‘সংবাদ প্রভাকর’ সাময়িক পত্রিকা সম্পর্কে যা জান লেখ।
উত্তর: ‘বঙ্গদূত’ এর পরেই শ্রেষ্ঠ উল্লেখ্য পত্রিকা গুপ্তকবির ‘সংবাদ প্রভাকর’। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সেকালের সবচেয়ে
শক্তিশালী সাংবাদিক ছিলেন। তার আত্মপ্রকাশের একমাত্র বাহন ছিল সংবাদ প্রভাকর। সমকালীন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, শিক্ষা, ধর্ম, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে জাতীয় মতবাদ গঠনে সংবাদ প্রভাকরের ভূমিকা কেবল একচ্ছত্র ছিল না, সেকালের প্রবীণ কাব্য সাহিত্যেরও ধাত্রীরূপা ছিল এ পত্রিকা।
১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ জানুয়ারি ‘সংবাদ প্রভাকর’ প্রকাশিত হয়। পাথুরিয়াঘাটের যোগেন্দ্রমোহন ঠাকুর ছিলেন এর পৃষ্ঠপোষক- ঈশ্বরগুপ্ত ছিলেন সম্পাদক। প্রথমবারে ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মে পর্যন্ত পত্রিকাটি অতি সম্ভ্রমের সঙ্গে মুদ্রিত হয়েছিল। এ সময়ে যোগেন্দ্রমোহনের মৃত্যুর কারণে সংবাদ প্রভাকরের প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায়। চার বছর পরে ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১০ আগস্ট পত্রিকাটি পুনঃপ্রকাশিত হয়। প্রতি সপ্তাহে পত্রিকার তিনটি করে সংখ্যা প্রকাশিত হতো। ১৮৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুন সংবাদ প্রভাকর সর্বপ্রথম দৈনিক আকারে প্রকাশিত হয়। এটিই বাংলা ভাষার প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র। দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ সরবরাহ করে সাহিত্য রচনার সুযোগ কম থাকে, তাই পৃথকভাবে প্রকাশিত হলো মাসিক সংবাদ প্রভাকর। সংবাদ প্রভাকরের মাধ্যমে গুপ্তকবি নাগরিক বাঙালির জীবনে প্রখর স্বাদেশিকতা ও স্বাতন্ত্র্যবোধ অবারিত করে দিয়েছিলেন। কবিতা লিখে নিজের স্বদেশপ্রেমের আদর্শ তিনি প্রকাশ করেছিলেন।
“কত রূপ স্নেহ করি, দেশের কুকুর ধরি
বিদেশের ঠাকুর ফেলিয়া।”
এ উগ্র আদর্শবাদকেই সংবাদ প্রভাকরের পৃষ্ঠায় শিক্ষিত বাঙালির জন্য লালন করা হয়েছিল। যেমন গদ্য রচনাতে তেমনি নবীন সমাজ চেতনার সৃজনেও সংবাদ প্রভাকর সেদিন বাংলাদেশের নবজীবনের সঞ্চার করেছিল।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment