অথবা, চর্যাপদে বিধৃত লৌকিক জীবনের পরিচয় দাও
সাহিত্য রচনা করতে পারেন শাক কেননা তারকালকে বাদ দিয়ে সাহিত্য রচনা করতে পারেন না। কেননা তারা সামাজিক জীব সাহিত্যবস্তুতে সমকালীন জীবন চিত্রিত হয়ে পড়ে। চর্যাপদের ক্ষেত্রেও একথা সমানভাবে প্রযোজ্য। বরং বলা যায় বৌদ্ধ সহজীয়া মতের প্রকাশের সাথে সাথে চর্যাকারগণ সামাজিক অবস্থার যেসব কথা লিপিকৃত করেছেন তা থেকে তৎকালীন জীবনের একটি পূর্ণাঙ্গ সামাজিক রূপরেখা প্রকাশিত হয়ে পড়ে। চর্যাপদে আমরা যে সমাজ ব্যবস্থার পরিচয় পাই তা আজ থেকে হাজার বছর আগেকার। বলা যায় চর্যাপদগুলোর সামাজিক দলিলমূল্য অনেকখানি। চর্যাপদে প্রাপ্ত সমাজচিত্রের রেখাচিত্রটি নিচে তুলে ধরা হলো:
১. মানবগোষ্ঠী বা জনগোষ্ঠীর পরিচয়, তাদের আচরণ খাদ্যবস্ত্র বাসস্থানের চিত্র, ২. অর্থনৈতিক অবস্থার পরিচয়। তাদের দারিদ্র্য ও জীবিকার চিত্র,
৩. সামাজিক উৎস বা অনুষ্ঠানের পরিচয়,
৪. প্রেম-দাম্পত্যের পরিচয় এবং
৫. ভৌগোলিক চিত্রের পরিচয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলা সাহিত্য বিচিত্র মানুষের হৃদয়ানুভূতির ফসল। সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের অধিকারী আমাদের এ বাংলাদেশ। মূলত প্রাচীন যুগের বাংলা সাহিত্যের প্রকৃত ও সম্ভাব্য নিদর্শনসমূহের ভাববস্তু বিশ্লেষণ করলে মোটামুটি হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের বিবিধ উপকরণ পাওয়া যায়। সেই জন্য চর্যাপদেও প্রাচীন বাংলার সমাজচিত্রটি প্রতিফলিত হয়েছে।
Leave a comment