্যুত্থানে যখন পৃথিবীব্যাপী আতঙ্কের ছায়া গাঢ় হয়ে উঠেছে ঠিক সেই সময়ে রবীন্দ্রনাথ জীবনের শেষ পর্যায়ে লিখেছিলেন ‘সভ্যতার সঙ্কট’ শীর্ষক বক্তৃতা মালা। দুর্বার পাশবশক্তি তখন মানবের সমস্ত প্রকার শুভবুদ্ধি ও কল্যাণচেতনার কণ্ঠরোধ করে সভ্যতাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল। ‘সভ্যতার সঙ্কট’ শীর্ষক ভাষণমালায় রবীন্দ্রনাথ লিখলেন, “…….দেখা গেল, সমস্ত ইউরোপে বর্বরতা কীরকম নখদন্ত বিকাশ করে বিভীষিকা বিস্তার করতে উদ্যত। এই মানবপীড়নের মহামারী পাশ্চাত্ত্য সভ্যতার মজ্জার ভিতর থেকে জাগ্রত হয়ে উঠে মানবাত্মার অপমানে দিগন্ত থেকে দিগন্ত পর্যন্ত বাতাস কলুষিত করে দিয়েছে।” ভারতবর্ষের চিরায়ত আদর্শ, শান্তি, মানবতার কল্যাণবোধও দস্যুশক্তির লুব্ধতার গ্রাসে হয়ে পড়েছিল নিমগ্ন। মানবপ্রেমিক রবীন্দ্রনাথ, মহর্ষির পুত্র ঋষিত্বের উত্তরাধিকারী হয়ে মানুষে মানুষে মিলনের মহামন্ত্র সেদিন উচ্চারণ করেছিলেন। বিশ্বব্যাপী ভাঙন ও ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়েও ভারতবর্ষের সনাতন শান্তি চেতনার আদর্শে নিজের অন্তরাত্মাকে উদবোধিত করেছিলেন তিনি। পৃথিবীর এমন রূপ মানবের প্রাণে তিনি এঁকে দিতে চেয়েছিলেন যেখানে বিরোধ-দ্বন্দ্ব-হত্যার ভ্রুকুটি মানব সম্বন্ধকে অস্বীকার করবে না কখনও। মানবতার মহামন্ত্রে বিশ্বাস রেখে তিনি সেদিন বলেছিলেন, “মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ, সে বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত রক্ষা করব। আশা করব মহাপ্রলয়ের পরে বৈরাগ্যের মেঘমুক্ত আকাশে ইতিহাসের একটি নির্মল আত্মপ্রকাশ হয়তো আরম্ভ হবে এই পূর্বাচলের সূর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে। আর একদিন অপরাজিত মানুষ নিজের জয়যাত্রা অভিযানে সকল বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হবে তার মহৎ মর্যাদা ফিরে পাবার পথে। মনুষ্যত্বের অন্তহীন প্রতিকারহীন পরাভবকে চরম বলে বিশ্বাস করাকে আমি অপরাধ মনে করি।”

“রবীন্দ্রনাথের প্রতি’ কবিতাটি বুদ্ধদেব বসু রচনা করেছিলেন কবির মৃত্যুর পর আসন্ন প্রথম জন্মদিনে (২৫শে বৈশাখ, ১৩৪৯)। বিশ্বব্যাপী মারণযজ্ঞের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করার প্রয়োজন তখন গভীর তাৎপর্যে অন্বিত। রবীন্দ্রনাথের অমৃতবাণী কবি বুদ্ধদেবকে এ সময় ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। জীবনের জয়গানে যে রবীন্দ্রনাথ উদ্দীপিত করেছিলেন তরুণ প্রজন্মের সাথে সাথে সমগ্র মানব সমাজকে, সেই রবীন্দ্রবাণীর প্রতিই হৃদয়ের সমস্ত আস্থা-বিশ্বাস-শ্রদ্ধা অটুট রেখে কবি বুদ্ধদেব বলেছিলেন, 

“……. অন্তরে লভেছি তব বাণী

তাই তো মানি না ভয়, জীবনেরই জয় হবে জানি।”

রবীন্দ্রনাথের মহাপ্রয়াণ ঘটেছিল ১৯৪১-এ। ঠিক তার একবছর পরে বুদ্ধদেব বসু কবিতাটি লিখেছিলেন। সমসাময়িক বিশ্ব পরিস্থিতি তখন আরও বেশি সঙ্কটজনক হয়ে পড়েছে। দেশীয় রাজনৈতিক আবহাওয়াতেও তখন লেগেছে পালাবদলের গভীর চোরাস্রোত। মানবের মহান অস্তিত্ব, বেঁচে থাকবার সুস্থ সুন্দর, সহজ আকাঙ্ক্ষাটিও প্রতিমুহূর্তে ভূলুণ্ঠিত হয়ে চলেছে। এমনই একটি পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকবার সহজ আকাঙ্ক্ষায় কবি বুদ্ধদেব প্রত্যয়ী রবীন্দ্রনাথেই একমাত্র আশ্রয় খুঁজে পেয়েছেন। তাঁর কবিত্বের মর্মমূল থেকে স্পষ্ট ও সহজ স্বীকারোক্তি উঠে এসেছে পীড়িত ও আর্তের যন্ত্রণাধ্বনির মতো—

তোমার স্মরণ করি আজ এই দারুণ দুর্দিনে 

হে বন্ধু, হে প্রিয়তম, সভ্যতার শ্মশান শয্যায়

সংক্রামিত মহামারী মানুষের মর্মে ও মজ্জায় ;

বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ প্রেক্ষিতে ভারত তথা সমগ্র বিশ্বের মানবসভ্যতা শ্মশান শয্যায় শায়িত। ফ্যাসিস্ট ও নাৎসী দস্যুদের পদভারে, শক্তির দম্ভে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ছে বর্বরতা। মানুষের মর্মমূল থেকে শুরু করে মন-বুদ্ধি-আত্মা সর্বত্রই বর্বর অহংসর্বস্ব মানুষগুলো মারণরোগের সংক্রামক বীজ ছড়িয়ে দিয়েছে যেন। সহজ আনন্দ, স্বাভাবিক চেতনার শক্তি বিনষ্ট হয়ে পড়েছে। প্রতিস্পর্ধী দস্যু দলের সঙিন যেন সর্বদাই মানবকে হত্যালীলায় নিযুক্ত করে, তার রক্তপান করতে উদ্যত। সৌন্দর্য, শ্রী, সুস্থ জীবনে আজ প্রাণলক্ষ্মী সর্বদাই নির্বাসিত। মৃত্যুর করাল গ্রাসে, আতঙ্কের উন্মত্তলীলা চালিয়ে রক্তপায়ী দস্যুদল ছুটে আসছে। জল-স্থল-অন্তরীক্ষ জুড়ে মৃত্যুদূত বর্বর রাক্ষসের মতো কর্কশ কণ্ঠে চীৎকার করছে। তাদের চেয়ে বৃহৎ শক্তি আজ আর পৃথিবীতে কারো নেই। কবি লিখেছেন,

প্রাণলক্ষ্মী নির্বাসিতা, রক্তপায়ী উদ্ধত সঙিনে

সুন্দরের বিদ্ধ করে মৃত্যুবহ পুষ্পকে উড্ডীন

বর্বর রাক্ষস হাঁকে, “আমি শ্রেষ্ঠ সবচেয়ে বড়

দেশে দেশে সমুদ্রের তীরে তীরে কাঁপে থরোথরো

পাশ্চাত্যের যে সভ্যতার প্রতি সমগ্র বিশ্ব একদিন আস্থা রেখেছিল, যারা জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চায় সমগ্র পৃথিবীকে শ্রদ্ধায় অবনত করে রেখেছিল, তারাই আজ পারস্পরিক হানাহানি আর অত্যাচারে উদ্যত। লোভ আর স্বার্থের উদ্ধত সঙিনে তারা জীবনকে বিদ্ধ করে, সুন্দরকে বিদ্ধ করে। যুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে মহামারীর প্রবল গ্রাস । এই মহামারী আকাশ-বাতাসকে বিষাক্ত করে প্রাণের আলো নিভিয়ে দিয়ে যায়। ক্রমাগত সংক্রমণে বিশ্বমানবের জীবনীশক্তিকে তারা ধ্বংস করে চলে। উন্মত্ত জন্তুর দল সোনার হরিণের খোঁজে দেশ-বিদেশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বোমারু বিমান, বা মৃত্যুবহ পুষ্পক অথবা বোমারু আকাশযান থেকে ঘনঘন আগুনের গোলা নেমে আসছে। মৃত্যুদূতের মতো সেই বোমারু বিমান রণাঙ্গন থেকে শুরু করে অসহায় শান্তপল্লিতে আগুনের গোলা ফেলছে। জাতিগত দম্ভ, জার্মান নাৎসী বাহিনীর উগ্রজাতীয়তাবোধ সম্প্রদায়িকতাকে অস্ত্র করে সমগ্র বিশ্বকে উত্তপ্ত করে চলেছে। ‘আমি শ্রেষ্ঠ সবচেয়ে বড়ো’ এই শ্লোগান তুলছে তারা দিকে দিকে। সমগ্র বিশ্বকে শাসন করতে চাইছে তারা। ধনতান্ত্রিকতা, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন এবং জাতিগত উন্নাসিকতার ত্রয়ী মিলনে বিশ্বব্যাপী শান্তি, সত্য এবং সুন্দরকে ক্ষতবিক্ষত করে চলেছে তারা। মানুষের মানবিক মূল্যবোধ, প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসার মতো শুভ ইচ্ছাগুলিকে পশ্চিমী শক্তির হিংস্র উন্মত্ত লোভ বাণিজ্য বাজারের পণ্য করে তুলেছে। কবি লিখেছেন, 

‘উন্মত্ত জন্তুর মুখে জীবনের সোনার হরিণ।

প্রাণ রুদ্ধ, প্রাণ স্তব্ধ, ভারতের স্নিগ্ধ উপকূলে

লুব্ধতার লালা ঝরে,”

এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ তার ‘লড়াইয়ের মূল’ প্রবন্ধে লিখেছেন, “সম্প্রতি পৃথিবীতে বৈশ্যরাজক যুগের পত্তন হইয়াছে। বাণিজ্য এখন আর নিছক বাণিজ্য নহে, সাম্রাজের সঙ্গে একদিন তার গান্ধর্ব বিবাহ ঘটিয়া গেছে। একসময় জিনিসই ছিল বৈশ্যের সম্পত্তি এখন মানুষ তার সম্পত্তি হইয়াছে।” এই কারণেই প্রতীচ্যের অনুন্নত পরাধীন অজস্র দেশ পাশ্চাত্য দেশগুলির সর্বগ্রাসী বাণিজ্যের ক্ষুধা মেটাবার একমাত্র আধার হয়ে উঠেছে। ‘ভারতের স্নিগ্ধ উপকূলে লুব্ধতার লালা ঝরে’ বাক্যবন্ধটির প্রাসঙ্গিকতা এখানেই। কবি হয়তো পরবর্তী আধুনিক কবিদের মতো অতখানি দৃপ্ত উচ্চারণ কণ্ঠে আনতে পারেননি, মানুষের প্রতিবাদ প্রতিরোধের ওপর বিপুল আশ্বাস স্থাপন করতে পারেননি, তবে সাম্প্রদায়িক শক্তিপুষ্ট বর্বর দেশগুলির ফ্যাসিস্ট রণনীতির প্রতি অঙ্গুলি সংকেত করেছেন।

সমগ্র পৃথিবীর সাথে সাথে ভারতবর্ষের মর্মে ও মজ্জাতেও পশুশক্তির এই অবিরাম আক্রমণ চলেছিল। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পালাবদলের এই ধ্বংসাত্মক চেহারার পাশাপাশি জাতীয়স্তরেও নানা রাজনৈতিক-সামাজিক কূটকৌশল, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছিল। এমনই ধ্বংসাত্মক পটভূমিতে দাঁড়িয়ে কবি, রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করেছেন অন্তরের সবটুকু শ্রদ্ধা একত্র করে। রবীন্দ্রনাথের মানবতার বাণী, বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ, শাশ্বত কালের অভয়মন্ত্র কবি বুদ্ধদেবকে প্রাণিত করেছে। তিনি অনুভব করেছেন, সত্য-সৌন্দর্য-মঙ্গলের‌ চিরন্তন অভিজ্ঞান, রাবীন্দ্রিক পরিমণ্ডলের এই চিন্তাধারা সমগ্র ভারতবাসীকে দুঃখ ও লাঞ্ছনা সহ্য করবার শক্তি ও প্রেরণা জুগিয়েছিল সেদিন। কবিও বুঝেছিলেন জাতীয় জীবনে দুর্যোগের কালো আঁধার বা সঙ্কটের রাত্রিতে রবীন্দ্রনাথের বাণী অক্ষয়মন্ত্রের মতো প্রেরণা দেবে। মুমূর্ষু প্রাণে, জোগাবে শক্তি ও সাহস। কবিতার অস্তিমে পৌঁছে কবির দৃঢ় বিশ্বাস বাণীমূর্তি পেয়েছে শিল্পীতভাবে,

“অন্তরে লভেছি তব বাণী

তাই তো মানি না ভয়, জীবনেরই জয় হবে জানি।”

মুসোলিনীর ফ্যাসীবাদ এই সময় জার্মানে ফিরে এসেছিল। সেখানে হিটলারের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত ও নাৎসীবাদই ফ্যাসিজমের বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছিল সেদিন। ক্রমে সারা পৃথিবীতেই ফ্যাসীবাদী আগ্রাসন আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল। যদিও ইতিমধ্যেই জর্জি ডিমিট্রভের নেতৃত্বে সারা পৃথিবী জুড়ে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে united front গড়ে তোলার কথা ঘোষিত হয়। কিন্তু কমিউনিস্টের স্বাভাবিক বিরোধিতার কারণে ইঙ্গ-ফরাসি শক্তি তখন সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টায় এক হবার নীতি অনুসরণ করেননি। ফলে ঘটনা ধারা দ্রুত বিশ্বযুদ্ধের দিকে ধাবিত হতে থাকল। বিশ্বব্যাপী এই মারণযজ্ঞের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে বেদনাহত রবীন্দ্রনাথের মহাপ্রয়াণ ঘটল। বিশ্বরাজনীতির এই কুৎসিত দলাদলিতে, লোভ আর হিংসার প্রবল নির্লজ্জতায় দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথের মনে হয়েছিল এ পৃথিবী এক মহা হত্যাশালা। জাপানে যখন আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন তখন জাপানের নানা শিল্প প্রসঙ্গে আতিথ্য সেবার নানা গুণগান করেছিলেন। কিন্তু জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন। অন্তরের ধিক্কারবাণী জানিয়েছেন ‘বুদ্ধভক্তি’ (নবজাতক’) কবিতায়। মিউনিখ চুক্তি ও জার্মানির নাৎসী বাহিনীর অত্যাচার দেখে বিচলিত হয়েছেন মৃত্যুর কিছুদিন আগেও।

রবীন্দ্রনাথের এই মানবতাবাদী ভাবনা, মনুষ্যত্বের প্রতি আস্থা, সার্বিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানসিকতা বুদ্ধদেব বসুকে আকর্ষণ করেছিল। শিল্পীর স্বাধীনতায় বিশ্বাসী থেকেও জীবন যখন আক্রান্ত হয়েছে, কি রাজনীতি, কি আর্থ-সামাজিক রীতি—এসব কিছু থেকে দূরে সরে থাকতে পারেননি বুদ্ধদেব। এই বিপন্ন অস্তিত্বের কারণেই পরবর্তী সময়ে প্রগতি লেখক সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন (১৯৩৮)। ফ্যাসিস্ট বিরোধী লেখক শিল্পী সংঘের (১৯০২) কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জেকে যুক্ত করেছেন। বৃহত্তর রাজনীতির সঙ্গে জীবনের যোগ তিনি অনুসন্ধান করেছিলেন। ‘সব পেয়েছির দেশ’ প্রবন্ধে তিনি বলেছিলেন, “অপেক্ষাকৃত শান্তির সময়ে সাধারণ লোকের জীবন তার আপন কাজ, তার ছোটো ছোটো সুখ-দুঃখেই ভরে থাকে, কিন্তু স্বাস্থ্য যখন নষ্ট হয়। অশান্তি জেগে ওঠে, দুর্যোগ আসে ঘনিয়ে, তখনই সমগ্র জনসাধারণের মন রাজনীতি গ্রাস করে নেয়, কারণ তখন প্রত্যেকের ব্যক্তিগত জীবনে পড়ে আশঙ্কার ছায়া। আজকের দিনে পৃথিবীর সমস্ত দেশে এমনি একটি দারুণ দুঃসময় উপস্থিত। যুদ্ধের বাজারের নানা প্রতিবন্ধকতাকে সামাল দিয়েও বুদ্ধদেব কবি ও কবিতাকে সোজা রেখেছিলেন। মানুষের বিবেক বোধকে মূল্য দিয়ে মেরুদণ্ড সোজা রেখে চলবার, মনুষ্যত্ববোধকে জাগ্রত রাখবার সাধনাই তিনি করে গেছেন। ‘রবীন্দ্রনাথের প্রতি’ কবিতাটিও এ ভাবনার ব্যতিক্রম নয়।