অথবা, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের রচনাকাল বিষয়ে পণ্ডিতদের মতামত ব্যক্ত কর
অথবা, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের লিপিকাল বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা কর
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” কাব্য একটি বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। এটি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন। রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলাকে অবলম্বন। করে এর কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। কিন্তু রচনাকাল নিয়ে পণ্ডিতমহলে বেশ মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। পুঁথিতে প্রাপ্ত একটি চিরকুটের হিসাব অনুযায়ী পুঁথিখানি ১৬৮২ খ্রিষ্টাব্দে বনবিষ্ণুপুরের রাজগ্রন্থাগারে সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু পুঁথিটি চিরকুট অপেক্ষা প্রাচীনতর। পুঁথিটির রচনাকালের সাথে লিপিকালের একটি সাযুজ্য রয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন-“নানা প্রত্নলিপির সঙ্গে পুঁথির লিপির মিল দেখে মনে হয় এ পুঁথিটি চতুর্দশ শতাব্দীর লেখা।” “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” কাব্যের পুঁথিতে তিনটি হাতের লেখা রয়েছে-
একটি প্রাচীন, একটি প্রাচীন লিপির অনুকরণ, তৃতীয়টি অপেক্ষাকৃত পরবর্তীকালের। এ প্রসঙ্গে সুকুমার সেন লিখেছেন-“শ্রীকৃষ্ণকীর্তন (প্রাপ্ত) পুঁথি প্রাচীন নয় তবে ভাষায় একটি প্রাচীন, একটি প্রাচীন লিপির অনুকরণ, তৃতীয়টি অপেক্ষাকৃত পরবর্তীকালের। এ প্রসঙ্গে সুকুমার সেন লিখেছেন-“শ্রীকৃষ্ণকীর্তন (প্রাপ্ত) পুঁথি প্রাচীন নয় তবে ভাষায়
সুতরাং আলোচনা-সমালোচনা যাই হোক না কেন শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের পুঁথিটি পঞ্চদশ শতাব্দীর সূচনাতে বা মাঝামাঝি যে কোনো সময়ে লেখা বলে ভাষাতাত্ত্বিক পণ্ডিতমহল মনে করেন।
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য কে, কিভাবে আবিষ্কার করেন:
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রথম কাব্যগ্রন্থ “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” কাব্য। এটি রাধাকৃষ্ণের প্রেমের উপাখ্যান। এটি আবিষ্কৃত হওয়ার পর মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ধারায় পূর্ণতা আসে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং পুঁথিশালার অধ্যক্ষ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ সংবাদ পান যে, পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বনবিষ্ণুপুরের কাছে কাকিল্যা গ্রামে দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় নামক এক ব্রাহ্মণের বাড়িতে হাতের লেখা কিছু পুরাতন পুঁথি আছে। এ সন্ধানের প্রেক্ষিতে তিনি ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) সেখানে যান এবং ঐ ব্রাহ্মণের গোয়াল ঘর থেকে তিনি অযত্নে রক্ষিত একরাশ পুঁথির সঙ্গে এ গ্রন্থটি পান। এ গ্রন্থের প্রথম দুটি এবং শেষ পৃষ্ঠা পাওয়া যায়নি। এভাবে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” কাব্য আবিষ্কৃত হয়।
Leave a comment