অথবা, সংবিধান কিভাবে বিকশিত হয়? লিখ।
ভূমিকাঃ সংবিধান প্রধানত চারটি পৃথক পৃথক পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে। এ চারটি পদ্ধতি হচেছ- অনুমােদন, ইচ্ছাকৃত রচনা, ধারাবাহিক বিবর্তন এবং বিপ্লব। প্রত্যেক রাষ্ট্রেই এ পদ্ধতিগুলাের যে কোন একটি মাধ্যমে কিংবা একাধিক কারণে সংবিধান অর্জিত হয়ে থাকে। তবে সংবিধান প্রতিষ্ঠা করার বিবর্তনমূলক পদ্ধতি অন্যান্য পদ্ধতিসমূহের মধ্যে একটি। প্রত্যেক সরকারের উৎসই হলাে সংবিধান। তা গণতান্ত্রিক হােক বা অগনতান্ত্রিক হােক। বস্তুত যে কোন ধরনের সরকারের পথ নির্দেশকই হচ্ছে সংবিধান, সরকারের মৌলিক বিষয়াদির সংগে সংশ্লিষ্ট সকল বিধিবিধানকে অন্তর্ভুক্ত করে।
সংবিধানের সংজ্ঞাঃ অধ্যাপক হারমান ফাইনার, সংবিধানের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন যে, “মৌল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সুষম ব্যবস্থাই সংবিধান।” এ সংজ্ঞাটি বিশ্লেষণ করলে দুটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠে। যথাঃ i. সুষম ব্যবস্থা এবং ii. মৌলিক বিধানসমূহ।
সমাজের ক্রমবিকাশ ও সংবিধানের মৌল বিধানঃ সংবিধানের মৌল বিধানসমূহ মানবসমাজের ক্রমবিকাশেরই ফল। কোন মৌলিক বিধানই সময়ের বিরুদ্ধে চিরকাল স্থায়ী হতে পারে না। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস ও ধ্যানধারণার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন সাধিত হয়। এ পরিবর্তন সংবিধানের ক্ষেত্রেও আনয়ন করে। আবার মানব সমাজ সংবিধান লিখিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে না। কোন বিধানের গুরুত্ব অনুসারে সমাজ একে গ্রহণ করে ফেলে। সংবিধানে এটা সন্নিবেশিত না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ আইন ও প্রথাগত বিধানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বর্তমানে জনগণের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হন। সেখানে দলীয় ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক সরকারের একটি মৌলিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবেই গ্রহণ করা হয়।
উপসংহারঃ আধুনিককালে বিভিন্ন রাষ্ট্র বহুলাংশে অসংখ্য, সংবিধিত, প্রথাগত বিধান ও শাসক কর্তৃপক্ষের নির্দেশ দ্বারা শাসিত হয়। এদের মাধ্যমেই নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য সুনির্দিষ্টভাবে সংরক্ষিত করার ব্যবস্থা করা হয়। সুতরাং এ কথা বলা অযােক্তিক হবে না যে, “সংবিধান তৈরি করা যায় না, বিকাশত হয়।
Leave a comment