নদী-উপত্যকার মধ্যে সিদ্ধহােল তৈরি হলে শুষ্ক উপত্যকা ও অন্ধ উপত্যকা সৃষ্টি হয়। নদীর প্রবাহপথের যেখানে সিঙ্কহােল থাকে সেখানে নদী ওই সিঙ্কহােলে প্রবেশ করে ভূ-অভ্যন্তর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সিঙ্কহােলের পরের নদী-উপত্যকার অংশটি তখন জলশূন্য হয়ে পড়ে। নদী-উপত্যকার এই জলশূন্য অংশটি হল শুঙ্ক উপত্যকা। আর নদীপ্রবাহের যে অংশ সিঙ্কহােলে প্রবেশ করে সেই অংশটি কানাগলির মতাে ওখানে হঠাৎ শেষ হয়ে যায়। নদীর এই অংশটি হল অন্ধ উপত্যকা।
শুষ্ক উপত্যকা ও অন্ধ উপত্যকার বৈশিষ্ট্য
১. প্রচুর বৃষ্টিপাতের সময় শুষ্ক উপত্যকার মধ্য দিয়ে সামান্য পরিমাণ জল প্রবাহিত হলেও বর্ষার পর উপত্যকাটি পুনরায় শুকনাে হয়ে যায়।
২. অন্ধ উপত্যকায় নদীর গতি অব্যাহত থাকে বলে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে অন্ধ উপত্যকাটি পরিত্যক্ত উপত্যকা অপেক্ষা গভীর হয়। পরিত্যক্ত উপত্যকাটি অন্ধ উপত্যকা অপেক্ষা অনেক উঁচুতে অবস্থান করে।
৩. বর্ষাকালে নদীবাহিত জলের সমস্তটাই সিঙ্কহােলের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করতে পারে না বলে অন্ধ উপত্যকা সাময়িকভাবে হ্রদে পরিণত হয়।
অ্যাকুইফার
অ্যাকুইফার শব্দের উৎপত্তি দুটি ল্যাটিন শব্দ Aqua এবং Ferre থেকে। Aqua শব্দের অর্থ জল এবং Ferre শব্দের অর্থ বহনকারী। অতএব, অ্যাকুইফার শব্দের অর্থ জলবহনকারী বা জলবাহী স্তর। যে ভূতাত্ত্বিক স্তরের মধ্য দিয়ে জল প্রবাহিত হয়, পরিপূরিত হয়, ক্ষরিত হয় এবং জলের ভাণ্ডাররূপে অবস্থান করে তাকে অ্যাকুইফার বলে। অ্যাকুইফার ছাড়া ভৌমজল সৃষ্টি হতে পারে না। বৃষ্টির জল ও বরফগলা জল মৃত্তিকার মধ্য দিয়ে প্রবেশ্য শিলাস্তরে সঞ্ছিত হলে ভৌমজলের ভাণ্ডার গড়ে ওঠে।
অ্যাকুইফারের সৃষ্টি
অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের ওপর প্রবেশ্য শিলাস্তর অবস্থান করলে, ওই প্রবেশ্য শিলাস্তরে জল সঞ্চিত হয়ে যে অ্যাকুইফার গঠিত হয় তাকে মুক্ত অ্যাকুইফার বলে। দুটি অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের মধ্যে থাকা প্রবেশ্য শিলাস্তরে জল সঞ্চিত হয়ে যে অ্যাকুইফার গঠিত হয়, তাকে আবদ্ধ অ্যাকুইফার বলে। মুক্ত অ্যাকুইফারের ওপরে চামচের মতাে অথবা লেন্সের মতাে অল্প পরিসর স্থানে অপ্রবেশ্য শিলাস্তর অবস্থান করলে ওই অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের ওপরে জলবাহী স্তরে সামান্য কিছু জল সঞ্চিত হয়। একে স্থানীয় বা পার্চড অ্যাকুইফার বলে। প্রবেশ্য শিলাস্তরে এইভাবে জলের সঞ্চয় ঘটিয়ে বিভিন্ন প্রকার অ্যাকুইফার সৃষ্টি হয়।
Leave a comment