অথবা , যে দেশে ব্যাধ নাই, বিপদ নাই, সেই দেশের হরিণশিশুর মতো নির্ভীক কৌতূহলে দাঁড়াইয়া চাহিদা চাহিদা দেখিতে থাকে – ব্যাখ্যা কর
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সমাপ্তি’ গল্পে মৃন্ময়ী তার বাবার অত্যন্ত আদরের কন্যা, তাই তার দুরন্তপনার শেষ নেই। মৃন্ময়ী দেখতে শ্যামবর্ণ, ছোটো কোঁকড়া চুল পিঠ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। মস্ত মস্ত কালো দুটি চোখে লজ্জা নেই, ভয় নেই, না আছে হাবভাবলীলার লেশমাত্র। গ্রামের সকল সমবয়সি মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে অথচ শুধু বাদ আছে মৃন্ময়ী তাই তার মাকে অনেক নিন্দা ও কটু কথাও শুনতে হয়। এদিকে মৃন্ময়ী ছিল অত্যন্ত চঞ্চল। গ্রামের পুরুষ লোকেরা তাকে স্নেহভরে পাগলী ডাকে। আর গ্রামের নারীরা তার উচ্ছৃঙ্খলতায় অতিষ্ঠ থাকে। গ্রামের নারীদের প্রতি তার অবজ্ঞার সীমা নেই অথচ তার খেলা পাড়ার কম বয়সি ছেলেদের সাথে। সে ঘনে-বাদাড়ে-নদীর ঘাটে, এ বাড়ি ও বাড়ি দুরন্তপনায় মেতে থাকে। গ্রামে যেদিন জমিদারের জাহাজ নদীর ঘাটে লাগে সেদিন সাধারণ মানুষের লজ্জার অন্ত থাকে না এবং সবাই শশব্যস্ত হয়ে উঠে। এমনকি কেউ ঘাটে আসে না। আর মৃন্ময়ী একটা উলঙ্গ শিশুকে কোলে নিয়ে কোঁকড়া খোলা চুল পিঠ পর্যন্ত ছেড়ে দিয়ে এসে উপস্থিত হয় ঘাটে আর তার বিস্তর বর্ণনা করে ফিরে গিয়ে তার বন্ধুদের কাছে লেখক মৃন্ময়ীকে স্বাধীন হরিণ শিশুর সাথে তুলনা করেছেন।
Leave a comment