অথবা, সভ্যতা কাকে বলে?
ভূমিকাঃ সভ্যতা ও সংস্কৃতি শব্দ দু’টি অনেক সময় সমার্থক শব্দরূপে ব্যবহার হলেও এদের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। নৃ-তত্ত্ববিদগণ সংস্কৃতি শব্দটিকে ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করেছেন। তাদের মতে জ্ঞান, বিশ্বাস, কলা, নৈতিকতা, আচার ব্যবহার এবং সমাজের সভ্য হিসেবে মানুষের অর্জিত অভ্যাস ও কর্মক্ষমতা সবই সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। ‘সভ্যতা’ বলতে তারা বুঝেন মনুষ্য সমাজের উন্নত স্তরে, শহরে এবং রাষ্ট্রে মানুষের যে কর্মকুশলতার আবির্ভাব ঘটেছে তার সমষ্টি।
সভ্যতার সংজ্ঞাঃ সমাজবিজ্ঞানে সভ্যতা শব্দটি সংস্কৃতির মতাে এতাে জনপ্রিয় বা বহুল ব্যবহৃত শব্দ নয়। আলফ্রেড ওয়েবার এ দু’টি শব্দের মধ্যে এভাবে পার্থক্য করেছেন যে, সভ্যতা হলাে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর এগুলাের সাহায্যে মানুষ যে কর্তৃত্ব খাটায় তাকে বুঝায়। আর সংস্কৃতি বলতে বুঝায় ললিতকলা বিষয়ক, ধর্মীয়, দার্শনিক এবং সমাজের অনুরূপ সৃষ্টিসমূহকে।
ম্যাকাইভার ও প্যাজ তাদের Society its Structure and change গ্রন্থে বলেন, “সভ্যতা বলতে আমরা বুঝি মানুষ তার জীবনধারণের ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকল্পে যে যান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সংগঠন সৃষ্টি করেছে তারই সমন্বিত রূপ।
লুইস হ্যানরী মর্গানের মতে, সভ্যতা হচ্ছে কুসংস্কার বর্জিত সমাজের চূড়ান্ত রূপ।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষের আচরণের দু’টি দিক রয়েছে- একটি সংস্কৃতি যা আচরণের ভেতরের দিক, অন্যদিক হচ্ছে আচরণের বাইরের দিক, যা সভ্যতা নামে অভিহিত হয়ে থাকে।
Leave a comment