প্রশ্নঃ শাস্তি সম্পর্কিত মতবাদগুলো কি কি?
অথবা, শাস্তি সম্পর্কিত মতবাদ কয়টি ও কি কি?
অথবা, শাস্তি সম্পর্কিত কি কি মতবাদ রয়েছে?

ভূমিকাঃ সমাজে সুষ্ঠুভাবে জীবনযাপনের জন্য সমাজের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। যখন কোনো ব্যক্তি এসব বিধি-নিষেধ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তখন রাষ্ট্র তাকে শাস্তি দেয়। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তির মাত্রাও আলাদা হয়৷

শাস্তি বিষয়ক বিভিন্ন মতবাদঃ অপরাধের ধরন ও মাত্রা অনুযায়ী অপরাধীকে কিরূপ শাস্তি প্রদান করা হবে, সে সম্পর্কে তিনটি মতবাদ রয়েছে। যেগুলি হলো-

১. প্রতিরোধমূলক মতবাদঃ এ মতবাদ অনুযায়ী, শাস্তি প্রদান করা হয়। দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য অপরাধীকে অন্যায় করে শাস্তি পেতে দেখলে অন্যরা এরূপ অপরাধমূলক কাজ থেকে বিরত থাকবে। শাস্তি হিসাবে এক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে।

২. সংশোধনমূলক মতবাদঃ এটি একটি উদারপন্থী মতবাদ। এ মতবাদ অনুযায়ী অপরাধীকে শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্য হলো অপরাধীকে সংশোধনের সুযোগ করে দেয়া। যাতে দেয়া শাস্তি ভোগ করে পরবর্তীকালে অনুরূপ কাজ অপরাধ থেকে বিরত থাকে। এ মতবাদ অনুযায়ী অপরাধীর শাস্তি এমন হওয়া উচিত যাতে তা অপরাধীর চরিত্রের সংশোধক হিসাবে কাজ করে।

৩. প্রতিশোধমূলক মতবাদঃ এ মতবাদ অনুযায়ী অপরাধীকে তার পাপের পরিমাণ ভোগ করতেই হবে। এ মতবাদ অপরাধের ধরন ও মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি প্রদানের কথা বলে। লিলির মতে, প্রতিশোধমূলক মতবাদের উদ্দেশ্য হলো, যার উপর অপরাধ করা হয়েছে তার যে দুর্ভোগ, অপরাধীকেও সে দুর্ভোগ ভোগ করতে হবে। প্রতিশোধমূলক মতবাদ দুই প্রকার। যথা-

(ক) কঠোর প্রতিশোধমূলক মতবাদঃ এক্ষেত্রে অপরাধের স্থান, কাল, পাত্র, অপরাধীর মানসিক অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনায় আনা হয় না। এক্ষেত্রে চোখের বদলে চোখ, হাতের বদলে হাত ইত্যাদি শাস্তির বিধান করা হয়।

(খ) কোমল প্রতিশোধমূলক অবস্থাঃ এ পর্যায়ে, অপরাধীর শারীরিক, মানসিক এক পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় এনে অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করা হয়।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অপরাধীকে তার অপরাধের শাস্তি প্রদান অত্যাবশ্যক। কারণ, শাস্তির ভয়ে মানুষ নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য হয়।