অথবা, সংবিধানের প্রকারভেদ উল্লেখ কর।
অথবা, সংবিধানের শ্রেণিকরণ তুলে ধর।
অথবা, সংবিধানের শ্রেণিবিন্যাস উল্লেখ কর।
ভূমিকাঃ সংবিধান হলাে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক নীতি এবং একটি দেশের মেরুদণ্ডস্বরূপ। সংবিধান হলাে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল চালিকাশক্তি। সংবিধানের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। সংবিধান ছাড়া কোন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। সংবিধান হচ্ছে যে কোন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন যা অন্যান্য আইন এবং সরকারকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে। প্রতিটি স্বাধীন দেশের জন্য সংবিধান অত্যাবশ্যক।
সংবিধানের শ্রেণিবিভাগঃ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সংবিধানের প্রকৃতি ও যথার্থ স্বরূপ জানার সুবিধার্থে সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ করা হয়ে থাকে। সংবিধান বা শাসনতন্ত্রের প্রকারভেদ বা শ্রেণিবিভাগ নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মতভেদ দেখা যায়। যেমনঃ
ক. আইনসভার মাধ্যমে প্রণীত এবং বিভিন্ন সময় থেকে প্রচলিত বিভিন্ন প্রকার প্রথার সমন্বয়ে গঠিত এ দুটি দৃষ্টিকোণ থেকে সংবিধানকে মূলত দুইভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ
i. লিখিত সংবিধান; ও
ii.অলিখিত সংবিধান।
খ. সংশােধনের পদ্ধতি অনুযায়ী সংবিধানকে দুই শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে। যথাঃ
i. সুপরিবর্তনীয় সংবিধান; ও
ii. দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধান।
গ. ক্ষমতা বণ্টনের পদ্ধতি অনুযায়ী সংবিধানেরকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
i. এককেন্দ্রিক সংবিধান;
ii. যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধান;
iii. রাষ্ট্রপতিশাসিত সংবিধান; এবং
iv. সংসদীয় সংবিধান।
ঘ. সরকার পরিচালনায় জনসাধারণের অংশগ্রহণের নীতি অনুযায়ী সংবিধানকে দুই শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। যথাঃ
১. গণতান্ত্রিক সংবিধান; এবং
২. অভিজাততান্ত্রিক সংবিধান।
ঙ. রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে সংবিধানকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
i. নীতি সংবদ্ধ সংবিধান; এবং
ii. নিরপেক্ষ সংবিধান।
চ. মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে শাসনতন্ত্রকে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
i. বুর্জোয়া সংবিধান; এবং
ii. শ্রমিক শ্রেণির সংবিধান।
উপসংহারঃ সুতরাং বলা যায়, সংবিধান সম্পর্কে যতই মতপার্থক্য থাকুক না কেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা উপযুক্ত প্রশ্নে সংবিধানের যেসব শ্রেণিবিন্যাস দেখিয়েছেন তার সবগুলােই একটি রাষ্ট্রের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।
Leave a comment