যে‌ প্রক্রিয়ায় পিতা-মাতার চারিত্রিক গুণাবলি বংশপরম্পরায় সন্তান-সন্ততির দেহে সঞ্চারিত হয়, তাকে বংশধারা বলে।

ডগলাস এবং হল্যান্ডের মতে, পিতা-মাতা এবং পূর্বপুরুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও ক্ষমতা হিসেবে যা আমরা জন্মসূত্রে পাই, তাই বংশধারা।

উডওয়ার্থ এবং মার্কুইস বংশধারা সম্পর্কে বলেন— “জীবনের শুরুতে মানুষের মধ্যে যা কিছু উপাদান থাকে, তাই তার বংশধারা।

DNA-এর পুরাে নাম হল -ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড। RNA-এর পুরাে নাম হল— রাইবাে নিউক্লিক অ্যাসিড।

DNA অপুর যে কার্যগত একক নির্দিষ্ট প্রােটিন সংশ্লেষের সংকেত বহন করে, তাকে জিন বলে।

যেসব বিজ্ঞানী মনে করেন, ব্যক্তির জীবনে বংশধারাই সব, বংশধারাই ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব নির্ধারণ করে, তাদের বংশধারাবাদী বলা হয়।

গ্যালটন, কার্ল পিয়ারসন, টারম্যান প্রমুখ মনােবিজ্ঞানীরা হলেন বংশধারাবাদী।

যেসব মনােবিজ্ঞানী মনে করেন, ব্যক্তির বৃদ্ধি ও বিকাশ সম্পূর্ণভাবে পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, এতে বংশধারার কোনাে প্রভাব নেই, তাদের পরিবেশবাদী বলা হয়।

ইস্টার ব্রুক, ক্যাটেন প্রমুখ মনােবিজ্ঞানীরা হলেন পরিবেশবাদী।

শিক্ষার ক্ষেত্রে মিথস্ক্রিয়া বলতে বোঝায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বিদ্যালয়, পাঠক্রম, সমাজ ও পরিবেশের অন্যান্য উপাদানের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া।

একজন সুশিক্ষকের দুটি গুণ হল- আদর্শ ব্যক্তিত্ব ও উন্নত জীবনাদর্শ, দায়িত্ববােধ।

পূর্বে শিক্ষকের একমাত্র ভূমিকা ছিল শিক্ষাদান বা শিক্ষা।

শ্রেণি শিক্ষণে সংযােগরক্ষাকারীর ভূমিকা পালন করেন শিক্ষক।

শিক্ষার উপাদান চারটি, সেগুলি হল- -শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষালয় এবং পাঠক্রম।

শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধু, দার্শনিক ও পথপ্রদর্শক হিসেবে শিক্ষকদের বিবেচনা করা হয়।

কারিকুলাম (Curriculum) শব্দটির উৎপত্তি লাতিন শব্দ ‘currere’ থেকে। এর ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল, বিশেষ লক্ষ্যে পৌঁছানাের জন্য দৌড়ের পথ।

Encyclopaedia Britannica-তে Curriculum সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা হল, ‘Curriculum-A course of study laid down for the students of a University or School, or in wider sense, for schools of certain standard.’ RiTe পাঠক্রম হল, একটা শিক্ষাক্রম যা বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যালয় অথবা ব্যাপক অর্থে কোনাে নির্দিষ্ট মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য ধার্য করা হয়।

পেইনির মতে, শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের বিকাশ এবং আচরণের পরিবর্তন ঘটানাের জন্য শিক্ষালয়ে যেসব কর্মসূচি গ্রহণ এবং সচেতনভাবে রূপায়িত করা হয়, তাদের সমবায়ই হল পাঠক্রম বা কারিকুলাম।

ফ্রয়েবেলের মতে, কারিকুলাম বা পাঠক্রম হল মানবজাতির সামগ্রিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সুসমন্বিত রূপ।

কিলপ্যাট্রিকের মতে, কারিকুলাম বা পাঠক্রম বাস্তব জীবনের প্রতিফলন ঘটায়।

হরনির মতে, শিক্ষার্থী যা কিছু শেখে তাই হল পাঠক্রম।

কানিংহামের মতে, পাঠক্রম হল শিল্পীর (শিক্ষকের) যন্ত্রপাতি যার সাহায্যে তিনি তাঁর কর্মশালায় (শিক্ষালয়) তাঁর আদর্শানুযায়ী (লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য) তাঁর বস্তুকে (শিক্ষার্থী) গড়ে তুলতে পারেন।

মনােবিদ ক্লো এবং ক্রোর মতে, শিক্ষার্থীর মানসিক, দৈহিক, প্রাক্ষোভিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক এবং নৈতিক বিকাশে সাহায্য করার জন্য যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়, তার অন্তর্ভুক্ত বিদ্যালয়ের ভিতর ও বাইরের সমস্ত অভিজ্ঞতার সমবায়কেই পাঠক্রম বলে।

মুদালিয়ার কমিশন (1952-1954) কারিকুলাম সম্পর্কে যা বলেছে, তা হল, বিদ্যালয়ে যেসব গতানুগতিক বিষয়ে পাঠদান করা হয় তাই পাঠক্রম নয়। এর মধ্যে আছে সমস্ত রকমের অভিজ্ঞতা যা শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে, শ্রেণিকক্ষে, পাঠাগারে, কর্মশালায়, খেলার মাঠে এবং শিক্ষকদের সঙ্গে অসংখ্য অপ্রথাগত যােগাযােগের মাধ্যমে লাভ করে। এই অর্থে বিদ্যালয়ের সমগ্র জীবনই পাঠক্রম যা শিক্ষার্থীর জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রকেই স্পর্শ করে এবং সুসংহত ব্যক্তিত্ব গড়ে তােলে।

উনবিংশ শতাব্দীর বর্ষপঞ্জিতে (19th Century Year Book) পাঠক্রমের যে সংজ্ঞা পাওয়া যায় তা হল এইরূপপাঠক্রম হল সেইসব বিষয়বস্তু, কর্মসূচি এবং অভিজ্ঞতার সমষ্টি যা শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়-জীবনের সমস্তটা জুড়ে থাকে।

ব্লুবেচারের মতে, পাঠক্রম শিক্ষার লক্ষ্য নয়, লক্ষ্যে পোঁছােবার পথ।

কার্টার ভি, গুড শিক্ষা-সংক্রান্ত অভিধানে কারিকুলাম সম্পর্কে লিখেছেন যে, পাঠক্রম হল কতকগুলি বিষয়ের এবং পরিকল্পিত অভিজ্ঞতার শৃঙ্খলাবদ্ধ সমষ্টি।

কে. জি. সাইয়েদিনের মতে, পাঠক্রম হল প্রাথমিকভাবে। একটি উপাদান যা শিশুকে তার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিবেশের সঙ্গে অভিযােজনে সাহায্য করে।

আধুনিক কালের শিক্ষাবিদদের মতে কারিকুলাম বা পাঠক্রম হল ব্যক্তিজীবনের সার্বিক বিকাশে সহায়ক, সুনির্বাচিত অভিজ্ঞতাসমূহের যথার্থ সমবায়। এখানে ব্যক্তিজীবনের সার্বিক বিকাশ বলতে শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক, চারিত্রিক, আধ্যাত্মিক এবং নৈতিক বিকাশের কথা বলা হয়েছে।

পাঠক্রমের মূলত তিনটি উপাদানের উল্লেখ করা যায়। এগুলি হল— শিক্ষার উদ্দেশ্য, শিক্ষার্থীর চাহিদা ও সামর্থ্য এবং সামাজিক আশাপ্রত্যাশা।

শিক্ষার্থীকে একজন স্বনির্ভর, দায়িত্ববান ও কর্তব্যপরায়ণ নাগরিক করে তােলায় পাঠক্রমের প্রয়ােজনীয়তা অনস্বীকার্য।

নমনীয়তার নীতি: পাঠক্রমকে নমনীয় করে তুলতে হবে। প্রয়ােজনীয় মতাে পাঠক্রমে যাতে পরিবর্তন আনা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সামাজিক বিকাশের পরিপূরক দুটি সহপাঠক্রমিক কাজ হল- সাক্ষরতা কর্মসূচিতে এবং বৃক্ষরােপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ।

ডাকটিকিট সংগ্রহ এবং বিদ্যালয়ে দেয়ালপত্রিকা প্রকাশে অংশ নেওয়া।

শিক্ষার স্বার্থে শ্রেণিকক্ষের বাইরে কিছু সুপরিকল্পিত কাজ করতে হয়। এগুলিকেই বহিঃপাঠক্রমিক কার্যাবলি বলে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য কয়েকটি হল—খেলাধুলাে, শরীরচর্চা, গানবাজনা, ছবি আঁকা, আলপনা দেওয়া, সাংস্কৃতিক বিষয়ে চর্চা ইত্যাদি। এই ধরনের কার্যাবলিকে আগে অতিরিক্ত কার্যাবলি (Extra-curricular activities) হিসেবে বিবেচনা করা হত।

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। ভাগগুলি হল- শারীরিক বিকাশে সহায়ক কার্যাবলি, মানসিক বিকাশে সহায়ক কার্যাবলি, সামাজিক বিকাশে সহায়ক কার্যাবলি, প্রাক্ষোভিক বিকাশে সহায়ক কার্যাবলি ইত্যাদি।

শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশের জন্য শ্রেণিকক্ষের পুথিগত বিদ্যা ছাড়াও অন্য যেসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে, সেগুলিকেই বলা হয় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি। যেমন বৃক্ষরােপণ, স্বাধীনতাদিবস পালন ইত্যাদি।

মনােবিদ এইচ. এন. রিভলিন সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন, যেসব কার্যাবলি শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে জীবনবিকাশের অন্য দিকগুলিকেও সার্থক করে তােলে, তাদের বলা হয় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি।

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি কথাটির মধ্য দিয়ে উন্নত ও বৈচিত্র্যময় এমন সব কাজকে বােঝানাে হয় যা বিদ্যালয়ের চার দেয়ালের মধ্যেকার পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত নয়, অথচ শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশের জন্য বিশেষ প্রয়ােজনীয়। এই কার্যাবলি শিক্ষার্থীকে সামাজিক দিক থেকে সচেতন ও যােগ্য করে, সর্বোপরি তার চরিত্র গঠনে অপরিহার্য।

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির দুটি উপযােগিতা হল— এটি শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশে সহায়তা করে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ ঘটায়।

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত হল শরীরচর্চা, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলাে, বিভিন্ন প্রকারের সমাজসেবামূলক কাজ, ব্রতচারী, NCC প্রশিক্ষণ, NSS-এর বিভিন্ন কর্মসূচি, স্কাউটিং ইত্যাদি। এগুলির নিয়মিত চর্চার ফলে শিক্ষার্থীর শারীরিক বিকাশ ঘটে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পুষ্ট হয়, দেহের প্রতিটি অংশে রক্ত সঞ্চালিত হয়, ঘুম ও দেহের বাড়বৃদ্ধি ভালাে হয়। ফলে শিক্ষার্থী সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়, যা যে-কোনাে মানুষের কাছেই অতি মূল্যবান সম্পদ।

সুস্থ দেহেই থাকে সুস্থ মন। দৈহিক বিকাশ যথাযথ হলে তার প্রভাব মনের ওপর পড়ে। মনও পুষ্ট হয়। বিভিন্ন প্রকার সহপাঠক্রমিক কাজ, যেমন—খেলাধুলাে, গানবাজনা, আবৃত্তি, অভিনয়, বিতর্ক, আলােচনা, সেমিনার, পত্রিকা প্রকাশনা, আলপনা দেওয়া, চিত্রাঙ্কন প্রভৃতি শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর মানসিক বিকাশ যথাযথ হলে তা শিক্ষাগ্রহণকেও স্বরান্বিত করে।

শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসে শিক্ষালাভের জন্য। বিদ্যালয় তাকে সমাজজীবনের উপযােগী করে গড়ে তােলে। বিদ্যালয়ে শিক্ষা নিতে গিয়ে শিক্ষার্থী বিভিন্ন সামাজিক নিয়মনীতির সঙ্গে পরিচিত হয় যা বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে তাকে সমাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। তাই বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মাধ্যমে (যেমন-অভিনয়, যৌথ প্রােজেক্ট, সমাজসেবামূলক কাজ, NCC, NSS প্রভৃতি) শিক্ষার্থীকে সমাজজীবনের উপযােগী করে তােলা হয়। এইভাবে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে সামাজিক বিকাশ ঘটে।

শিক্ষার্থীর মধ্যে সহযােগিতার মনােভাব গড়ে তােলায় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সমাজব্যবস্থায় অধিকাংশ পরিবারেই সন্তানসংখ্যা খুবই সীমিত। যার ফলে শিশু একাই বিভিন্ন ধরনের সুযােগসুবিধা ভােগ করে। তার মধ্যে সহযােগিতার মনােভাব গড়ে ওঠার সুযােগ থাকে না। এসব ক্ষেত্রে বিদ্যালয় দ্বারা সংগঠিত বিভিন্ন সহপাঠক্রমিক কাজে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সহপাঠীদের মধ্যে পারস্পরিক বােঝাপড়া গড়ে ওঠে, যা শিক্ষার্থীর সমাজজীবনের পক্ষে অপরিহার্য।

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন”শিক্ষা হল শিক্ষার্থীর সুপ্ত প্রতিভার পরিপূর্ণ বিকাশসাধন।” শিশু বংশগতভাবে কিছু সম্ভাবনা বা প্রবণতা নিয়ে পৃথিবীতে আসে| সে যখন বড়াে হতে থাকে এবং পরিবেশের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ায় অংশ নেয়, তখন তার মধ্যেপ্রবণতা অনুযায়ী বিভিন্ন চাহিদার সৃষ্টি হয়।শিক্ষক শিক্ষার্থীর সেইসব চাহিদার প্রতি লক্ষ রেখে শিক্ষার কর্মসূচি নির্দিষ্ট করবেন| এই কর্মসূচির অন্যতম অংশ হল সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি। তাই বলা যেতে পারে বিভিন্ন ধরনের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্য দিয়ে শিশুর অভ্যন্তরীণ চাহিদা পরিতৃপ্ত হওয়ার সুযোগ পায়।

ব্যক্তি ও সমাজজীবনে শৃঙ্খলা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলার মূল্য অপরিসীম। তাই বিদ্যালয়ে প্রথম থেকেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এই প্রকার সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্য দিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত শৃঙ্খলাবােধ গড়ে তােলার চেষ্টা করা হয়। খেলাধুলাের মধ্যে যথেষ্ট শৃঙ্খলা থাকে।প্রতিটি খেলায় কিছু নিয়মনীতি থাকে। শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেইসব নিয়মনীতি মেনে আনন্দের সঙ্গে খেলাধুলােয় অংশ নেয়। এইভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলাবােধ গড়ে ওঠে।

শিক্ষামূলক নির্দেশনায় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্য দিয়ে শিক্ষক উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের পছন্দ, আগ্রহ, দক্ষতা প্রভৃতি দিককে নির্দিষ্ট করতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী শিক্ষার্থীর উপযােগী শিক্ষা ও বৃত্তির পরিকল্পনা করা হয়ে থাকে।

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীর মধ্যে সেবামূলক মনােভাব গড়ে তােলে। স্কাউট, ব্রতচারী, সেন্ট জনস্ অ্যাম্বুলেন্স কোর্স, কমিউনিটি পরিসেবা প্রভৃতি সহপাঠক্রমিক কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে সেবামূলক মনােভাব অর্জন করে।

শিক্ষার্থীরা প্রায়শই বিদ্যালয়ের চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ শ্রেণিশিক্ষায় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কখন ছুটির ঘণ্টা বাজবে সেই প্রতীক্ষায় তারা সময় কাটায়। কিন্তু বৈচিত্র্যময় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি তাদের মধ্যে বিদ্যালয় তথা বিদ্যালয়ের কর্মসূচির প্রতি প্রবল আগ্রহ সৃষ্টি করে। সেই সমস্ত কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে তারা মানসিকভাবে তৃপ্ত হয়। দেখা গেছে, সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি বহু অমনােযােগী শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়মুখী করে এবং ধীরে ধীরে পড়াশােনাতেও আগ্রহী করে তােলে।

ছেলেবেলা থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সহপাঠক্রমিক কাজে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে যেসব বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠে, সেই বিষয়গুলি ভবিষ্যৎ জীবনেও তাদের গঠনমূলকভাবে অবসর সময় যাপনে সাহায্য করে। বৃক্ষরােপণ, রক্তদান শিবির, পরিবেশ সংরক্ষণ, নিরক্ষরতা দূরীকরণ ইত্যাদি সমাজসেবামূলক অনুষ্ঠানে যােগদান করা এক্ষেত্রে বিশেষ উল্লেখযােগ্য।