শিল্প ও অর্থনীতি 

ভূমিকা 

শিল্প ও অর্থনীতি একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। শিল্পের উন্নয়ন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত। শিল্পের মাধ্যমে নতুন পণ্য উৎপাদন হয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়,যা মানুষের চাহিদা পূরণ করে এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করে। শিল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটে, যা একটি দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়তা করে। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের শিল্পখাত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের শিল্পখাত দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।

শিল্প ও অর্থনীতির সম্পর্ক 

শিল্প হল এমন একটি অর্থনৈতিক কার্যকলাপ যার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ, শ্রম এবং মূলধন ব্যবহার করে পণ্য বা পরিষেবা উৎপাদন করা হয়। শিল্পের উৎপাদিত পণ্য, যেমন খনিজ সম্পদ থেকে ধাতু, কৃষি পণ্য থেকে খাদ্য এবং জ্বালানী থেকে বিদ্যুৎ। অন্যদিকে, অর্থনীতি হল এমন একটি সামাজিক বিজ্ঞান যা মানুষের সম্পদ উৎপাদন, বিতরণ এবং ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করে। অর্থনীতির প্রধান বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে উৎপাদন, ভোগ, বিনিময়, বিতরণ এবং অর্থ। শিল্প ও অর্থনীতি একে পরিপূরক হিসাবে কাজ করে। তাই, একটি দেশের শিল্পের উন্নয়ন মানে অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

অর্থনীতিতে শিল্পের গুরুত্ব 

অর্থনীতিতে শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। শিল্প হলো একটি দেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা পণ্য এবং পরিষেবা উৎপাদনের সাথে জরিত। শিল্প দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

অর্থনীতিতে শিল্পের গুরুত্ব নিম্নরূপ:

  • শিল্প হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি। শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য এবং পরিষেবা দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি সঞ্চার করে। শিল্পের উন্নয়ের ফলে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পায়।
  • শিল্প হলো নতুন কর্মসংস্থানের অন্যতম প্রধান উৎস। শিল্পের উন্নায়নের ফলে নতুন নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়। শিল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের বেকারত্বের হার হ্রাস পায়। যা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। 
  • শিল্পের মাধ্যমে রপ্তানি বৃদ্ধি পায়। শিল্পজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়।
  • শিল্পের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত আবিষ্কার হয়। আবার শিল্পের বিকাশের জন্য নতুন প্রযুক্তির প্রয়োজন হয়।  যা দেশের প্রযুক্তিগত উন্নায়ন বয়ে আনে ও অর্থনীতিতে অবদান রাখে।

বাংলার শিল্প ও অর্থনৈতিক ইতিহাস 

বাংলার প্রাচীন ইতিহাসে শিল্প ও অর্থনীতির একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। প্রাচীন বাংলায় কৃষিই ছিল প্রধান অর্থনৈতিক ক্ষেত্র। তবে, প্রাচীন বাংলায় কুটির শিল্পও ব্যাপকভাবে সম্রিধি লাভ করেছিল। বস্ত্র শিল্প, মৃৎশিল্প, ধাতুশিল্প, কাঠের কাজ, এবং অন্যান্য কুটির শিল্পে পৃথিবীজুড়ে বাংলায় বিশেষ খ্যাতি ছিল।

প্রাচীন বাংলায়  ধান, গম, পাট, আলু, শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি প্রধান ফসল উৎপাদিত হত। বাংলার বস্ত্র শিল্প ছিল জগদ্বিখ্যাত। মসলিন, বেনারসি, জামদানি, ইত্যাদি ছিল বাংলার সেরা বস্ত্র, যা সারা বিশ্বে রপ্তানি হত। পাশাপাশি, বাংলার মৃৎশিল্পও অনেক উন্নত ছিল এবং  স্বর্ণ, রৌপ্য, তামা, লোহা, ইত্যাদি ধাতু দিয়ে নানা ধরনের শিল্পকর্ম তৈরি করা হত। সেইসময় বাংলার বনিকেরা বাণিজ্য তরি নিয়ে দেশ বিদেশে সওদা করতে যেত। 

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্পের প্রভাব 

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্পের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প খাত দেশের মোট জিডিপির প্রায় এক তৃতীয়াংশ অবদান রাখে। এছাড়াও, শিল্প খাত দেশের কর্মসংস্থান, রপ্তানি, আর্থিক খাত এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিল্প খাত বাংলাদেশের কর্মসংস্থানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৩ সালে শিল্প খাতে প্রায় দেড় কোটি মানুষ কর্মরত ছিল। দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ২৫% শিল্প খাত থেকে আসে। এটি রপ্তানি আয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫% ছিল শিল্প পণ্য থেকে।

বাংলাদেশের শিল্প কাঠামো 

বাংলাদেশের শিল্প কাঠামো বেশ বৈচিত্র্যময়। আকার অনুসারে,কাঠামো অনুসারে একে বিভিন্ন ভাবে ভাগ করা যায়।

শিল্পের আকার অনুসারে একে তিন ভাগে ভাগ করা যায়

১. বৃহৎ শিল্প: এই ধরনের শিল্পের বিনিয়োগ ২৩০ কোটি টাকার বেশি। এই ধরনের শিল্পগুলি সাধারণত উচ্চ প্রযুক্তি ও বড় আকারের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে। এই শিল্পগুলির উৎপাদন ক্ষমতা বেশি এবং তারা বিপুল পরিমাণে পণ্য উৎপাদন করে। উদাহরণ হল সিমেন্ট, ইস্পাত, কাগজ, মোটরগাড়ি, রাসায়নিক পণ্য ইত্যাদি।

২. মাঝারি শিল্প : এই ধরনের শিল্পের বিনিয়োগ ২০ কোটি টাকা থেকে ২৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত। এগুলি সাধারণত তুলনামূলকভাবে কম প্রযুক্তি ও মাঝারি আকারের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে। এই ধরনের শিল্পগুলির উৎপাদন ক্ষমতা বৃহৎ শিল্পের তুলনায় কম কিন্তু ছোট শিল্পের তুলনায় বেশি। এর উদাহরণ হল চামড়াজাত পণ্য, কাচের পণ্য, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিক পণ্য ইত্যাদি।

৩. খুদ্র ও কুটির শিল্প: এই ধরনের শিল্পের বিনিয়োগ ২০ কোটি টাকার কম। এগুলি সাধারণত স্বল্প প্রযুক্তি ও ছোট আকারের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে। এর উৎপাদন ক্ষমতা খুবই কম এবং তারা সাধারণত স্থানীয় বাজারে পণ্য বিক্রি করে। এই ধরনের শিল্পগুলির উদাহরণ হল হস্তশিল্প, তাঁতশিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, মৃৎশিল্প, গৃহশিল্প ইত্যাদি।

কাঠামো অনুসারে শিল্পের শ্রেণীবিভাগ

শিল্পের কাঠামো অনুসারে একে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:

১. চক্রীয়: এই ধরনের শিল্পগুলির চাহিদা অর্থনীতির সাধারণ অবস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। অর্থনীতির উন্নতি হলে এগুলোর চাহিদাও বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনীতির মন্দা হলে এই ধরনের শিল্পগুলির চাহিদা হ্রাস পায়। এগুলির উদাহরণ হল টেক্সটাইল, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ইত্যাদি।

২. গতানুগতিক: এই ধরনের শিল্প গুলোর চাহিদা অর্থনীতির সাধারণ অবস্থার সাথে খুব একটা সম্পর্কিত নয়। অর্থনীতির উন্নতি বা মন্দার সাথে সাথে এগুলোর চাহিদা তেমন একটা পরিবর্তন হয় না। এই ধরনের শিল্পগুলির উদাহরণ হল প্রয়জনিয় খাদ্য, জন্ত্রপাতি, সিগারেট, ওষুধ ইত্যাদি।

৩. সেবা শিল্প: এই শিল্পখাত গুলি পণ্য উৎপাদন করে না, বরং সেবা প্রদান করে। এর চাহিদা অর্থনীতির সাধারণ অবস্থার সাথে কমবেশি সম্পর্কিত। এই ধরনের শিল্পগুলির উদাহরণ হল পরিবহন, ব্যাংকিং, বীমা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি।

রপ্তানিমুখী শিল্প ও অর্থনীতি 

রপ্তানিমুখী শিল্প হল এমন শিল্প যা স্থানীয় বাজারের জন্য নয়, বরং বিদেশি বাজারের জন্য পণ্য উৎপাদন করে। রপ্তানিমুখী শিল্প অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয় বৃদ্ধি করে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে, এবং আর্থিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।

রপ্তানিমুখী শিল্পের অর্থনৈতিক প্রভাব গুলি নিম্নরূপ:

  • বৈদেশিক মুদ্রার আয় বৃদ্ধি: রপ্তানিমুখী শিল্প বিদেশে পণ্য বিক্রির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার আয় বৃদ্ধি করে। বৈদেশিক মুদ্রার আয় বৃদ্ধি হলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী হয় এবং আমদানি ব্যয় কমানো সম্ভব হয়।
  • কর্মসংস্থান সৃষ্টি: রপ্তানিমুখী শিল্পে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্প হল সবচেয়ে বড় রপ্তানিমুখী শিল্প, যা দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ২০% যোগান দেয়।
  • আর্থিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত: রপ্তানিমুখী শিল্প আর্থিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। রপ্তানি বৃদ্ধির ফলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পায়, যা বিনিয়োগ ও উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, রপ্তানিমুখী শিল্পে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ফলে জনগণের আয় বৃদ্ধি পায়, যা ভোগ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রপ্তানিমুখী শিল্পের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তৈরি পোশাক শিল্প ছাড়াও, বাংলাদেশে চামড়া, কৃষিজাত পণ্য, ওষুধ, এবং ইলেকট্রনিক্স শিল্পের রপ্তানি উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব। এজন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে।

অর্থনীতিতে কুটির শিল্পের অবদান 

কুটির শিল্প হল এমন শিল্প যা স্থানীয় বা গ্রামীণ জনগণের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের জন্য ক্ষুদ্র পরিসরে পরিচালনা হয়। কুটির শিল্প অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে, দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করে, এবং ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কুটির শিল্পের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে কুটির শিল্পের প্রধান শাখাগুলির মধ্যে রয়েছে:

বস্ত্র ও পাট শিল্প: বাংলাদেশে কুটির শিল্পের সবচেয়ে বড় শাখা হল বস্ত্র ও পাট শিল্প। এই শিল্পে সুতা, কাপড়, লুঙ্গি, গামছা, শাড়ি এবং পাটজাত পণ্য উৎপাদন করা হয়।

কারুশিল্প: বাংলাদেশে কুটির শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা হল কারুশিল্প। এই শিল্পে কাঠের কাজ, ধাতুর কাজ, বাঁশ ও বেতের কাজ, এবং পোশাক ও গৃহস্থালীর সামগ্রী তৈরি করা হয়।

খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ: বাংলাদেশে কুটির শিল্পের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হল খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ। এই শিল্পে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য প্রক্রিয়াজাত করা হয়।

বাংলাদেশের কুটির শিল্পের উন্নয়নের জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।  সরকার কুটির শিল্পের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা প্রদান করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে কর ছাড়, ভূমি অধিগ্রহণে ছাড়, এবং ঋণ সহায়তা। এছাড়াও সরকার কুটির শিল্পের জন্য প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি চালু করেছে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে।

অর্থনীতিতে পোশাক শিল্পের অবদান 

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেডিমেড গার্মেন্টস (আরএমজি) খাত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং বিভিন্ন দিকে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। 

আরএমজি খাত বাংলাদেশের মোট জাতীয় রপ্তানি আয়ের দুই তৃতীয়াংশ অবদান রাখে। এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির একটি প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে, ধারাবাহিকভাবে সামগ্রিক অর্থনীতির চেয়ে বেশি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বৃদ্ধি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। এটি বাংলাদেশের বাণিজ্য ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় অবদান রাখে।

এই খাত বাংলাদেশের বৃহত্তম কর্মক্ষেত্র, যা সরাসরি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের বাবস্থা করে।  আরএমজি খাত পরিবহন, লজিস্টিক্স এবং খুচরা বাণিজ্যের মতো বিভিন্ন শিল্পের মাধ্যমে আরও লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনধারণে পরোক্ষভাবে সহায়তা প্রদান করে।

আরএমজি খাতে বেশিরভাগ কর্মী নারী , যা তাদের ক্ষমতায়ন ও আর্থিক স্বাধীনতায় অবদান রাখছে।

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প 

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থাপনা, ধর্মীয় স্থান, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, পৌরাণিক ইতিকথা ইত্যাদির সমন্বয়ে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প অনন্য। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের প্রধান আকর্ষণগুলি হল:

  • প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিশ্বের অন্যতম। দেশের দক্ষিণে রয়েছে সুন্দর সমুদ্র সৈকত, এবং বিভিন্ন অঞ্চলে  রয়েছে পাহাড়, বন, হাওর, নদী, লেক ইত্যাদি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কুয়াকাটা, কক্সবাজার, টেকনাফ, সুন্দরবন, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, সিলেট ইত্যাদি পর্যটন কেন্দ্র।
  • ঐতিহাসিক স্থাপনা: বাংলাদেশ একটি ঐতিহাসিক ঐতিহ্যমণ্ডিত দেশ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে প্রাচীন স্থাপনা, মন্দির, মসজিদ, দুর্গ, স্থাপত্যের নিদর্শন ইত্যাদি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সোনারগাঁও, লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, রাজবাড়ী, ষাট গম্বুজ মসজিদ, শাহজালাল দরগাহ, কান্তজী মন্দির, বৌদ্ধ বিহার ইত্যাদি।
  • ধর্মীয় স্থান: বাংলাদেশ একটি ধর্মপ্রাণ দেশ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় স্থান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি ধর্মের বিভিন্ন মন্দির, মসজিদ, বিহার, চার্চ ইত্যাদি।
  • সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য: বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সমৃদ্ধ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের লোকজ সংস্কৃতি, লোকজ গান, লোকজ নাচ, লোকজ ঐতিহ্য ইত্যাদি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জারিগান, ভাটিয়ালি, বাউল গান, যাত্রাপালা, নাটক, কবিগান, লোকজ নাচ, লোকজ পোশাক, খাবার ইত্যাদি।
  • সুন্দরবনঃ সুন্দরবন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং এটি একটি অনন্য প্রাকৃতিক সম্পদ। সুন্দরবন পর্যটকদের জন্য একটি স্বপ্নের গন্তব্য। সুন্দরবনে পর্যটকরা বন্যপ্রাণী দেখা, নৌকা ভ্রমণ, বনভ্রমণ ইত্যাদির সুযোগ পান। সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে বাঘ,, হরিণ, কুমির, সাপ ইত্যাদি। ভ্রমণে পর্যটকরা সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। সুন্দরবনের বনভ্রমণে পর্যটকরা বনজীবনের সাথে পরিচিত হতে পারেন।

২০২২ সালে, বিদেশী পর্যটকদের থেকে আয় হয়েছিল প্রায় ৬০ কোটি মার্কিন ডলার। দেশীয় পর্যটকদের থেকে আয় হয়েছিল প্রায় ১৬ কোটি মার্কিন ডলার।বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা সম্ভব। দেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা আয়, এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।

অর্থনীতির নতুন ধারাঃ তথ্য প্রযুক্তি শিল্প

তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) শিল্প হল একটি দ্রুত বর্ধনশীল এবং বিবর্তনশীল শিল্প যা অর্থনীতির নতুন ধারা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আইটি শিল্পের মূল লক্ষ্য হল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) পণ্য ও সেবা উৎপাদন ও সরবরাহ করা। আইসিটি পণ্য ও সেবাগুলির মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, সফটওয়্যার, ইন্টারনেট, ডেটা সেন্টার, ইত্যাদি।

আইটি শিল্পের অর্থনৈতিক প্রভাব ব্যাপক। আইটি শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা আয়, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।

 আইটি শিল্পের সুবিধাগুলি:

  • আইটি শিল্পে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। আইটি শিল্পে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মসংস্থান লাভ করে।
  • আইটি শিল্পের পণ্য ও সেবাগুলি বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
  • আইটি শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে।

বাংলাদেশে আইটি শিল্পের সম্ভাবনা ব্যাপক। বাংলাদেশের তরুণ জনসংখ্যা, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী, এবং ক্রমবর্ধমান ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা আইটি শিল্পের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের আইটি শিল্প দ্রুত বর্ধনশীল হয়েছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের আইটি খাতের আয় ছিল প্রায় দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩০ সালে এই আয় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে কৃষির শিল্পায়ন 

বাংলাদেশের কৃষির শিল্পায়ন অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কৃষির শিল্পায়নের ফলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে কৃষকরা একই জমিতে আগের চেয়ে বেশি ফসল উৎপাদন করতে পারছেন। এর ফলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে। 

কেননা, বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই, কৃষির শিল্পায়নের ফলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে। কৃষির শিল্পায়নের ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। এই খাতে নতুন নতুন কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে উঠছে। এই শিল্পগুলিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে বেকারত্ব হ্রাস পাচ্ছে এবং মানুষের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কৃষির শিল্পায়নের ফলে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের কৃষি পণ্য রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়।  বাংলাদেশের কৃষির শিল্পায়নের সম্ভাবনা অনেক। বাংলাদেশের জলবায়ু ও ভূমি কৃষির জন্য অত্যন্ত অনুকূল। বাংলাদেশের কৃষিতে প্রচুর শ্রমশক্তি রয়েছে। এছাড়াও, বাংলাদেশের সরকার কৃষি উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে।

শিল্প বিপ্লব 

শিল্প বিপ্লব ছিল মানব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি ছিল এমন একটি সময় যখন অর্থনীতির ও ইতিহাসের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছিল। গ্রেট ব্রিটেন, ইউরোপ মহাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৭৬০ থেকে ১৮৪০ সালের মধ্যে কৃষি বিপ্লবের  ঘটেছিল। এই রূপান্তরের মধ্যে ছিল হাতের মাধ্যমে উৎপাদন পদ্ধতির পরিবর্তে মেশিনের ব্যবহার; নতুন রাসায়নিক শিল্প এবং লৌহ উৎপাদন প্রক্রিয়া; পানি শক্তি এবং বাষ্প শক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহার এবং যান্ত্রিক কারখানা ব্যবস্থার আবিষ্কার। শিল্প বিপ্লবের পৃথিবীর অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। 

অর্থনীতিতে শিল্প বিপ্লবের  প্রভাব:

ক) মেশিনের ব্যবহারের ফলে একই শ্রমশক্তি দিয়ে আগের চেয়ে বেশি পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছিল। এর ফলে অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

খ) নতুন পণ্য ও পরিষেবার আবিস্কারের ফলে মানুষের জীবনযাত্রা আরও সহজ ও আরামদায়ক হয়েছিল।

গ) শিল্প বিপ্লবের ফলে সামাজিক পরিবর্তন হয়েছিল। শহরগুলির জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং নতুন শ্রেণী গড়ে উঠেছিল।

ঘ) মেশিনের ব্যবহারের ফলে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পেয়েছিল। এর ফলে পণ্যের দাম কমে গিয়েছিল এবং ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছিল।

ঙ) নতুন পণ্যের উদ্ভাবনের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য বিক্রির সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

চ) শিল্প বিপ্লবের ফলে বিশ্বায়নের প্রসার ঘটেছিল। নতুন সব প্রযুক্তির আবিস্কারের ফলে সারা পৃথিবীর মানুষের মাঝে যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

শিল্প বিপ্লব একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যা বিশ্বের অর্থনীতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব 

বর্তমানে আমারা প্রবেশ করেছি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জুগে। এটি  ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি এবং সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), রোবোটিক্স, ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT), বিগ ডেটা, এবং ক্লাউড কম্পিউটিং এর মতো প্রযুক্তির অগ্রগতির  সমন্বয়ে এই নতুন বিপ্লব আগমন করেছে।

ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে, বিশ্ব এখন আগের চেয়ে বেশি সংযুক্ত। এটি ব্যবসা, শিক্ষা, যোগাযোগ, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল স্বয়ংক্রিয়করণ বা অটোমোশন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, এবং অন্যান্য প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে, অনেক কাজ এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা যায়। বলা হয়ে থাকে যে, যারা বেশি প্রযুক্তিতে এগিয়ে তারা তত বেশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের লাভ উঠাতে পারবে। তাই আমাদের বিশাল যুব সমাজ এটিকে সুযোগ হিসাবে নিতে পারে। 

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অর্থনীতিতে প্রভাব ব্যাপক। তবে, এটি এখনও একটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এর সঠিক ব্যবহার বিশ্বের অর্থনীতি এবং সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে।

বাংলাদেশের শিল্পপায়নের অন্তরায়

শিল্পে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অসীম তবে এর আরও উন্নতি সম্ভব।  বাংলাদেশে শিল্পপায়নের প্রধান বাধাগুলি হল:

  • উৎপাদন ক্ষমতা কম: বাংলাদেশের শিল্প খাতের উৎপাদনশীলতা তুলনামূলকভাবে কম। এর কারণ হল, শিল্প খাতে পুরাতন প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষ শ্রমশক্তির অভাব, এবং অবকাঠামোগত সমস্যা।
  • অপর্যাপ্ত পুঁজি: বাংলাদেশের শিল্প খাতে পুঁজির অভাব রয়েছে। এর কারণ হল, দেশীয় পুঁজির ঘাটতি এবং বিদেশী বিনিয়োগের অপ্রতুলতা।
  • দারিদ্র্য: বাংলাদেশে দারিদ্র্যতা বড় সমস্যা। এর ফলে, শিল্প খাতে দক্ষ শিক্ষিত শ্রমশক্তির অভাব রয়েছে।
  • অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি: বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল নয়। এর ফলে, শিল্প খাতে বিনিয়োগ ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।
  • জটিল আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া: বাংলাদেশের শিল্প খাতে জটিল আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রয়েছে। এর ফলে, শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
  • অস্পষ্ট আইন ও বিধিমালা: বাংলাদেশের শিল্প খাতে আইন ও বিধিমালা গুলিতে অস্পষ্টতা রয়েছে ফলে, শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় এবং রপ্তানিতে অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হতে হয়।

এই অন্তরায়গুলি দূর করা হলে, বাংলাদেশের শিল্পায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে এবং অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

শিল্পায়নের বাধাগুলি দূর করার জন্য এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। পুঁজির ঘাটতি পূরণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় করতে হবে। সরকারকে বিদেশী বিনিয়োগের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান। পাশাপাশি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিশ্চিত এবং শিল্প খাতের জন্য পরিষ্কার ও সহজ আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে। 

এই পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করে, বাংলাদেশ তার শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করতে পারবে এবং অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে পারবে।

বাংলাদেশে শিল্পায়নের উপায়

বাংলাদেশে শিল্পায়নের জন্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন অপরিহার্য। সরকার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রযুক্তিগত গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে। এছাড়াও, শিল্প শ্রমিকদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। কেননা, দক্ষ জনশক্তি শিল্পায়নের মূল চাবিকাঠি। অন্যদিকে, শিল্পায়নের জন্য উন্নত অবকাঠামো প্রয়োজন। সরকারকে যোগাযোগ, পরিবহন, বিদ্যুৎ, সড়ক, সেতু ইত্যাদি কাথামগুলির দিকে নজর দিতে হবে।  শিল্প বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে। বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে শিল্পায়নের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব। 

বাংলাদেশে শিল্পায়ন এখনও একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। সরকার, বিজনেস ফার্ম এবং বাবসায়িদের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শিল্পায়নকে আরও ত্বরান্বিত করা যেতে পারে।

উপসংহার 

শিল্পায়ন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশে শিল্পায়ন প্রক্রিয়া দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। তবে, শিল্পায়ন প্রক্রিয়া কে আরও ত্বরান্বিত করার জন্য কিছু বাধা দূর করা প্রয়োজন। এটি দূর করার জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেরও প্রয়োজন। সরকারের উচিত শিল্প খাতের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়া, এবং বিদেশী বিনিয়োগের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান করা।  শিল্পায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হলে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, এবং দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূর হবে। এছাড়াও, শিল্পায়নের ফলে জীবনযাত্রার মান উন্নতি হবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে। 

 

 

বাংলাদেশে শিল্প ও শিল্পায়ন রচনা

ভূমিকাঃ

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্প খাতের ভূমিকা অপরিসীম। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতি অর্জনের জন্য ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন অপরিহার্য। একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি মূলত সেই দেশের শিল্প ও শিল্পায়নের উপর নির্ভর করে। বিশ্বায়নের কারণে বর্তমান বিশ্ব-অর্থনীতি মুক্ত-অর্থনীতিতে পরিণত হচ্ছে। তাই প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষার্থে শিল্পের অগ্রগতি অপরিহার্য।

বাংলাদেশের শিল্প ব্যবস্থাঃ

বাংলাদেশের শিল্প কাঠামো অনুন্নত ও দুর্বল। প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসন এবং ২৪ বছরের পাকিস্তানি শাসন ও শোষণের ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন পর্যন্ত ভঙ্গুর। ফলে শিল্পায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটানো সম্ভব হয়নি। শিল্প বলতে সাধারণত কারখানায় যন্ত্রপাতির সাহায্যে কাঁচামালকে চূড়ান্ত দ্রব্যে পরিণত করা বোঝানো হয়। উপযুক্ত কাঁচামাল, মূলধনের স্বল্পতা, দক্ষ শ্রমিকের অভাব, শিক্ষা ব্যবস্থার অভাব শিল্পোয়নের পথে প্রধান সমস্যা বা বাধার সৃষ্টি করছে। তবে বর্তমানে শিল্প ব্যবস্থায় আগের চেয়ে অনেক অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৩ অনুযায়ী ২০১২-১৩ অর্থবছরে শিল্প খাতের অবদান ৩১.৯৮ শতাংশ।

বাংলাদেশের শিল্পনীতিঃ

শিল্পায়ন বা শিল্প খাতকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসাবে বিবেচনা করে শিল্পায়নের গতিকে বেগবান করতে ২০১১ সালে ‘শিল্পনীতি-২০১০’ ঘোষণা করা হয়। উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিল্পায়ন প্রক্রিয়ার মূলধারায় নারীদের নিয়ে আসা এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ এ নীতির মূল উদ্দেশ্য। শিল্পনীতি ছাড়াও ‘ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০১১-২০১৫ এ সমৃদ্ধ ও আধুনিক শিল্পখাত গড়ে তোলার মাধ্যমে বেকারত্ব, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য পীড়িত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা বিধৃত হয়েছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পসমূহঃ

বাংলাদেশ পৃথিবীর দরিদ্র দেশগুলোর একটি। অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১২-১৩ অনুযায়ী এদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ৯২৩ মার্কিন ডলার। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ২২ মে প্রথম আলো’র হিসাব অনুযায়ী মাথাপিছু আয় ১১৯০ মার্কিন ডলার। এদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অগ্রগতির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরণের শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে। নিম্নে বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শিল্পসমূহ আলোচনা করা হলো-

পোশাক শিল্পঃ

দেশের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পোশাক শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ৩৫০০ এর বেশি কারখানা এবং ১৬ লাখ শ্রমিক কর্মরত আছে যাদের ৬৬ শতাংশের বেশি নারী। বাংলাদেশ বিশ্বের ২০টির অধিক দেশে পোশাক রপ্তানি করছে। পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয়। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চীন প্রথম। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রে, যা মোট রপ্তানির ৫৬%। পোশাক শিল্পের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তৈরি পোশাক শিল্প থেকে মোট রপ্তানি আয় ছকের মাধ্যমে নিম্নে দেখানো হলো-
সাল ২০১০-১১ ২০১১-১২ ২০১২-১৩রপ্তানি আয় ৮৪৩২ মিলি. মার্কিন ডলার ৯৬০৩ মিলি. মার্কিন ডলার ১২০৪০ মিলি. মার্কিন ডলারউৎসঃ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৩

পাট শিল্পঃ

পাট বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। অতীতে প্রধান রপ্তানি পণ্য হিসাবে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতো পাট থেকে। বাংলাদেশে প্রায় ৫০ লাখ লোক পাট চাষাবাদের কাজে এবং ২ লক্ষ শ্রমিক পাট শিল্পে নিয়োজিত আছে। পাটজাত দ্রব্যসমূহ হতে রপ্তানি আয় ছকের মাধ্যমে দেখানো হলো-
সাল ২০১০-১১ ২০১১-১২ ২০১২-১৩পাটজাত দ্রব্য ৭৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ৭০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ৪৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারকাঁচাপাট ৩৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ২৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ১৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারউৎসঃ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৩

চিনি শিল্পঃ

চিনি বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫টি চিনিকল আছে। বাংলাদেশের প্রধান চিনিকল হলো দর্শনার কেরু এন্ড কোং। দেশে বর্তমানে চিনির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১৪.০০ লক্ষ মেট্রিক টন। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৯৪,৭৪০ মেট্রিক টন চিনি বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়েছে।

চা শিল্পঃ

চা শিল্প বাংলাদেশের অন্যতম একটি শিল্প। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১৫৮টি চা বাগান রয়েছে। চা প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য ১০৩টি কারখানা ও ২০ হাজার শ্রমিক নিয়োজিত আছে। সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চল ও চট্টগ্রামের পার্বত্য এলাকা চা চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। বাংলাদেশের চা আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।

কাগজ শিল্পঃ

বাংলাদেশ কাগজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ১৯৫৩ সালে ‘কর্ণফুলী পেপার মিলস’ এর মাধ্যমে এদেশে কাগজ শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল, পাকশী কাগজ কল, আদমজী পার্টিকেল বোর্ড সহ অনেক ব্যক্তি মালিকানাধীন কাগজকল স্থাপিত হয়েছে। প্রতিবছর আমাদের দেশের কাগজ ও কাগজজাত দ্রব্য রপ্তানি করে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা অর্জিত হয়।
চামড়া শিল্পঃ বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে চামড়া শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। চামড়া দ্বারা জুতা, ব্রিফকেস, হাতব্যাগ, শপিং ব্যাগ, লেডিস ব্যাগ, মানি ব্যাগ, হাত ঘড়ির ফিতা, বেল্ট ইত্যাদি উৎপাদন করা হয়। ২০১৪ সালের ১৯ মে প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার প্রায় ২১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। কিন্তু চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারে দশমিক ৪৬ শতাংশ দখল করতে পেরেছে। বাংলাদেশ যে সকল দেশে চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য রপ্তানি করে তার মধ্যে চীন, জাপান, ইতালি, ব্রাজিল, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য।

পর্যটন শিল্পঃ 

পর্যটন শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বিশেষ খাত। পর্যটন শিল্পের এক অপার সম্ভাবনাময় দেশ প্রাকৃতিক সম্পদের লীলাভূমি বাংলাদেশ। কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, সুন্দরবন, হিমছড়ি ঝরনা, নিঝুম দ্বীপ, টাঙ্গুয়ার হাওর, জাফলং, মহাস্থানগড়, ময়নামতি, লালবাগ কেল্লা, ষাটগম্বুজ মসজিদ, বরেন্দ্র জাদুঘর, প্রভৃতি বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থান। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী ২০০১ সালে বাংলাদেশে পর্যটকদের সংখ্যা ছিল ২,০৭,১৯৯ জন এবং ২০০৮ সালে এ সংখ্যা দাড়ায় ৪,৬৭,৩৩২ জন। ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ২৭ লাখ লোকের।

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পঃ

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গ্রামের লোকেরা নিজগৃহে বসে বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য উৎপাদন করে থাকে। যেমন হস্তচালিত তাঁতের মাধ্যমে তৈরি করা হয় শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, গামছা, বিছানার চাদর ইত্যাদি। মৃৎশিল্পের মধ্যে রয়েছে মাটির হাঁড়ি, কলস, পুতুল, ফুলদানি ইত্যাদি।

বাংলাদেশে শিল্পের সমস্যাঃ

কাঁচামাল, প্রাকৃতিক সম্পদের সহজলভ্যতা এবং সস্তা শ্রমিক থাকা সত্ত্বেও শিল্পক্ষেত্রে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়নি। বিরাজমান শিল্পের সমস্যার মধ্যে ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণ উল্লেখযোগ্য। ব্রিটিশ আমলে এদেশের কাঁচামাল দ্বারা শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছিল ইংল্যান্ডে। পাকিস্তান আমলে যে কয়েকটি কারখানা ছিল তা স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান সৈন্যদের নির্মম ধ্বংসযজ্ঞে সেগুলো বিনষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশের জনগণের মাথা পিছু আয় কম হওয়ার কারণে মূলধন গঠন সেভাবে হয়নি যা শিল্পায়নের পথে বাধার সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি সাভারে রানা প্লাজা ধ্বসের ফলে বহু শ্রমিক নিহত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে। যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। যার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব অন্যান্য শিল্পের উপর পড়তে পারে। তাছাড়া শ্রমিকের কারিগরি জ্ঞানের অভাব, খনিজ ও শক্তি সম্পদের অভাব, বৈদেশিক সাহায্যের অভাব, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, শিল্প ঋণের অভাব, সুষ্ঠু পরিকল্পনা, শিক্ষার অভাব প্রভৃতি কারণে বাংলাদেশের শিল্প নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।

বাংলাদেশে শিল্পায়নের উপায়ঃ

অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনের জন্য শিল্পায়নের বিকল্প নেই। শিল্পায়নের ফলে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হয়। বাংলাদেশে শিল্পায়নের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অন্যতম। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে উৎপাদনের প্রাণশক্তি বলা হয়। তাই এ খাতের উন্নয়ন জরুরি। তাছাড়া কারিগরি জ্ঞানে জনশক্তির জন্য কারিগরি বিদ্যালয়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও কৃষি কলেজ স্থাপন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ঋণের ব্যবস্থা, অবকাঠামোর উন্নয়ন, পরিকল্পিত শিল্পায়ন, বিদেশে বাজার সৃষ্টি, প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে বাংলাদেশে শিল্পায়নের পথ প্রশস্ত হবে।

উপসংহার:

সর্বোপরি বাংলাদেশের শিল্প সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম। শিল্প ব্যবস্থার উন্নতি হলে দেশের সামগ্রিক অবস্থার উন্নয়ন সাধিত হবে। শিল্প সমস্যা দূরীকরণের মাধ্যমে টেকসই শিল্প ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এতে শিল্প কাঠামো স্বয়ংসম্পূর্ণ রূপ লাভ করবে। যা আমাদের জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।