অথবা, সত্তা বা পরম সত্তা কী?
ভূমিকাঃ তত্ত্ববিদ্যা বা সত্তাসম্পৰ্কীয় দর্শন, দর্শনের এমন একটি শাখা যেখানে জগতের মূল উপাদান বা সত্তার স্বরূপ ও সংখ্যাসম্পর্কিত বিষয়ে আলােচনা করা হয়ে থাকে।
সত্তা বা পরম সত্তাঃ যে সত্তা বা তত্ত্বের স্থিতি অন্য সত্তা বা তত্ত্বের ওপর নির্ভর করে না, যা স্বাধীন তাকে পরমসত্তা বা পরমতত্ত্ব বলে। এই সত্তাকে ব্যাখ্যা করা খুবই জটিল বলে মনে করেন দার্শনিকরা।
মােটামুটিভাবে প্রধানত দুটি অর্থে সত্তা কথাটিকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রথম অর্থে সত্তা বলতে বস্তুর মূল উপাদানকে বােঝায়। এদিক থেকে সত্তা বাস্তব সত্তাকে নির্দেশ করে। দ্বিতীয় অর্থে সত্তা কথাটি সৃষ্টির মূল আধার বা উৎসকে বােঝায়। এ অর্থে সত্তা কথাটি পরমসত্তাকে বােঝায়।
অতএব, সত্তা হল জগৎ ও জীবনের এক মৌলিক উপাদান যা কেবল জড়শক্তি নয়, কিংবা মনও নয়, আবার মননও নয়, বরং জড়শক্তির উৎস ও পরিচালক, নিয়ন্ত্রকস্বরূপ, সার্বভৌম ক্ষমতাধারী এমন এক বিধাতাপুরুষ, যিনি এ বৈচিত্র্যময় পৃথিবী ও তার অগণ্য জীবকুল তার সৃজনীশক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন।
ধর্মশাস্ত্রে এ সত্তাকে বলা হয় ঈশ্বর, আর দর্শনে এর নাম পরমসত্তা বা সারসত্তা। এখন এ সত্তার সংখ্যা এক না দুই, নাকি বহু, তা নিয়ে দার্শনিকদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যায়। ফলে দর্শনে একাত্ববাদ, দ্বৈতবাদ এবং বহুত্ববাদ নামক সত্তাসম্পর্কীয় মতবাদ উদ্ভব হয়েছে।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায়,দর্শনে যে বিষয়গুলাে আলােচিত হয়, তাদের মধ্যে সত্তাসম্পর্কীয় আলােচনা অন্যতম। কারণ ঈশ্বর আছে কি নেই, যদি থাকে তবে এক না বহু- এ সমস্ত আলােচনা-বিতর্কের শেষ নেই। ফলে দার্শনিকদের মধ্যেও মতবিরােধ ও মতানৈক্য পরিলক্ষিত হয়।
Leave a comment