জীবনানন্দ দাশের মানসিক বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ

কথামুখ : ‘শিকার’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ মানবসভ্যতার স্বার্থপরতা, কুটিলতা এবং নৃশংসতাকে তুলে ধরেছেন।

অভিজ্ঞতার প্রতিফলক : ব্যক্তিগতভাবে তিনি বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী পৃথিবীতে মানুষের নির্মমতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবে তার কবিতায় এই অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটেছে।

প্রকৃতিপ্রেমিক : প্রকৃতিপ্রীতিকে কোনো অবস্থাতেই বিসর্জন দেননি তিনি, বরং বক্তব্যবিষয়কে তুলে ধরার জন্য প্রকৃতির নানা উপাদানের মধ্যেই তিনি উপমা প্রয়ােগ করেছেন। যেমন- “কচি বাতাবিলেবুর মক্তো সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে।”

চিত্রকল্প ব্যবহারে সিদ্ধহস্ত : জীবনানন্দ দাশের অন্যতম কাব্যবৈশিষ্ট্য হল চিত্ররূপময়তা। অপূর্ব সব চিত্রকল্প তিনি রচনা করেছেন ‘শিকার কবিতায়। তিনি এই কবিতায় নিরাশাবাদী নন, কারণ কবিতার সূচনাতেই ভাের শব্দটি দুবার প্রয়ােগ করে কবি আশাজনক জীবনের কথা বলেছেন। আলােচ্য কবিতায় তার উপস্থাপনাটি নাটকীয়। ভােরের দৃশ্যটি ঘটনাবিরল, উপমার পর উপমা সাজিয়ে ভােরের চিত্রটিকে স্পষ্ট করে তুলেছেন কবি। আকাশের রং ঘাসফড়িঙের দেহের মতাে কোমল নীল, পেয়ারা ও নােনার গাছ টিয়াপাখির পালকের মতাে সবুজ।

আবেগ ও উৎকণ্ঠার বহিঃপ্রকাশ : কবির প্রবল উৎকণ্ঠা এবং আবেগের সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে কবিতার বাস্তব পটভূমি, যেখানে প্রকৃতি স্বাভাবিক ও সুন্দর কিন্তু মানুষ হৃদয়হীন ও যান্ত্রিক।